আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
226 views
in সাওম (Fasting) by (66 points)
reopened by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
১। আমি ৯ বছর বয়স থেকে রোজা রাখা শুরু করি। হায়েজের কাজা রোজাগুলো তো আছেই সাথে আরও ৩-৪ টি রোজার কাজা আদায় করতে হবে। আমি জানতাম আমার বাকি রোজাগুলো সহিহ হয়েছে। কিন্তু না, আমি ইদানীং জানতে পারি সাহরীর সময় শেষ হওয়ার সাথে সাথে আর খাওয়া দাওয়া করা যায় না। জানি না রোজা অবস্থায় টুথপেস্ট ইউজ করায় আমার গলার ভেতরে পেস্ট গিয়েছে কিনা বা ওজু করার সময় গলায় পানি গিয়েছে কিনা। এরকম ধরতে গেলে একবার না, হয়ত অনেকবার রোজা হয়নি। আমি আগে ফজরের আজান পর্যন্ত খেতাম। এই বছর থেকে শুরু করেছি সাহরীর শেষ সময় পর্যন্ত খাওয়ার। কিন্তু আজকে বোধহয় আর পারলাম না। শুকনা খাবার হওয়ায় আমার গিলতে প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছিল। তাই মনে হয় একটু বেশি সময় লেগে যায়।
ফজরের আজান দেওয়ার আগেই খাওয়া শেষ হয়, কিন্তু জানি না সাহরীর শেষ সময় পার হয়ে গিয়েছিল কিনা। কাজা করতে বলবেন তো। যতগুলো কাজা আদায় করেছি বেশিরভাগেরই একই অবস্থা। ফজরের আগ পর্যন্ত খাওয়া, গলায় পানি গিয়েছে কিনা নিশ্চিত হতে না পারা ইত্যাদি। আজকে ফজরের সালাত আদায় করে প্রচুর পাগলামি করেছি এসব নিয়ে মানসিক অস্থিরতায়। আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি আল্লাহ আমাকে জাহান্নামে ছুঁড়ে ফেলছেন। কতগুলো কাজা আদায় করব শায়খ? এই সমস্ত রোজার কাজার সাথে বেশিরভাগ স্কলারের মতে নামাজের কাজা তো আছেই (যেহেতু জীবনে অনেক নামাজ কাজা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে পড়ার পরও)।  আমি একেবারে দিশেহারা অবস্থায়, প্রতিটা মুহূর্তে মরে যেতে ইচ্ছা করে।
২। রোজা ভাঙ্গার বিষয়টিও একই। গলায় পানি ঢুকেছে কিনা নিশ্চিত হতে পারছি না( গলার ভেতরে পেস্ট গিয়েছে কিনা বা ওজু করার সময় গলায় পানি গিয়েছে কিনা)। আর এটা একদিনের সমস্যা না, বহুদিনের। এই বিষয় নিয়েও মানসিক অস্থিরতায় আছি ও পরিস্থিতি একই। জানি না জীবনে কোন রোজা আদৌ সহিহ হয়েছে কিনা। বুঝতে পারছেন কতগুলো রোজা কাজা করতে হতে পারে। কাজা আদায় করতে গিয়েও একই অবস্থার পুনরাবৃত্তি, একেবারে চেইন কাজা।
প্লিজ আমাকে সাহায্য করুন। আমি জানিনা এভাবে কতদিন মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারব। হয়ত ইসলামের গণ্ডি থেকেই বের হয়ে যেতে হতে পারে। আল্লাহ হিফাজত করুন। আমীন!

1 Answer

+1 vote
by (564,330 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


আল আশবাহ ওয়ান নাজায়ের গ্রন্থে আছেঃ

لمافی الاشباہ والنظائر (ص۵۶):القاعدة الثالثة: اليقين لا يزول بالشك:
নিশ্চিত ধারনা সন্দেহ পোষনের দ্বারা বিলুপ্ত হয়না।  
.
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
 رواه مسلم عن أبي هريرة رضي الله عنه مرفوعا "{ إذا وجد أحدكم في بطنه شيئا فأشكل عليه أخرج منه شيء أم لا فلا يخرجن من المسجد حتى يسمع صوتا ، أو يجد ريحا } "

যার সারমর্ম হলো বায়ু বের হওয়া নিয়ে সন্দেহ হলে সেই সন্দেহের দিকে ভ্রুক্ষেপ করা যাবেনা,হ্যাঁ যদি বায়ু বের হওয়ার আওয়াজ অথবা গন্ধ পায়,তাহলে বায়ু বের হয়েছে বলে ধরবে।    
(মুসলিম শরীফ)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
রমজানে দেশের বেশিরভাগ সাহরী ইফতারীর  ক্যালেন্ডারগুলো ইসলামীক ফাউন্ডেশন এর অনুসরণ  করে।
সেখানে সাহরীর সময় শেষ হওয়ার ৩ মিনিট আগেই সতর্কতামূলক সাহরীর সময় শেষ লেখা থাকে।
আবার সুবহে সাদিক এর ৩ মিনিট অতিক্রম করার পর ফজরের আযানের দেয়ার কথা উল্লেখ থাকে।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যেসমস্ত রোযায় সাহরীর টাইম শেষ হওয়ার পর পানি গিলে ফেলেছেন বা টুথপেষ্ট গিলে ফেলেছেন, এক্ষেত্রে সাহরীর শেষ টাইমের কতক্ষন পর এটি করেছেন?

৩ মিনিটের মধ্যে হয়ে থাকলে রোযার সমস্যা হবেনা।
কাজাও আদায় করতে হবেনা।
৩ মিনিট অতিক্রম করার পর যদি আপনি এরকম করে থাকেন,তাহলে এখন দেখতে হবে যে আসলেই আপন পানি গিলে ফেলেছিলেন নাকি এটি শুধুমাত্র আপনার ওয়াসওয়াসা।

যদি আপনি সাহরীর টাই শেষ হওয়ার ৩ মিনিট পরে নিশ্চিত ভাবে পানি/টুথপেষ্ট  গিলে থাকেন, তাহলে কেবল সে সমস্ত রোযার কাজা আদায় করবে।

সন্দেহ মূলক দিন গুলির কাজা আদায় করতে হবেনা।

নিশ্চিত রোযা ভেঙ্গে যাওয়ার দিন গুলি প্রবল ধারনার উপর ভিত্তি করে হিসেব করে সেগুলোর কাজা আদায় করবেন।
,
আপনি সাহরীর শেষ হওয়ার ৫/১০ মিনিট আগেই সাহরী শেষ করবেন।
এরপর ব্রাশ ইত্যাদি করবেন।
পানি খাবেন।

বেশি সময় হাতে নিয়ে সাহরী খেতে বসবেন।     

টেনশনের কিছু নেই,যদি জীবনে সবগুলো রোযার কাজা আদায় না করতে পারেন,তাহলে মৃত্যুর সময় ওয়ারিশদের প্রত্যেক রোযার জন্য একটি সদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ টাকা ফিদইয়াহ হিসেবে আদায় করতে বলে যাবেন।     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (66 points)
জাযাকাল্লাহ খাইর। আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন। আমীন!

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 190 views
0 votes
1 answer 351 views
...