আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
314 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (27 points)
আসসালামু আলাইকুম,
খুব বেশি জানা দরকার, তাড়াতাড়ি উত্তর দিলে খুশি হবো-
আমি মুটামুটি দ্বীনের পথে থাকতে চেষ্টা করি,দুনিয়াবিমুখ হয়ে থাকতে চাই।কিন্তু আমার স্বামী প্রচণ্ড ধরনের দুনিয়ামুখী একজন মানুষ,সে ফরজ ওয়াজিব কিছুই মানতে চায় না।এমনকি দিনের পর দিন এক ওয়াক্ত সালাত ও আদায় করে না, মাঝে  মাঝে ২-৩ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে, বাকিগুলোর ব্যাপারে ওর খোজ থাকে না

আমি আর ওর সাথে থাকতে পারছি না, ও এইরকম দুনিয়ামুখী আর ইসলামের সব বিধান সম্পর্কে উদাসীন এটা তো আছেই,সেই সাথে ও আমার তেমন কোনো খরচ ই দিতে চায় না,আমার খাওয়া, জামা কাপড়,অসুস্থ থাকলে চিকিতসা, হাতখরচ কমবেশি সবই আমার বাবা দিয়ে থাকে।
আমার স্বামী এতো বছরেও  আমার কোনো খরচ তো সেইভাবে দেয় ই না, সামান্য বাসার বাজার আর দুই একটা কাজে একটু খরচ করতে হলে ও পরে প্রচুর বাজে ভাবে কথা শুনায় তাই নিয়ে, আমার দেনমোহর ও দেয়নি।

আমার কোনো খরচের কথা বললে ও প্রায় আমাকে নিজে উপার্জন করতে বলে, উপার্জন করে ওর সংসারে টাকা দিতে বলে।
প্রায়  সময় এটা নিয়ে বলতে থাকে ওর কোন কোন পরিচিত মেয়ে এই বড় জব করে, এতো ভালো পজিশনে আছে ইত্যাদি, আমাকে চাকরি করার জন্য ফোর্স করে আগেও অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে ও, আমার তেমন কোনো খরচ দেয় না ও বিয়ের এতো বছরেও, অথচ  আমাকে চাকরি করার জন্য ডিরেক্টলি, ইনডিরেক্টলি প্রচুর মানসিক চাপে রাখে আর বাজে কথা ও শুনায়।
ওর জন্য অনেজ দুআ করেছি, কিন্তু ওর এই দুনিয়ামুখী স্বভাব আরো বাড়ছে।

আমার প্রশ্ন হলো-
১.ও যে আমাকে দেনমোহর দেয়নি, আমার খরচ দিতে চায় না, আমার নিজের দরকার নিজে চাকরি করে মেটাতে বলে,ওর সংসারে টাকা দিতে বলে,
আসলে ইসলাম অনুযায়ী  আমার জরুরী খরচ  বিয়ের এতো বছর পরে এসে কার দেয়ার কথা?
ও যে খরচ দেয় না,কিছু দিলেও প্রচুর বাজে কথা বলে, আমি কি তাহলে নিজের প্রয়োজন মেটাতে নিজে চাকরি করবো, নাকি এই সংসার ছেড়ে আমার দায়িত্ব নিবে এমন কারোর খোজ করবো?

২.ও যে ইসলামের ফরজ, ওয়াজিব মানে না, সালাত আদায় করে না, এর জন্য আমি দুআ এর পাশাপাশি আর কি কোনো আমল করতে পারি যাতে ও দ্বীনের পথে ফিরে আসে।

৩.দিনের পর দিন যে আমার উপর কোনো দায়িত্ব কর্ত্যব্য পালন করতে চায় না,আমাকে চাকরি করে তার সংসারে টাকা দিতে বলে, কোনো ফরজ ওয়াজিব মানতে চায় না,
এমন স্বামীর কাছ থেকে কি ডিভোর্স চাওয়া যাবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by


ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
আল্লাহ পাক সৃষ্টিকাল থেকেই প্রত্যেক মানুষকে তার ব্যক্তিগত নিজস্ব কিছু অধিকার দান করেছেন।স্ত্রীর উপর স্বামীর কিছু অধিকারও হক্ব দান করেছেন যেমনঃ-চাহিবামাত্র স্বামীকে সঙ্গ দেয়া ও স্বামীর সন্তানকে গর্ভে ধারণ করা এবং লালন-পালন করা ইত্যদি স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার ও হক্ব। তদরূপ স্বামীর উপর স্ত্রীরও কিছু অধিকার ও হক্ব রয়েছে যেমন, বিয়ের পর স্ত্রীর ব্যক্তিগত অধিকার রক্ষা করে স্ত্রীকে একটি বাসস্থান ও খাদ্য এবং বস্র দান করা।এটা স্বামীর উপর  স্ত্রীর অধিকার ওহক্ব এবং শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব। এ সম্পর্কে কোরআনের ঘোষনা হলঃ
ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ
নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)
নারীদের সাথে সদ্ভাবে ব্যবহার করতে হলে তাদেরকে নিয়মমাফিক অন্ন-বস্র-বাসস্থান দিতে হবে।(শেষ)

https://www.ifatwa.info/4506 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
তালাক প্রদান করা সম্পূর্ণ স্বামীর অধীকার।হ্যা শরীয়ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্ত্রীকে নিজের উপর তালাক প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে।যেমন,স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক প্রদানের অনুমতি প্রদান করলে,স্ত্রী নিজেকে তালাক দিতে পারবে।তাছাড়া স্বামী খোরপোষ না দিলে,স্ত্রী কাযী সাহেবের নিকট অভিযোগ দায়ের করতে পারবে।কিংবা স্বামী নিখোঁজ হলে বা ধ্বজভঙ্গ হলে কোর্ট বিবাহ ভঙ্গের রায় দিতে পারবে।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
স্বামীর উপর ওয়াজিব যে, সে আপনার মহর প্রদান করবে, এবং আপনার ভরণপোষণ দিবে।যদি সে না দিয়ে বরং স্ত্রীকে উপার্জনের কথা বলে, তাহলে এক্ষেত্রে স্ত্রী শরীয়া কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারবে। প্রয়োজনে স্ত্রী তালাক চাইতেও পারবে। স্বামী সুস্থ সবল ও উপার্জনক্ষম থাকাবস্থায় স্ত্রীর জন্য বাইরে গিয়ে চাকুরী করার কোনো অনুমোদন শরীয়তে নাই।

(২)
স্বামী ইসলামের ফরয বিধি বিধান না মানার কারণে স্ত্রীর কোনো সমস্যা হবে না।কিয়ামতের দিন স্বামীকেই এর জবাবদিহিতা করতে হবে।স্বামীকে দ্বীনের নিয়ে আসার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে দু'আ করতে হবে।

(৩)
মহর এবং ভরণপোষণ না দিলে নিজ ঈমান আকিদা সংরক্ষণের জন্য স্ত্রী তার স্বামীর নিকট তালাক চাইতে পারবে। এক্ষেত্র স্ত্রীর কোনো গোনাহ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...