আসসালামুয়ালাইকুম,
এক ব্যক্তি প্রচন্ড ওয়াস‌ওয়াসার রোগী। সে তার স্ত্রীকে খুব ভালবাসে এবং তাকে হারানোর ভয় তার মধ্যে কাজ করে। কেনায়া তালাক ও তালাকের স্বীকারোক্তির বিষয়ে জানার পর তার সবসময়ই মনে হয় তার মুখ থেকে হয়তো কোনো তালাকের বাক্য বেরিয়ে যাবে।
ঐ ব্যক্তির কিছু ঘটনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরছি, দয়া করে সেই অনুযায়ী উত্তর দিবেন।
১/ ধরুন ঐ ব্যক্তি অন্য একজন ব্যাক্তির সাথে কথা বলছে এমন একজন ব্যক্তিকে নিয়ে যে ওমরাহ করতে যাওয়ার কথা।
তখন যার সাথে কথা বলা হচ্ছে সে জিজ্ঞাসা করলো, "ও কি গেছে?" (অর্থাৎ যে ব্যাক্তি ওমরাহ করতে যাবার কথা সে গেছে নাকি।)
কিন্তু ঐ প্রশ্ন দ্বারা ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ ব্যাক্তির মনে বেখেয়ালে এবং অনিচ্ছাকৃত ভাবে এমন চিত্র ভেসে উঠলো যেন তার স্ত্রীর চিত্র ভেসে উঠলো এবং সে উত্তর দিল "হ্যা"।
উত্তর দেওয়ার সময় মনে হলো সে তার স্ত্রীর ব্যাপারে কথা বলছে এবং এই উত্তর দ্বারা তালাকের স্বীকারোক্তি হবে নাতো?( যদিও ব্যপারটি পুরোপুরিই তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে ঘটেছিল এবং সে চেষ্টা করেও নিজেকে থামাতে পারছে না।)
যদিও পরে সে দোটানায় পড়ে যায় আসলে তার উদ্দেশ্য কি হয়েছে?
উপরোক্ত ক্ষেত্রে কি তালাক হবে?
২/ধরুন ঐ ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তিকে বললো,"মাকরূহ দুই প্রকার, এর মধ্যে একটি মাকরুহে তাহরিমি।"
"এইটা হইছে নাজায়েজ।"
এইখানে "নাজায়েজ" শব্দটি বলার সময় তার আবার ঐ আগের প্রেক্ষাপটের মত ঘটলো। তার অনিচ্ছাকৃত ভাবে মনে হইলো সে তার স্ত্রীর ব্যাপারে বলছে এবং অনেক চেষ্টা করেও তার মনের থেকে এই বিষয় সরাতে পারলো না।
যদিও পরে সে দোটানায় পড়ে যায় আসলে তার উদ্দেশ্য কি হয়েছে?
এই ক্ষেত্রে কি তালাক হবে?
৩/ ইমাম সাহেব তখন মোনাজাতে বলছে,"আল্লাহ আমাদের সকল হারাম, নাজায়েজ থেকে মুক্তি দিন।"
এ কথা শোনার সময়ও তার বেখেয়ালেই তার মনে তার স্ত্রীর মুখ ভেসে আসলো এবং সে বলল, "আল্লাহুম্মা আমিন।"
এই ক্ষেত্রে কি তালাক হবে?
৪/ধরুন তালাক সম্পর্কে কাউকে লেখার সময় "তালাক" শব্দটি টাইপ করার সময় তার মনে হলো তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে লিখছে। কিন্তু "তা" লেখার পরই তার হুশ হয় এবং সে তার উদ্দেশ্য ঘুরিয়ে ফেলে(অর্থাৎ, যাকে লেখছিল তার উদ্দেশ্যেই লেখে।) এবং বাকি "লাক" অংশটুকু লেখে।
উপরোক্ত ঘটনায় কি তালাক হবে?
এরকম অনেক ঘটনা তার সাথে অহরহ ঘটছে। সে সব সময় এই ভয়ে থাকে তার প্রিয় সহধর্মিণীর সাথে তার সম্পর্ক হারাম হয়ে যাচ্ছে নাতো?
তার কারও সাথে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলাও এখন দূরহ মনে হচ্ছে।
এইরকম ওয়াসওয়াসার রোগীদের ক্ষেত্রে তালাকের বিধান কি?
সে তার ইবাদতেও ঠিক মত মনোনিবেশ করতে পারছে না।
দয়া করে এই বিষয়গুলো একটু গুরুত্ব সহকারে দেখবেন শায়েখ।