আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম,

শায়খ,আমি মোসাঃসুমাইয়া আক্তার।  আমার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নিয়ে পরামর্শ চাচ্ছি।আমি আমার এই সমস্যাটার জন্য মানসিক ডিপ্রেশনে ভুগছি।আমি বিবাহিত।আমার বিয়ের বয়স 7 মাস। দীর্ঘ তিন বছর সম্পর্কের পর আমি আমার পছন্দের মানুষটিকে বিয়ে করেছি।আমি আমার হাসবেন্ড কে প্রচন্ড রকমের ভালোবাসি।সম্পর্ক চলাকালীন সময়েও তার সাথে দেখা করার জন্য আমি অস্থির থাকতাম এবং তাকে বিয়ের জন্য অনেক প্রেসার দিয়েছি যার কারণে বর্তমানে আমি তার বউ।আলহামদুলিল্লাহ আমি আমার সংসারের লাইফে মোটামুটি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি।আর যেহেতু বিয়ের আগে তিনবছর আমরা উভয় একটি হারাম রিলেশনশিপে ছিলাম তার জন্য আমি আর আমার হাজব্যান্ড দুজনেই দ্বীনের পথে আসার চেষ্টা করছি এবং আল্লাহর কাছে তওবা করছি এবং বর্তমানে আমি দিন চর্চা করছি। নামাজ কায়েম করছি, ইসলামী বিধি-বিধান মেনে চলার চেষ্টা করছি ইনশাল্লাহ ।   দুই ফ্যামিলির সম্মতিতে আমাদের বিয়ে হয়।আমার শ্বশুর শাশুড়ি আমাদের বিয়েটা মেনে নিয়েছে। এবং তারা আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমি আমার শ্বশুর বাড়িতে  ভালো পরিবেশেই থাকি। খাওয়া দাওয়া পোশাক আশাকের কোন সমস্যা হয়না।কিন্তু আমার  স্বামী ঢাকায় থাকে। আর আমাকে তার বাড়িতে  রাখে।আমি মাঝে মধ্যে তার কাছে গিয়ে থাকি।আমি ওদের বাড়িতে একমাস থাকলে ওর কাছে গিয়ে থাকি দশদিন আর ও প্রতিমাসে ২০ দিন  পরপর বাড়িতে আসলে তিন দিন থেকে চলে যায়।আমি ভেবেছিলাম রিলেশনের সময় ওর সাথে আমার যতটা দূরত্ব আল্লাহর রহমতে বিয়ে হলে সেই দূরত্ব ঘুচে যাবে এবং আমি ওকে অনেক বেশি সময়ের জন্য পাব।আমাদের দূরত্বটা আরো বেড়ে গিয়েছে ওর বাবা-মায়ের অন্য কোনো সন্তান নেই তারা দুজন একা থাকে বিধায় আমাকে অনেক বেশি টাইম ওর বাবা-মায়ের সাথে থাকতে হয়।আমি ওর বাবা মায়ের ভালোবাসা  দেখে তাদেরকে মুখের উপরে এটা বলতেও পারি না যে আমি আমার স্বামীর সাথে ঢাকায় থাকতে চাচ্ছি।আপনাদের সাথে কম থাকতে চাচ্ছি, আমার স্বামীও তাতে মনঃক্ষুন্ন হবে এটা আমি বুঝে গেছি কারন ও ওর বাবা মায়ের উপর কর্তব্য পালন করতে চায়।আমি চাই ব্যালেন্স করতে।এক মাস ওর কাছে থাকলে একমাস ওর বাবা মায়ের কাছে থাকবো। কিন্তু যখনি আমার স্বামীর সাথে এসব নিয়ে কথা বলতে যাই সে অভিমান করে বলে আমার বাবা মার কাছে তোমার থাকতে হবেনা।তারা একাই থাকুক।আমি তখন চুপ হয়ে যাই।কিছু আর বলতে পারিনা।শ্বশুর শ্বাশুড়ির মন থেকে দূরে চলে যাব এই ভয়ে তাদেরকেও বলতে পারিনা। আর এই কারনে আমি ভিতরে ভিতরে যন্ত্রণায় আছি।আমার স্বামীর সাথে দূরত্বের কারনে ছোট খাটো বিষয়েও আমাদের ঝগড়া লাগে।আমার মন থেকে তার প্রতি ভালোবাসা,সম্মান  দিন দিন কমছে। আমি কাউকে বলতেও পারছি না আর এটা সহ্য হচ্ছে না আমার শুধু ওর শূন্যতাটা ফিল হয়।মাঝে মাঝে মনে হয় উনি আমাকে তার বাবা মায়ের খেদমতের জন্য, বা দেখভাল করার জন্য মেইনলি বিয়ে করেছে। এসব ভেবে ভেবে আমি দিন দিন মানুষিক অসুস্থতায় ভুগছি।আমি সবার মন রক্ষা করে চলতে চাই, কিন্তু আমার স্বামীর সামর্থ্য আছে ও ঢাকায় একটা  ফ্ল্যাট বাসা নিয়ে থাকে।তবুও আমাকে তার বাড়িতে রাখতে চায় তার বাবা মার জন্য। কিন্তু এই কারনে তার সাথে আমার মানুষিক দূরত্ব বেড়েছে। আমি এখন কি করবো?

পশ্ন ১__ আমি মেনে নিতে চাচ্ছি এই পরিবেশ, কিন্তু পারছিনা।নিজেকে কন্ট্রোল এর জন্য কি করবো?
প্রশ্ন ২__আমি আমার স্বামীকে কোন উপায় বোঝাবো?

