আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
978 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (0 points)
আমরা জানি কুরআনে কয়েকভাবে নাসখ সংঘটিত হয়েছে।কিছু কিছু ক্ষেত্রে আয়াত ও বিধান দুটোই নাসখ হয়েছে।কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে কোন একটি নাসখ হয়েছে।একটা জায়গায় দেখেছিলাম আয়াত নাসখ এর উদ্দেশ্য এই যে,মানুষ কে পরিক্ষা করা তারা বিধান মানে কিনা।আর বিধান নাসখ  করে আয়াত রাখার হিকমাহ হলো যেন আমরা তিলাওয়াতের সওয়াব পাই।প্রশ্ন হলো,আল্লাহ যদি বিধানের আয়াত টা রেখে দিতেন এবং নাসখকৃত বিধানএর আয়াত তুলে নিতেন তাহলে তো দুটো উদ্দেশ্যই পূরণ হতো।সেটাই কি যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে না?এর পিছনে হিকমাহ টা কী?এইটাই প্রশ্ন।

1 Answer

0 votes
by (547,020 points)
edited by
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم 

نسخ শব্দের অর্থ রহিত করা। পারিভাষিকভাবে, নাসখ মানে সকল শর্ত পূরণ করেছে এমন কোনো কর্মবিষয়ক বিধান পালনের সময়সীমার সমাপ্তি ঘোষণা করা।
অর্থাৎ, নাসখ বলতে স্রষ্টার একটি বিধান নতুন আরেকটি বিধান দ্বারা বাতিল হয়ে যাওয়াকে বোঝায়।
,
৩ ধরনের নসখ হতে পারেঃ
কুরআন দ্বারা কুরআনের নাসখ:
এ ক্ষেত্রে কুরআনের পূর্ববর্তী একটি আইন পরবর্তী আইন দ্বারা রহিত হয়। যেমন, যেসব নারীরা ব্যভিচার করে, তাদের শাস্তি সম্পর্কে কুরআনে নাযিল করা হয়ঃ
“আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচারিণী, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চার জন পুরুষকে সাক্ষী হিসেবে নিয়ে এসো। আর যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তবে সংশ্লিষ্টদেরকে গৃহে আবদ্ধ রাখো, যে পর্যন্ত মৃত্যু তাদেরকে তুলে না নেয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য অন্য কোনো পথ নির্দেশ না করেন।” [সূরা আন নিসা (৪): ১৫]

এ আইনটি পরবর্তীতে বাতিল করা হয়। যারা এ ধরনের মন্দ কাজ করবে তাদের শাস্তি সম্পর্কে নাযিল করা হয়,
“ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর করণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকো। মুসলিমদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।”
[সূরা আন নূর (২৪): ২]
 
 কুরআনের মাধ্যমে সুন্নাহর নাসখ:
এক্ষেত্রে, রাসূল (সাঃ) এর একটি নির্দেশ কিংবা তিনি পালন করতেন এমন কোনো সুন্নাহ পবিত্র কুরআনের কোনো আয়াত দ্বারা রহিত হয়ে যায়। রাসূল (সাঃ) মদিনায় হিজরত করে দেখতে পেলেন সেখানকার ইহুদীরা আশুরা’র দিন সিয়াম পালন করছে। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, “নবী ﷺ যখন মদিনায় এলেন, তখন দেখলেন ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা রাখে। তখন তিনি বললেন, “কেন তোমরা রোজা রাখো?” তারা বললো, “এটি উত্তম দিন। এ দিনে আল্লাহ বনি ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর হাত থেকে মুক্ত করেছেন; তাই মূসা (আঃ) এ দিনে রোজা রাখতেন।” তখন নবী ﷺবললেন, “তোমাদের চেয়ে আমি মূসার অধিক নিকটবর্তী। ফলে তিনি এ দিন রোজা রাখলেন এবং অন্যদেরকেও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।” 
(সহীহ বুখারী, হাদীসনং: ১৮৬৫)

