ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
রোগ-ব্যাধির আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য অগ্রিম ঔষধ/ভ্যাক্সিন/টিকা
গ্রহণ করা জায়েয। ব্যাপারে ইসলামে কোন বাধা নেই।
বরং রোগ হওয়ার পর চিকিৎসা করার চেয়ে অগ্রিম প্রতিরোধ করা অধিক উত্তম, বিপর্যয়
সৃষ্টি হওয়ার ক্ষয়-ক্ষতির চেয়ে বিপর্যয় থেকে বাঁচার অগ্রীম পন্থা অবলম্বন করা অধিক
উত্তম-এ ব্যাপারে কোন জ্ঞানী ব্যক্তির দ্বিমত থাকার কথা নয়।
আমরা এই শিক্ষা পাই রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবন থেকে।
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,
عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ تَصَبَّحَ سَبْعَ تَمَرَاتِ عَجْوَةٍ لَمْ يَضُرُّهُ ذَلِكَ الْيَوْمَ سَمٌّ وَلاَ سِحْرٌ "
সাআদ ইবন আবূ ওয়াক্কাস রা: থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
“যে ব্যক্তি সকালে সাতটি
আজওয়া খেজুর খাবে সেদিন বিষ এবং যাদু তার কোন ক্ষতি করবে না।” (বুখারী ও মুসলিম)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
مَا أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ دَاءً، إِلَّا أَنْزَلَ لَهُ دَوَاءً، عَلِمَهُ مَنْ عَلِمَهُ، وَجَهِلَهُ مَنْ جَهِلَهُ
“আল্লাহ তাআলা এমন কোন রোগ
অবতীর্ণ করেন নি যার ওষুধ অবতীর্ণ করেন নি। (অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা প্রতিটি রোগ-ব্যাধির সাথে সাথে সেগুলোর প্রতিষেধকও অবতীর্ণ করেছেন। সেগুলো কেউ জানে আর কেউ জানে না।” (মুসনাদ
আহমাদ)
রাসুলুল্লাহ সাঃ চিকিৎসা গ্রহন করতে আদেশ করেছেন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ النَّمَرِيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلَاقَةَ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ شَرِيكٍ، قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابَهُ كَأَنَّمَا عَلَى رُءُوسِهِمُ الطَّيْرُ، فَسَلَّمْتُ ثُمَّ قَعَدْتُ، فَجَاءَ الْأَعْرَابُ مِنْ هَا هُنَا وَهَا هُنَا، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنَتَدَاوَى؟ فَقَالَ: تَدَاوَوْا فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لَمْ يَضَعْ دَاءً إِلَّا وَضَعَ لَهُ دَوَاءً، غَيْرَ دَاءٍ وَاحِدٍ الْهَرَمُ
উসামাহ ইবনু শরীক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি
বলেন, আমি
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এস দেখলাম তাঁর সাহাবীদের মাথার উপর
যেন পাখী বসে আছে, অর্থাৎ
শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। আমি সালাম দিয়ে বসলাম। অতঃপর এদিক-সেদিক থেকে কিছু
বেদুঈন এসে বললো, হে
আল্লাহর রাসূল! আমরা কি চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো? তিনি
বলেন, তোমরা
চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করো; কেননা
মহান আল্লাহ একমাত্র বার্ধক্য ছাড়া সকল রোগেরই ঔষধ সৃষ্টি করেছেন।
(আবু দাউদ ৩৮৫৫)
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
عَلَيْكُمْ بِهَذِهِ الْحَبَّةِ السَّوْدَاءِ
فَإِنَّ فِيهَا شِفَاءً مِنْ كُلِّ دَاءٍ إِلاَّ السَّامَ ” . وَالسَّامُ
الْمَوْتُ
“তোমরা এই কালোজিরা ব্যবহার করবে। কেননা, এতে মৃত্যু ছাড়া সব রোগের প্রতিষেধক রয়েছে।” [সূনান তিরমিযী, হাদিস নম্বরঃ [2048]অধ্যায়ঃ ৩১/ চিকিৎসা (كتاب الطب عن رسول اللَّهِ ﷺ), ইসলামিক ফাউন্ডেশন]
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خِدَاشٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ زَكَرِيَّاءَ الْقُرَشِيُّ، حَدَّثَنَا الزُّبَيْرُ بْنُ سَعِيدٍ الْهَاشِمِيُّ، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ سَالِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " مَنْ لَعِقَ الْعَسَلَ ثَلاَثَ غَدَوَاتٍ كُلَّ شَهْرٍ لَمْ يُصِبْهُ عَظِيمٌ مِنَ الْبَلاَءِ "
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি প্রতি মাসে তিন দিন ভোরবেলা মধু চেটে চেটে খেলে সে মারাত্মক
কোন বিপদে আক্রান্ত হবে না।
ইবনু মাজাহ ৩৪৫০, য‘ঈফাহ্
৭৬৩, য‘ঈফুল জামি‘ ৫৮৩১, আল মু‘জামুল
আওসাত্ব ৪০৮, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল
কাবীর ২৭৭, শু‘আবুল ঈমান ৫৯৩০,মিশকাত ৪৫৭০) উক্ত হাদীস সনদের দিক থেকে জয়ীফ।
সুতরাং ঔষধ, কালোজিরা, মধু ব্যবহার করে 100% রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে-
এটা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। কারণ আল্লাহ তায়ালা রোগ থেকে মুক্তি দানকারী। এটা একমাত্র
তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। আমাদের কাজ হবে, আল্লাহর উপর ভরসা করা এবং বিভিন্ন পথ্য ও ঔষধ ব্যবহার করা। আল্লাহ চাইলে অবশ্যই সুস্থতা অর্জিত হবে। অন্যথায় তিনি অন্যভাবে
বান্দাকে এর বিনিময় দান করবেন। এ বিশ্বাস রাখাই মুমিনের কর্তব্য।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
১. হ্যাঁ, রাসূল সা. ও সাহাবায়ে
কেরামও চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন।
২. আপনি এ বিষয়ে কোনো দ্বীনদার
অভিজ্ঞ গাইনি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন।