بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
ইসলামে হাসি-মস্করা, আনন্দ ও বিনোদনকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। কিন্ত
সে জন্য মিথ্যা বলা বৈধ করা হয় নি। রাসূলুল্লাহ সা: নিজে হাঁসি-মস্করা
করতেন, কিন্তু
মিথ্যা পরিহার করতেন। এক বৃদ্ধাকে বলেন, কোনো বুড়ো মানুষ তো জান্নাতে যাবে না।
এতে বেচারী কান্নাকাটি শুরু করে। তখন তিনি বলেন, বুড়োবুড়িকে আল্লাহ জোয়ান বানিয়ে জান্নাতে
দিবেন। অপর একব্যক্তি তাঁর কাছে এসে সফরের জন্য একটি উট চান। তিনি বলেন, তোমাকে আমি একটি উটনীর বাচ্চা দিব। লোকটি
হতাশ হয়ে বলে, বাচ্চাতে
আমার কি হবে? তিনি বলেন, সকল উটই তো উটনীর বাচ্চা। এরূপ অনেক ঘটনা
হাদীসে রয়েছে। সাহাবীগণও হাসি-মস্করা করতেন, তবে মিথ্যা বর্জন করতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সা: বলেন:
«وَيْلٌ لِلَّذِي يُحَدِّثُ
بِالحَدِيثِ لِيُضْحِكَ بِهِ القَوْمَ فَيَكْذِبُ، وَيْلٌ لَهُ وَيْلٌ لَهُ»
‘‘যে ব্যক্তি মানুষ হাসানোর জন্য মিথ্যা বলে তার জন্য
ধ্বংস! তার জন্য ধ্বংস! তার জন্য ধ্বংস!’’ (তিরমিযী, আস-সুনান ৪/৫৫৭; হাদীস নং ২৩১৫; আবূ দাউদ, আস-সুনান ৪/২৯৭; হাদীস নং ৪৯৯০।)
অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন,
«أَنَا زَعِيمٌ بِبَيْتٍ فِي رَبَضِ
الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْمِرَاءَ وَإِنْ كَانَ مُحِقًّا، وَبِبَيْتٍ فِي
وَسَطِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْكَذِبَ وَإِنْ كَانَ مَازِحًا وَبِبَيْتٍ فِي
أَعْلَى الْجَنَّةِ لِمَنْ حَسَّنَ خُلُقَهُ»
‘‘যে ব্যক্তি
সর্বদা মিথ্যা বর্জন করে, মস্করা
বা কৌতুক করতেও মিথ্যা বলে না, তার জন্য জান্নাতের মধ্যদেশে একটি বাড়ির জন্য আমি দায়িত্ব গ্রহণ
করলাম।’’ (আবূ দাউদ, আস-সুনান ৪/২৫৩; হাদীস নং ৪৮০০।)
মস্করা
বা কৌতুকচ্ছলে কাউকে ভয় পাইয়ে দেওয়াও জায়েয নয়। এক সফরে সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ সা: -এর সাথে
ছিলেন। একজন সাহাবী ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তখন অন্য একজন গিয়ে তার রশিটি নিয়ে আসেন। এতে
ঘুমন্ত ব্যক্তি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠে পড়েন। তার ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থা দেখে সাহাবীগণ
হেসে উঠেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সা: বলেন, তোমরা হাসছ কেন? তারা ঘটনাটি বললে তিনি বলেন:
«لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ
يُرَوِّعَ مُسْلِمًا»
‘‘কোনো
মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে, সে অন্য
মুসলিমকে ভয় পাইয়ে দিবে।’’ (আবূ দাউদ, আস-সুনান ৪/৩০১;হাদীস নং ৫০০৪।)
সুপ্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
শ্রোতা
মিথ্যা মনে করুক বা না করুক, যদি কোন প্রবক্তার কাছ থেকে এমন কথা প্রকাশ পায়, যেই কথার বাস্তবতার সাথে মিল নেই
তাকেই মিথ্যা হিসেবে সাব্যস্থ করা হয়। মিথ্যা বলা কবীরা গুনাহ। যার শাস্তি অতি
ভয়াবহ।