আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
388 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (15 points)
edited by

আসসালামুয়ালাইকুম,

এক ব্যক্তি প্রচন্ড ওয়াস‌ওয়াসার রোগী। সে তার স্ত্রীকে খুব ভালবাসে এবং তাকে হারানোর ভয় তার মধ্যে কাজ করে। কেনায়া তালাক ও তালাকের স্বীকারোক্তির বিষয়ে জানার পর তার সবসময়ই মনে হয় তার মুখ থেকে হয়তো কোনো তালাকের বাক্য বেরিয়ে যাবে।

 

ঐ ব্যক্তির কিছু ঘটনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরছি, দয়া করে সেই অনুযায়ী উত্তর দিবেন।

 

১/ ধরুন ঐ ব্যক্তি অন‍্য একজন ব্যাক্তির সাথে কথা বলছে এমন একজন ব্যক্তিকে নিয়ে যে ওমরাহ করতে যাওয়ার কথা।

তখন যার সাথে কথা বলা হচ্ছে সে জিজ্ঞাসা করলো, "ও কি গেছে?" (অর্থাৎ যে ব‍্যাক্তি ওমরাহ করতে যাবার কথা সে গেছে নাকি।) 

কিন্তু ঐ প্রশ্ন দ্বারা ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ ব‍্যাক্তির মনে বেখেয়ালে এবং অনিচ্ছাকৃত ভাবে এমন চিত্র ভেসে উঠলো যেন তার স্ত্রীর চিত্র ভেসে উঠলো এবং সে উত্তর দিল "হ‍্যা"।

 উত্তর দেওয়ার সময় মনে হলো সে তার স্ত্রীর ব‍্যাপারে কথা বলছে এবং এই উত্তর দ্বারা তালাকের স্বীকারোক্তি হবে নাতো?( যদিও ব‍্যপারটি পুরোপুরিই তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে ঘটেছিল এবং সে চেষ্টা করেও নিজেকে থামাতে পারছে না।)

যদিও পরে সে দোটানায় পড়ে যায় আসলে তার উদ্দেশ্য কি হয়েছে?

উপরোক্ত ক্ষেত্রে কি তালাক হবে?

 

২/ধরুন ঐ ব্যক্তি অন‍্য কোন ব্যক্তিকে বললো,"মাকরূহ দুই প্রকার, এর মধ্যে একটি মাকরুহে তাহরিমি।"

"এইটা হ‌ইছে নাজায়েজ।"

এইখানে "নাজায়েজ" শব্দটি বলার সময় তার আবার ঐ আগের প্রেক্ষাপটের মত ঘটলো। তার অনিচ্ছাকৃত ভাবে মনে হইলো সে তার স্ত্রীর ব‍্যাপারে বলছে এবং অনেক চেষ্টা করেও তার মনের থেকে এই বিষয় সরাতে পারলো না।

যদিও পরে সে দোটানায় পড়ে যায় আসলে তার উদ্দেশ্য কি হয়েছে?

এই ক্ষেত্রে কি তালাক হবে?

 

৩/ ইমাম সাহেব তখন মোনাজাতে বলছে,"আল্লাহ আমাদের সকল হারাম, নাজায়েজ থেকে মুক্তি দিন।"

এ কথা শোনার সময়‌ও তার বেখেয়ালেই তার মনে তার স্ত্রীর মুখ ভেসে আসলো এবং সে বলল, "আল্লাহুম্মা আমিন।"

 

এই ক্ষেত্রে কি তালাক হবে?

 

৪/ধরুন তালাক সম্পর্কে কাউকে লেখার সময় "তালাক" শব্দটি টাইপ করার সময় তার মনে হলো তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে লিখছে। কিন্তু "তা" লেখার পর‌ই তার হুশ হয় এবং সে তার উদ্দেশ্য ঘুরিয়ে ফেলে(অর্থাৎ, যাকে লেখছিল তার উদ্দেশ্যেই লেখে।) এবং বাকি "লাক" অংশটুকু লেখে।

উপরোক্ত ঘটনায় কি তালাক হবে?

 

এরকম অনেক ঘটনা তার সাথে অহরহ ঘটছে। সে সব সময় এই ভয়ে থাকে তার প্রিয় সহধর্মিণীর সাথে তার সম্পর্ক হারাম হয়ে যাচ্ছে নাতো?

 

তার কার‌ও সাথে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলাও এখন দূরহ মনে হচ্ছে।

 

এইরকম ওয়াস‌ওয়াসার রোগীদের ক্ষেত্রে তালাকের বিধান কি?

 

সে তার ইবাদতেও ঠিক মত মনোনিবেশ করতে পারছে না।

দয়া করে এই বিষয়গুলো একটু গুরুত্ব সহকারে দেখবেন শায়েখ।

 

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : ما نهيتكم عنه ، فاجتنبوه ، وما أمرتكم به فأتوا منه ما استطعتم ، فإنما أهلك الذين من قبلكم كثرة مسائلهم واختلافهم على أنبيائهم . رواه البخاري ومسلم .
আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি যে,তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে যে সমস্ত জিনিষ থেকে নিষেধ করেছি, সে সমস্ত জিনিষ থেকে বিরত থাকো,এবং যে সমস্ত জিনিষের আদেশ করেছি, যথাসম্ভব সেগুলো পালন করার চেষ্টা করো। তোমাদের পূর্ববর্তীগণ তাদের অধিক প্রশ্ন এবং মতপার্থক্যর কারণেই ধংস হয়েছে।(বোখারী-মুসলিম)

https://www.ifatwa.info/1379 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
তালাকের ওয়াসওয়াসা আসলে মাথা নাড়ালে তালাক পতিত হবে না।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ : َ ( ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﺠَﺎﻭَﺯَ ﻟِﻲ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﻭَﺳْﻮَﺳَﺖْ ﺑِﻪِ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻞْ ﺃَﻭْ ﺗَﻜَﻠَّﻢ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার খাতিরে আমার উম্মতের অন্তরে চলে আসা ওয়াসওয়াসা(শয়তানি প্ররোচনা) বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ/শাস্তি প্রদাণ করবেন না।যতক্ষণ না সে কথা বা কাজের মাধ্যমে সেটাকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে। (সহীহ বোখারী-২৩৯১,সহীহ মুসলিম-১২৭)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
এভাবে তালাক হয়না।

(২)
এভাবেও তালাক হবে না।

(৩)
এভাবেও তালাক হয়না।

(৪)
এভাবেও তালাক হয়না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,680 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...