রাসূলﷺ এর এই নির্দেশের পর সবাই বাধ্যতামূলকভাবে আশুরা’র দিন সিয়াম পালন করতো। তখনো রামাদ্বানে সিয়াম রাখার বিধান নাযিল হয়নি। পরবর্তীতে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করলেন,
 
“রামাদ্বান মাসই হল সে মাস, যে মাসে নাযিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে, সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ করো এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা করো, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো।”
[সূরা বাকারা (২): ১৮৫]
 
আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস অনুযায়ী, এ আয়াতটি নাযিল হবার পর মুসলিমরা আশুরা’র সিয়ামকে বাধ্যতামূলক হিসেবে পালন করেনি। বরং তা ঐচ্ছিক হয়ে যায়। 
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ২৪৯৯-২৫০৩)
,
সুন্নাহর মাধ্যমে সুন্নাহর নাসখ:
যখন রাসূলﷺএর কোনো নির্দেশ পরবর্তীতে তাঁর আরেকটি নির্দেশ দ্বারা বাতিল হয়ে যায়। যেমন, ইসলামের প্রথম দিকে কেউ রান্না করা খাবার খেলে রাসূলﷺ তাকে সালাত আদায়ের পূর্বে ওযু করার নির্দেশ দিতেন। কিন্তু পরবর্তীতে জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন, “আল্লাহর রাসূলﷺএর দুটি নির্দেশের শেষেরটিতে আগুনে পাকানো বস্তু খাবার পর ওযু না ভাঙ্গার কথা বলা হয়েছে।” 
(আবু দাউদ, হাদীস নং: ১৯২)
 অর্থাৎ রান্না করা খাবার খেলে পুনরায় ওযু করার প্রয়োজন নেই।
 
এছাড়াও নাসখ আরো বিভিন্ন প্রকারে হতে পারে। শুধু কুরআনের মধ্যেই তিনটি ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে নাসখ হতে পারে:
 
■ নতুন আইন দ্বারা পূর্বের আইনটি বাতিল হবার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট আয়াতের পাঠও কুরআন থেকে সরিয়ে ফেলা হয়. এ ধরনের নাসখের ঘটনা বিরল। আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেন,
“ওহীসমূহের মধ্যে এ আইনটিও ছিলো যে, কোনো ধাত্রী কোনো শিশুকে দশবার দুধ পান করালে ঐ শিশুর সাথে ধাত্রী ও তার নিকটাত্মীয়দের বিয়ে হারাম হয়ে যায়, যেমনটি ঘটে থাকে আপন মায়ের নিকটাত্মীয়দের ক্ষেত্রে। তারপর এই আইনটির স্থান দখল করে পাঁচবার দুধ পান করানো সংক্রান্ত আইন- যা আল্লাহর রাসূলﷺ এর ইন্তেকালের অল্প কিছুদিন আগেও কুরআনের অন্যান্য আয়াতের সাথে পঠিত হতো। 
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৩৪২১)

আইনটি বলবৎ থাকে, শুধু আয়াতের তিলাওয়াত রহিত হয়ে যায়। পুর্বে কুরআনে বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা ব্যভিচারীদের পাথর মেরে হত্যা করা সংক্রান্ত আয়াত পঠিত হতো। উমার (রাঃ) সে আয়াতটি বর্ণনা করেছেন, “বৃদ্ধ নারী ও পুরুষ ব্যভিচার করলে তাদেরকে নিশ্চিতরূপে পাথর মারবে।” 
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ৪১৯৪)

এ আয়াতটি এখন আর কুরআনে নেই। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশেই তা কুরআন থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে আইনটি কিন্তু রহিত হয়নি। খোলাফায়ে রাশেদীনের সকলেই এই আইনটি প্রয়োগ করেছেন।
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ৪১৯১-৪২২৫

