আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
538 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)
আসসালামু আলাইকুম! কেমন আছেন শায়েখ?

আমার প্রশ্ন হলো ৫ বসরের বাচ্চা যদি বিছানায় প্রসাব করে আর সেই প্রসাব শুকানোর পর যদি সেখানে বসা হয় তাহলে কি পোশাক নাপাক হয়ে যাবে? সেই পোশাক দিয়ে নামাজ পড়লে কি নামাজ হবে না?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জাবাব,

কাপড়ে নাপাক লাগার পর যদি উক্ত নাপাক শুকিয়ে যায়, তাহলে উক্ত স্থানে হাত বা কাপড় লাগলে তা নাপাক হবে না। শুকানোর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, নাপাক লেগে শুকিয়ে যাওয়া কাপড় নিংড়ালে কোন কিছু বের হয় না। অর্থাৎ কোন কিছুতে তা লাগলে নাপাকের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয় না। তাহলে যে কাপড় শুকিয়ে যাওয়া নাপাকে লেগেছে সে কাপড় ও স্থান নাপাক হয় না। সুতরাং পেশাব শুকিয়ে গেলে উক্ত স্থানে হাত লাগার দ্বারা হাতে নাপাকীর চিহ্ন না দেখা যায়, তাহলে হাত বা কাপড় নাপাক হবে না।

وَإِذَا جَعَلَ السِّرْقِينَ فِي الطِّينِ فَطَيَّنَ بِهِ السَّقْفَ فَيَبِسَ فَوَضَعَ عَلَيْهِ مِنْدِيلٌ مَبْلُولٌ لَا يَتَنَجَّسُ (الفتاوى الهندية، كتاب الطهارة، الْفَصْلُ الثَّانِي فِي الْأَعْيَانِ النَّجِسَةِ-1/47، وكذا فى حلبى كبير-1/153

যে নাপাক দেখা যায়, সে নাপাক এক দিরহাম পরিমাণ হলে কাপড় পাক থাকে, উক্ত কাপড় পরিধান করে নামায পড়া শুদ্ধ আছে। তবে যদি এক দিরহাম থেকে অধিক হয়, তাহলে উক্ত কাপড়সহ নামায পড়া শুদ্ধ হয় না।

عن أبي هريرة عن النبي صلى الله عليه و سلم قال : تعاد الصلاة من قدر الدرهم من الدم (سنن الدر قطنى، كتاب الصلاة، باب قدر النجاسة التي تبطل الصلاة، رقم الحديث-

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-এক দিরহাম পরিণাম রক্তের দরুন নামাযকে পুনরায় আদায় কর। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৩৮৯৬, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-১০৭৮৩, মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাকী, হাদীস নং-১৩২৩, আল জামেউল কাবীর, হাদীস নং-২৩৮}

এ হাদীসটি দুর্বল। কিন্তু যেহেতু এ বিষয়ে এ হাদীসটিই পাওয়া যায়, এর বিপরীত কোন হাদীস বর্ণিত নেই। তাই এর উপর আমল করা হয়। সেই সাথে এমন কম নাজাসাত থেকে সাধারণত বেঁচে থাকা কষ্ট সাধ্য ব্যাপার তাই এ সহ নামায জায়েজ হওয়ার বিষয়টি যুক্তিগ্রাহ্য বিষয়ও। এছাড়া সাহাবাদের থেকে বর্ণিত রয়েছে যে,

فلما ذكره صاحب الأسرار عن علي وبن مسعود أنهما قدرا النجاسة بالدرهم وكفى بهما حجة في الاقتداء وروي عن عمر أيضا أنه قدره بظفره(عمدة القارى شرح صحيح البخارى، كتاب الوضوء،  باب غسل الدم، رقم الحديث-227،3/140

হযরত আলী রাঃ এবং ইবনে মাসউদ রাঃ [কাপড়] নাপাক হওয়ার পরিমাণ নির্দিষ্ট করেছেন এক দিরহাম। আর আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ নির্ধারণ করেছেন  নখ পরিমাণ। {উমদাতুল কারী-৩/১৪০, আদিল্লাতুল হানাফিয়্যাহ-১০১}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/ বোন!

