আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
149 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (27 points)
আসসালামু ওয়ালাইকুম।

১. নফল সালাতের তেলাওয়াতের সময়, জামাআতে হোক যেমন তারাবীহ অথবা একাকি হোক যেমন তাহাজ্জুদ, আরবীতে দুআ করা যাবে কি? যেমন যদি আল্লাহর আযাবের আয়াত পাঠ করা হয় তখন তা থেকে পানাহ চাওয়া অথবা আল্লাহর পুরষ্করের আয়াত পাঠ করলে তা কামনা করা যাবে কি?

যেমন - আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল জান্নাতা ওয়া আাঊযুবিকা মিনান নার সহ এ ধরণের ছোট ছোট দুআ।

২. ফজরের ফরজ সালাতের পর, ওয়াক্ত থাকা অবস্থায় নফল সালাত পড়া যাবে কি?

৩. কোন মাসবূক যার আসরের সালাতের প্রথম রাকাত ছুটে যায়। দ্বিতীয় রাকাত থেকে সে জামাআতে শরিক হয়। দ্বিতীয় রাকাতে ইমাম ভুল করলে সালাত শেষে যখন ইমাম সিজদায় সাহু আদায় করে তখন মাসবুকের করণীয় কি? সেও কি ইমামের সাথে সাহু সিজদার একদিকে সালাম ফিরাবে নাকি সালাম না ফিরিয়ে শুধু সাহু সিজদা দেবে, অতঃপর বাকি একরাকাত আদায় করবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
নফল নামাজে চাই তাহা জামাতে হোক বা একাকী হোক,কিরা'আতের মাঝে ভাবে আরবীতে দোয়া করা যাবে।
তবে দুনিয়াবি দোয়া (টাকার মালিক,বাড়ি গাড়ির মালিক হওয়া ইত্যাদির দোয়া)   করা যাবেনা। 

★তবে জামাতে মুক্তাদীদের যেহেতু কিরাআত নেই,তাদের চুপ থাকতে হয়,তাই তাদের এই ভাবে উচ্চারণ করে দোয়া করা যাবেনা,হ্যাঁ মনে মনে করতে পারবে।   

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ قَيْسٍ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ حُمَيْدٍ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، قَالَ قُمْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم لَيْلَةً فَقَامَ فَقَرَأَ سُورَةَ الْبَقَرَةِ لَا يَمُرُّ بِآيَةِ رَحْمَةٍ إِلَا وَقَفَ فَسَأَلَ وَلَا يَمُرُّ بِآيَةِ عَذَابٍ إِلَا وَقَفَ فَتَعَوَّذَ - قَالَ - ثُمَّ رَكَعَ بِقَدْرِ قِيَامِهِ يَقُولُ فِي رُكُوعِهِ " سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ " . ثُمَّ سَجَدَ بِقَدْرِ قِيَامِهِ ثُمَّ قَالَ فِي سُجُودِهِ مِثْلَ ذَلِكَ - ثُمَّ قَامَ فَقَرَأَ بِآلِ عِمْرَانَ ثُمَّ قَرَأَ سُورَةً سُورَةً - صحيح 

