আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
333 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (42 points)
আসসালামু আ'লাইকুম ওয়া রহমাতুল্ল-হ।

আমি এবছরের একজন ভর্তি পরীক্ষার্থী(নারী)।
১.বিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষার পরিবেশে একজন মুসলিম নারীর ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে শরীয়ত কি বলে?
তাছাড়া সহশিক্ষার পরিবেশ সম্বলিত বিশ্ববিদ্যালয় এবং শুধুমাত্র মহিলা ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয়-এই দুটোর মধ্যে কোনটি একজন নারী শিক্ষার্থীর জন্য জায়েয?

২.সহশিক্ষা সম্বলিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য পরিবার প্রেশার দিলে এইক্ষেত্রে করণীয় কি?নিজের ইমান,আমলের নিরাপত্তার জন্য পরিবারের এমন নির্দেশ উপেক্ষা করার সুযোগ কি একজন মুসলিম নারী রয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/27006/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ 
দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১

সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,  

(০১)
এ শর্তগুলি পুরোপুরি ভাবে মেনে আপনি ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে পড়াশোনা  করতে পারেন।
,
সহশিক্ষার পরিবেশ সম্বলিত বিশ্ববিদ্যালয় এবং শুধুমাত্র মহিলা ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয়-এই দুটোর মধ্যে একজন নারী শিক্ষার্থীর জন্য মহিলা ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াই সবচেয়ে ভালো। 
এখানে তার পর্দা আব্রুর পূর্ণ হেফাজত হবে,ইনশাআল্লাহ।    

তবে এটির সুযোগ না হলে বা কষ্টকর.,,,পরিবার মানতে চাচ্ছেনা ইত্যাদি কারনে সহ সহশিক্ষার পরিবেশ সম্বলিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা উপরোক্ত শর্ত মেনে জায়েজ হবে।
নতুবা জায়েজ হবেনা।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০২)
সহশিক্ষার পরিবেশ সম্বলিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার ক্ষেত্রে উপরোক্ত শর্ত পূর্ণ ভাবে মেনে চলতে পারলে বাবা মার কথাকে উপেক্ষা করা ঠিক হবেনা।

তবে উপরোক্ত সহ শিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার শরয়ী শর্ত সমূহ মানা সম্ভব না হলে নিজের ইমান,আমলের নিরাপত্তার জন্য পরিবারের এমন নির্দেশ উপেক্ষা করার সুযোগ একজন মুসলিম নারীর রয়েছে।

কেননা বাবা মা যদি শরীয়তের খেলাফ আদেশ করে,তাহলে তাহা মানা সন্তানের জন্য জরুরি নয়।
বরং তাহা না মানাই জরুরি।     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...