শরীয়তের বিধান হলো যতক্ষন পর্যন্ত নাপাকির আছর (চিন্হ) অন্য বস্তুর মধ্যে প্রকাশ না পায়,ঐ সময় পর্যন্ত উক্ত বস্তু নাপাক হয়না। এই জন্য যদি আপনার হাতে নাপাকি লেগে শুকনো হয়ে যায়,তাহলে সেটা দ্বারা শুকনো যেকোনো বস্তু স্পর্শ করতে পারবেন। তবে সেই হাত দ্বারা ভেজা কোনো বস্তু,ভেজা কাপড় স্পর্শ করলে সেটা নাপাক হয়ে যাবে।  দারুল উলুম  দেওবন্দ এর 57851 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (1/ 347):

"والحاصل أنه على ما صححه الحلواني: العبرة للطاهر المكتسب إن كان بحيث لو انعصر قطر تنجس وإلا لا، سواء كان النجس المبتل يقطر بالعصر أو لا. وعلى ما في البرهان العبرة للنجس المبتل إن كان بحيث لو عصر قطر تنجس الطاهر سواء كان الطاهر بهذه الحالة أو لا، وإن كان بحيث لم يقطر لم يتنجس الطاهر، وهذا هو المفهوم من كلام الزيلعي في مسائل شتى آخر الكتاب".

সারমর্মঃ শুকনো কোনো নাপাক কাপড়ে যদি ভেজা পাক কাপড় রাখা হয়,তাহলে উক্ত ভেজা পাক কাপড় যদি এমন হয়,যেটা নিংড়ালে পানি টপকিয়ে পড়ে,তাহলে এর দ্বারা উক্ত পাক কাপড় নাপাক হয়ে যাবে।

وَإِزَالَتُهَا إنْ كَانَتْ مَرْئِيَّةً بِإِزَالَةِ عَيْنِهَا وَأَثَرِهَا إنْ كَانَتْ شَيْئًا يَزُولُ أَثَرُهُ وَلَا يُعْتَبَرُ فِيهِ الْعَدَدُ. كَذَا فِي الْمُحِيطِ فَلَوْ زَالَتْ عَيْنُهَا بِمَرَّةٍ اكْتَفَى بِهَا وَلَوْ لَمْتَزُلْ بِثَلَاثَةٍ تُغْسَلُ إلَى أَنْ تَزُولَ، كَذَا فِي السِّرَاجِيَّةِ. . . . . وَإِنْ كَانَتْ غَيْرَ مَرْئِيَّةٍ يَغْسِلُهَا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ. كَذَا فِي الْمُحِيطِ وَيُشْتَرَطُ الْعَصْرُ فِي كُلِّ مَرَّةٍ فِيمَا يَنْعَصِرُ وَيُبَالِغُ فِي الْمَرَّةِ الثَّالِثَةِ حَتَّى لَوْ عَصَرَ بَعْدَهُ لَا يَسِيلُ مِنْهُ الْمَاءُ وَيُعْتَبَرُ فِي كُلِّ شَخْصٍ قُوَّتُهُ وَفِي غَيْرِ رِوَايَةِ الْأُصُولِ يَكْتَفِي بِالْعَصْرِ مَرَّةً وَهُوَ أَرْفَقُ. كَذَا فِي الْكَافِي وَفِي النَّوَازِلِ وَعَلَيْهِ الْفَتْوَى. كَذَا فِي التَّتَارْخَانِيَّة وَالْأَوَّلُ أَحْوَطُ. هَكَذَا فِي الْمُحِيطِ. (الفتاوى الهندية، كتاب الطهارة، الْبَابُ السَّابِعُ فِي النَّجَاسَةِ وَأَحْكَامِهَا وَفِيهِ ثَلَاثَةُ فُصُولٍ، الْفَصْلُ الْأَوَّلُ فِي تَطْهِيرِ الْأَنْجَاسِ-1/42

কাপড়ে নাপাক লাগার পর যদি উক্ত নাপাক শুকিয়ে যায়, তাহলে উক্ত স্থানে হাত বা কাপড় লাগলে তা নাপাক হবে না। শুকানোর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, নাপাক লেগে শুকিয়ে যাওয়া কাপড় নিংড়ালে কোন কিছু বের হয় না। অর্থাৎ কোন কিছুতে তা লাগলে নাপাকের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয় না। তাহলে যে কাপড় শুকিয়ে যাওয়া নাপাকে লেগেছে সে কাপড় ও স্থান নাপাক হয় না। সুতরাং পেশাব শুকিয়ে গেলে উক্ত স্থানে হাত লাগার দ্বারা হাতে নাপাকীর চিহ্ন না দেখা যায়, তাহলে হাত বা কাপড় নাপাক হবে না।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত শুকনো নাপাক বিছানাতে বসার দ্বারা যেহেতু শরীরে পরিহিত কাপড়ে নাপাকীর কোন আছর বা চিন্হ লাগেনি বিধায় উক্ত কাপড় পরিধান করে নামাজ আদায় করাতে কোনো সমস্যা নেই।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...