স্বামী-স্ত্রীর বনিবনা নেই, আজল ইস্তিখারা কি জায়েজ?

Question

বিয়ের ছয় বছর পূর্ন হল, তাও কোনো বনিবনা নেই স্বামী-স্ত্রীর। তাই আজল ইস্তিখারা করেছিলাম। এথেকে জানলাম আমার বিবাহ আল্লাহর সন্তুষ্ট ছাড়া হয়েছে। সুতরাং এটা জোরপূর্বক। তাই বৈবাহিক জীবন অশান্তির। এই বিবাহ ঝুলে আছে। বিচ্ছেদের লক্ষণ।যেহেতু আজল ইস্তিখারায় বিবাহ ভেঙে যাওয়ার লক্ষণ। সেক্ষেত্রে আমি একজন আলেম কে জিজ্ঞাসা করলাম বিচ্ছেদ করলে কি আমি গুনাহগার হবো কিনা। তিনি বলেছেন, এই বিয়েটা ইস্তিখারা না করে করানো হয়েছে। তবে স্বামীর খারাপ কোনো দিক নেই। তাই আপনি চাইলে দাওয়াই নিতে পারেন, সবুর করতে পারেন, আল্লাহর নিকট চাইতে পারেন যাতে দুজন দুজনের উপযোগী ও আল্লাহর প্রিয় দম্পতি হতে পারেন। তবে যদি আপনার স্বামী তার স্ত্রীর হ্বক আদায় না করে তাহলে মেয়েপক্ষ থেকে খোলা তালাক জায়েয, এতে মেয়ে (আমি) গুনাহগার হবে না। আমার প্রশ্ন হল, আমার স্বামী আমার সাথে সংসার করতে অনিচ্ছুক, বাচ্চা নিতে অনিচ্ছুক, স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব পালনেও অনীহা প্রকাশ করেন। হায়েজ চলাকালীন সময়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চান। একমাত্র শারীরিক সম্পর্ক ছাড়া আর কোনো সম্পর্ক তিনি করতে চান না। আমাকে তার নিজের কাছেও রাখতে চান না। স্বাভাবিক বৈবাহিক জীবনে তার প্রচুর অনাগ্রহতা। সব বিবেচনা করে যদি আমি তাকে তালাক দিতে চাই তাহলে কি কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী তা সঠিক হবে? আমি আল্লাহর সন্তুষ্টিও চাই, আবার গুনাহগারও হতে চাইনা। 

Answer 1

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/468 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
বিনা কারণে তালাক আবেদন কারী মহিলা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
ﺃَﻳُّﻤَﺎ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٍ ﺳَﺄَﻟَﺖْ ﺯَﻭْﺟَﻬَﺎ ﻃَﻼَﻗًﺎ ﻓِﻰ ﻏَﻴْﺮِ ﻣَﺎ ﺑَﺄْﺱٍ ﻓَﺤَﺮَﺍﻡٌ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ . ‘
যে মহিলা বিনা কারণে তার স্বামীর নিকটে তালাক্ব চায়, তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধিও হারাম’।
[আবুদাউদ হা/২২২৬; তিরমিযী হা/১১৮৭; ইবনু মাজাহ হা/২০৫৫; মিশকাত হা/৩২৭৯, সনদ ছহীহ।].

ﺫﻫﺐ ﻓﻘﻬﺎﺀ ﺍﻟﺤﻨﻔﻴّﺔ ﻭﺍﻟﺤﻨﺎﺑﻠﺔ ﺇﻟﻰ ﺃﻥ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺑﻼ ﺳﺒﺐ ﻣﺤﺮّﻡٌ ﺷﺮﻋﺎً ﻭﻳﺄﺛﻢ ﻓﺎﻋﻠﻪ، ﻭﺫﻟﻚ ﻟﻘﻮﻟﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﻟﻌﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﻞ ﺫﻭﺍﻕ، ﻣﻄﻼﻕ ) ﻭﻷﻥ ﻓﻲ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﻛﻔﺮﺍً ﻟﻨﻌﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻭﺗﻌﺎﻟﻰ ، ﺣﻴﺚ ﺇﻥّ ﺍﻟﺰﻭﺍﺝ ﻧﻌﻤﺔ ﻣﻦ ﻧﻌﻢ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭﺍﻟﻄﻼﻕ ﺑﻼ ﺳﺒﺐٍ ﻛﻔﺮٌ ﻟﻨﻌﻤﺔ ﺍﻟﺰﻭﺍﺝ؛ ﻭﻛﻔﺮﺍﻥ ﺍﻟﻨﻌﻤﺔ ﺣﺮﺍﻡ، ﻓﻼ ﻳﺤﻞّ ﺍﻟﻄﻼﻕ ﺇﻻ ﻟﻀﺮﻭﺭﺓ .
فقه السنة (الطبعة الثالثة)، بيروت: دار الكتاب العربي، صفحة 242، جزء 2
ভাবার্থ-হানাফি এবং হাম্বলী ফুকাহায়ে কেরামগণ মনে করেন যে,বিনা কারণে তালাক প্রদাণ শরীয়তের দৃষ্টিকোণে হারাম।এবং তালাক প্রদাণকারী গোনাহগার। কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ আমভাবে বলেছেন,আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক স্বাদ আস্বাদনকারীদের উপর লা'নত প্রদাণ করেন।কেননা তালাক প্রদাণ দ্বারা আল্লাহ তা'আলা র নিয়ামতকে অস্বীকার করা হয়। বিবাহ আল্লাহর নিয়ামত সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি নিয়ামত।আর বিনা কারণে তালাক প্রদাণ মানে বিবাহ নামক নিয়ামতকে পরিত্যাগ, অস্বীকার এবং অবহেলা করা। আর নিয়ামতকে অস্বীকার বা পরিত্যাগ করা হারাম।সুতরাং প্রয়োজন ব্যতীত তালাক হালাল হবে না।(ফেকহুস সুন্নাহ-২/২৪২)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী উক্ত স্ত্রী তার স্বামীর নিকট তালাক চাইতে পারবে। এতেকরে স্ত্রীর কোনো গোনাহ হবে না।