‘আওফ ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক রাতে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সলাত আদায়ে দাঁড়ালাম। তিনি সূরাহ বাক্বারাহ্ তিলাওয়াতের সময় কোন রহমাতের আয়াতে পৌঁছলে তথায় থেমে রহমাত চাইতেন এবং যখন কোন আযাবের আয়াতে পৌঁছতেন, তখন সেখানে থেমে আযাব হতে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। অতঃপর তিনি ক্বিয়ামের সমপরিমাণ সময় রুকূ‘তে অবস্থান করেন এবং তাতে ‘‘সুবহানা যিল্ জাবারূতি ওয়াল মালাকূতি ওয়াল কিবরিয়াই ওয়াল ‘আযমাতি’’ পাঠ করেন। অতঃপর তিনি ক্বিয়ামের সমপরিমাণ সময় সিজদাতে অবস্থান করেন এবং তাতেও উক্ত দু‘আ পাঠ করেন। অতঃপর তিনি (দ্বিতীয় রাক‘আতে) দাঁড়িয়ে সূরাহ্ আলে-‘ইমরান তিলাওয়াত করেন। অতঃপর (প্রত্যেক রাক‘আতে) একটি করে সূরাহ তিলাওয়াত করেন।
(আবু দাউদ ৮৭৩.তিরমিযী ‘শামায়িলি মাহমুদিয়্যাহ, হাঃ ২৯৮), নাসায়ী (অধ্যায় : তাত্ববীক্ব, হাঃ ১০৪৭), আহমাদ।

التفسير المظهرى ـ  (1 / 1417):
"(فصل)
لايجوز الدعاء والتعوذ للسامع إذا قرأ القاري فى القرآن ذكر الجنة والنار؛ لما ذكرنا من قول الكلبي: قال ابن همام: إن اللّه وعده بالرحمة إذا استمع، حيث قال: {فاستمعوا وانصتوا لعلكم ترحمون}، و وعده حتم، و إجابة دعاء المتشاغل عنه به غير مجزوم به، وكذا الإمام. (مسألة) وكذا المنفرد لايشتغل بغير القراءة في الفرض، و في النفل يسأل الجنة ويتعوذ من النار عند ذكرهما، ويتفكر في آية المثل؛ لحديث حذيفة: قال: صليت مع رسول اللّه صلى اللّه عليه وآله وسلم صلاة الليل فما مرّ بآية فيها ذكر الجنة إلا وقف، و سأل اللّه الجنة، وما مرّ بآية فيها ذكر النار إلا وقف وتعوذ من النار"
সারমর্মঃ
একাকী নামাজ আদায় কারী কিরাআত ব্যাতিত ফরজ নামাজে কোনো কিছুই তিলাওয়াত করবেনা,তবে নফল নামাজে জান্নাত চাইবে জাহান্নাম থেকে পানাহ চাইবে,আয়াতের মধ্যে ফিকির করতে পারবে।

(০২)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ফজরের ফরজ সালাতের পর, ওয়াক্ত থাকা অবস্থায় নফল সালাত পড়া মাকরুহ।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «لَا صَلَاةَ بَعْدَ الصُّبْحِ حَتّى تَرْتَفِعَ الشَّمْسُ وَلَا صَلَاةَ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتّى تَغِيبَ الشَّمْسُ». (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ ফাজ্রের (ফজরের) সলাতের পর সূর্য উঠে উপরে চলে না আসা পর্যন্ত আর কোন সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) নেই। আর ‘আসরের সলাতের পর সূর্য না ডুবা পর্যন্ত কোন সলাত নেই।
(বুখারী ৫৮৬, মুসলিম ৮২৭,মিশকাত ১০৪১।)

(০৩)
সে সালাম ফিরাবেনা।
তবে ইমামের সাথে সেজদায়ে সাহু দিবে।


قال ابن عابدین (قولہ والمسبوق یسجد مع إمامہ) قید بالسجود لأنہ لا یتابعہ فی السلام، بل یسجد معہ ویتشہد فإذا سلم الإمام قام إلی القضاء۔( الدر المختار مع رد المحتار : ۸۲/۲، کتاب الصلاة، باب سجود السہو ، ط: دار الفکر، بیروت ) 
সারমর্মঃ
মাসবুক ইমামের সাথে সেজদায়ে সাহুর সালামের ক্ষেত্রে ইমামের অনুসরণ করবেনা,বরং সে ইমামের সাথে সেজদাহ দিবে,তাশাহুদ পড়বে,ইমাম যখন সালাম ফিরাবে,তখন সে তার বাকি নামাজ আদায়ের জন্য দাঁড়িয়ে যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...