প্রশ্ন ৩__ তার বাবা মা যদি এটা জানার পরে আমার উপর নারাজ হয় তাহলে কি আমি বাধ্য তাদের সাথে থাকতে?
প্রশ্ন ৪_ আমার স্বামী যেহেতু তার বাবা মার কাছে কম থাকতে চাইলে  অখুশি হয়,সেখেত্রে সে কি আমাকে প্রেশার দিতে পার?

পশ্ন ৫_ আমার তার বাবা মার প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য আছে কি??

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
edited by


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/430 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
মোটকথাঃ-
এককপরিবার ব্যবস্থা ও যৌথপরিবার ব্যবস্থা উভয়ই বৈধ।
আমাদের দেশে যেহেতু পূর্ব থেকেই  যৌথপরিবার ব্যবস্থা চলে আসছে, এবং এককপরিবার ব্যবস্থাকে মা-বাবা সহ অনেকেই মেনে নিতে পারেন না।এমনকি অনেকে এককপরিবার ব্যবস্থাকে কটাক্ষ করে ও নিন্দা মনে করে,তাই যৌথপরিবারই আমাদের জন্য আপাতদৃষ্টিতে মাননসই ও গ্রহণযোগ্য হবে,তবে যাতে শরীয়তের কোনো বিধি-বিধান লঙ্ঘন না হয় সেদিকে তীক্ষ্ণদৃষ্টি অত্যান্ত গুরুত্বতার সাথে রাখতে হবে, আল্লাহ না করুক যদি কোনো অঘটন ঘটে যায়,সেক্ষেত্রে সমস্ত দায়-দায়িত্ব কিন্তু আপনার-ই।যখন আমাদের সমাজ এককপরিবার ব্যবস্থাকে মেনে নিবে তখন সেটাই সবার জন্য মঙ্গলজনক ও নিরাপদ হবে।একক পরিবার না যৌথ পরিবার?কোনটা অগ্রহণযোগ্য?এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/430

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করুন।শশুড় শাশুড়িকে নিজ পিতা মাতার মত মনে করুন।

(২)
আপনি আপনার স্বামীকে বলতে পারেন যেন সে আপনাকে সহ তার বাবা মা কে ঢাকাতে নিয়ে যায়।

(৩)
তাদের সাথে মিলে মিশেই থাকুন।

(৪)
আপনার শাশুশ শাশুড়ি যেহেতু আপনাকে ভালবাসে, তাই স্বামীর প্রেসার ব্যতিতও আপনি তাদের সাথে থাকার চেষ্টা করিন।

(৫)
জ্বী, অবশ্যই রয়েছে।আপনি আপনার স্বামীর হয়ে তাদের খেদমত করবেন। এক্ষেত্রে স্বামীকে সাহায্য করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
শায়খ,আমার স্বামী তার বাবা মাকে ঢাকায় নিয়ে রাখতে পারবেনা।আর তারাও বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় থাকবেনা।আর দ্বিতীয়ত আমি আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ির খেদমত করি,তাদের সাথে দুইমাস থাকলে স্বামীর কাছে থাকি ২০ দিন।এ ক্ষেত্রে  আমার স্বামীর সাথে ঝগড়া ও মানুষিক দূরত্ব বেড়েছে। আমি চাই ব্যালেন্স করতে।কিন্তু সেটা হচ্ছেনা।আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি চায় আমি তাদের সাথেই বেশি থাকি।তারা দুজনই শারিরীক ভাবে সুস্থ।তবুও আমাকে তাদের দেখভালের দোহাই দিয়ে  তাদের কাছে বেশি রাখে।আর আমার এই বিষয়টাকে ভালোবাসার অত্যাচার মনে হয়।কারণ আমি আমার স্বামীর হক এতে নষ্ট হয়।আমার বিয়ের এই ৭ মাসে আমি আমার স্বামীর সাথে মোট  সব মিলিয়ে দুই কি আড়াই মাস ছিলাম।আর আমার জন্য   এই দূরত্ব বেশি মনে হয়। আমি সব সময় স্বামীর সাথে থাকতে চাচ্ছিনা।কিন্তু আমি চাই তারা ব্যালেন্স করুক।একমাস তাদের কাছে রাখলে বাকি একমাস আমার স্বামীর সাথে থাকার অনুমতি দিক।কিন্তু তারা সব সময়ের জন্য আমাকে তাদের কাছেই রাখতে চায়।আমি আমার স্বামীর কাছে গিয়ে যখন থাকি তারা বারবার ফোন করে বলে আমি যাতে বেশিদিন না থাকি।তাহলে তারা আমাকে ঢাকায় আর যেতে দেবেনা।আমি এই বিষয়টাকে তাদের ভালেবাসাই মনে করি।এখন বিষয়টা এমন দাড়িয়েছে যে,শ্বশুর শ্বাশুড়ির সাথে ঃথাকলে তারা খুশি থাকবে,আমাকে ভালোবাসবে।আর স্বামীর কাছে থাকলে তাদের মন থেকে দূরে সরে যাবো। তারা নিজেরাও ঢাকায় গিয়ে থাকতে চাচ্ছে না।ব্যালেন্স করতে চাচ্ছেনা কেউ। যদি আমার জন্য একটু সহজ করে দিতো তাহলে, আমার মনও ভালো থাকলো,শ্বশুর শ্বাশুড়িও আামার সেবা পেলো।আর আমার স্বামীর হকও পূর্ণ হলো।কারন আমি চাই ব্যালেন্স করতে।আমি কোন অন্যায় দাবি করেছি কি??
by (712,400 points)
তারা যদি ঢাকায় গিয়ে থাকতে না চায়, তাহলে আপনি আপনার স্বামীর নিকট ঢাকায় বসবাসের আবেদন করতে পারবেন। শরীয়ত আপনাকে অনুমোদন দিবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...