আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
3,815 views
in সালাত(Prayer) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম! আমি আল্লাহর রহমতে তাহাজ্জুদের নামায পড়ার চেষ্টা করি। ঘুমানোর আগে বিতরের নামায পড়ি না। ফজরের ওয়াক্তের আগেই তাহাজ্জুদ এর নামায পড়ে বিতরের নামায পড়ি। কিন্তু মাঝে মাঝে তাহাজ্জুদের সময় উঠতে পারি না। ফলে ফজরের নামাজের আগে কাযা করতে হয়। এই যে মাঝে মাঝে বিতরের নামাজ কাযা হয় এটা এড়ানোর জন্য কিি  ঘুমানোর আগেই বিতরের নামায পড়ে নিব? আর ফজরের ওয়াক্তের আগে তাহাজ্জুদ পড়ে নিব? নাকি যেদিন ঘুমাতে দেরী হবে শুধু সেদিন ঘুমানোর আগে বিতর পড়ব? সঠিক নিয়মটা জানতে চাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ- 
বিতিরের নামায ঘুমানোর পূর্বে ও পরে উভয় সূরতে জায়েয রয়েছে।এতে কোনো সন্দেহ নাই।তবে মুস্তাহাব হল,রাত্রের শেষ নামায বিতির হওয়া চাই।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি, থেকে বর্ণিত
عن عبد الله بن عمر قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ( اجْعَلُوا آخِرَ صَلَاتِكُمْ بِاللَّيْلِ وِتْرًا )
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,তোমরা বিতিরকে রাত্রের শেষ নামায বানাও।(সহীহ বুখারী-৯৯৮ সহীহ মুসলিম-৭৪৯)

কেউ যদি রাত্রের প্রথম অংশে ঘুমানোর পূর্বে বিতির পড়ে নেয়,তাহলে বিতিরের পর নফল নামায পড়া নিষেধ নয়।এবং উক্ত নফল নামাযের পর দ্বিতয়বার বিতিরের নামায পড়া অাবশ্যকীয় নয়।কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ কর্তৃক আদেশ 'তোমরা বিতিরকে রাত্রের শেষ নামায বানাও' এটা মুস্তাহাব পর্যায়ভুক্ত। হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْها أن النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كان يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ بعد الوتر وَهُوَ جَالِسٌ .
তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাঃ বিতিরের পর বসে বসে দুই রা'কাত নামায পড়েছেন।(সহীহ মুসলিম-৭৩৮)

তালক ইবনে আলী থেকে বর্ণিত
وعن طلق بن علي قال : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول لا وتران في ليلة  
রাসূলুল্লাহ সা বলেন,এক রাত্রে দুই বিতির পড়া যাবে না।(সুনানে তিরমিযি-৪৭০,সুনানে নাসাঈ-১৬৭৯,সুনানে আবি-দাউদ-১৪৩৯)

ইবনে হাযম রাহ লিখেন,
والوتر آخر الليل أفضل . ومن أوتر أوله فحسن , والصلاة بعد الوتر جائزة , ولا يعيد وتراً آخر اهـ .
শেষ রাত্রে বিতির পড়া উত্তম।তবে কেউ যদি রাত্রের প্রথম অংশে পড়ে নেয়,তাহলে সেটাও ভালো।বিতিরের পর নামায পড়া জায়েয।রাতের প্রথম অংশে পড়ে নিলে দ্বিতয়বার আর বিতিরকে পড়তে হবে না।(অাল-মুহাল্লা-২/৯২)

ইমাম নববী রাহ লিখেন,
إذا أوتر ثم أراد أن يصلي نافلة أم غيرها في الليل جاز بلا كراهة ولا يعيد الوتر,
যদি কেউ বিতির পড়ে নেবার পর নফল বা অন্য কোনো নামায পড়তে চায়,তাহলে সেটা মাকরুহ ব্যতীত জায়েয।দ্বিতয়বার বিতির পড়া লাগবে না।

বিতিরের নামায রাত্রের প্রথম অংশে পড়া উত্তম না শেষ অংশে?

হযরত জাবের রাযি থেকে বর্ণিত
عن جابر رضي الله عنه قال : قال رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( مَنْ خَافَ أَنْ لا يَقُومَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ أَوَّلَهُ وَمَنْ طَمِعَ أَنْ يَقُومَ آخِرَهُ فَلْيُوتِرْ آخِرَ اللَّيْلِ فَإِنَّ صَلاةَ آخِرِ اللَّيْلِ مَشْهُودَةٌ وَذَلِكَ أَفْضَلُ )
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
যে ব্যক্তি ভয় করবে যে,সে শেষ রাত্রে ফজরের পূর্বে ঘুম থেকে উঠতে পারবে না,সে যেন রাত্রের প্রথমাংশে ঘুমানোর পূর্বে বিতির পড়ে নেয়।আর যে ব্যক্তির মনে প্রবল ধারণা থাকবে যে,সে শেষ রাত্রে উঠতে পারবে, সে যেন শেষ রাত্রেই বিতির পড়ে।কেননা শেষ রাত্রের নামায ফযিলতপূর্ণ এবং উত্তম।(সহীহ মুসলিম-৭৫৫)

ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় বলেন
وهذا هو الصواب ، ويُحمل باقي الأحاديث المطلقة على هذا التفضيل الصحيح الصريح ، فمن ذلك حديث : ( أوصاني خليلي أن لا أنام إلا على وتر ) . وهو محمول على من لا يثق بالاستيقاظ
উক্ত হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতিই বিশুদ্ধ। অন্যান্য হাদীসগুলোকে এই হাদীসের আলোকেই ব্যখ্যা করা হবে।যেমন একটি হাদীস (আমাকে আমার বন্ধু ওসিয়ত করেছেন,বিতির না পড়ে যেন নাঘুমাই)এটা হল,ঐ ব্যক্তির জন্য যিনি শেষ রাত্রে উঠতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে পুরো নিশ্চিত নয়।(আল-মিনহাজ-৩/২৭৭)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...