আয়াতের তিলাওয়াত বহাল থাকবে, শুধু আইন রহিত হয়ে যাবে। এই ধরনের নাসখের উদাহরণ হিসেবে দেওয়া যেতে পারে নিম্নোক্ত আয়াতটি,
“আর যখন তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে, তখন স্ত্রীদের ঘর থেকে বের না করে এক বছর পর্যন্ত তাদের খরচের ব্যাপারে ওসিয়ত করে যাবে। অতঃপর যদি সে স্ত্রীরা নিজে থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে সে নারী যদি নিজের ব্যাপারে কোন উত্তম ব্যবস্থা করে, তবে তাতে তোমাদের উপর কোনো পাপ নেই। আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশালী বিজ্ঞতাসম্পন্ন।”
[সূরা বাকারা (২): ২৪০]
 
এ আয়াতটি পরবর্তীতে নিম্নোক্ত আয়াত দ্বারা রহিত হয়,
“আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং নিজেদের স্ত্রীদেরকে ছেড়ে যাবে, তখন সে স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেকে চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখা। তারপর যখন ইদ্দত পূর্ণ করে নেবে, তখন নিজের ব্যাপারে নীতিসঙ্গত ব্যবস্থা নিলে কোনো পাপ নেই। আর তোমাদের যাবতীয় কাজের ব্যাপারেই আল্লাহর অবগতি রয়েছে।”
[সূরা বাকারা (২): ২৩৪] 

(সূরা বাকারার ২৪০ নং আয়াতটি ২৩০ নং আয়াত দ্বারা রহিত হতে দেখে অনেকে ভুল বুঝতে পারেন। ক্রমধারায় ২৪০ নং আয়াত পিছিয়ে তবে আয়াতটি ২৩০ নং আয়াতের পূর্বে নাযিল হয়েছিলো।)

এখানে উল্লেখ্য যে, প্রত্যেক প্রকারের নাসখই স্বয়ং আল্লাহ তা’আলার অনুমোদনেই হয়ে থাকে।
,
,
★★নসখের পিছনে হিকমতঃ
শায়খ রাহমাতুল্লাহ কীরানবী (রহঃ) তাঁর অনবদ্য বই 'ইযহারুল হক'-এ নাসখের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লিখেন,
 
“আল্লাহ জানতেন যে, এই বিধানটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাঁর বান্দাদের মধ্যে প্রচলিত থাকবে এবং এরপর তা স্থগিত হয়ে যাবে। যখন তাঁর জানা সময়টি এসে গেলো, তখন তিনি নতুন বিধান প্রেরণ করলেন। এই নতুন বিধানের মাধ্যমে তিনি পূর্বতন বিধানের আংশিক বা সামগ্রিক পরিবর্তন সাধন করতেন। প্রকৃতপক্ষে, এ হলো পূর্বতন বিধানের কার্যকারিতার সময়সীমা জানিয়ে দেওয়া। তবে যেহেতু আগের বিধানটি দেওয়ার সময় এর সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নি, সেহেতু নতুন বিধানটির আগমনকে আমরা আমাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে বাহ্যত ‘পরিবর্তন’ বলে মনে করি।
 
আল্লাহর সাথে কোনো সৃষ্টির তুলনা হয় না। তাই তুলনার জন্য নয়, শুধু বোঝার জন্য একটা উদাহরণ দেওয়া যায়। আপনি আপনার একজন কর্মচারীকে একটি কর্মের দায়িত্ব প্রদান করলেন। আপনি তার অবস্থা জানেন এবং আপনার মনের মধ্যে সিদ্ধান্ত রয়েছে যে, এক বছর পর্যন্ত সে উক্ত কর্মে নিয়োজিত থাকবে। এরপর আপনি তাকে অন্য কর্মে নিয়োগ করবেন। কিন্তু আপনার এই সিদ্ধান্ত আপনি কারো কাছে প্রকাশ করেননি। যখন নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলো, তখন আপনি আপনার পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুসারে তাকে অন্য কর্মে নিয়োজিত করলেন। এই বিষয়টি উক্ত কর্মচারীর নিকট ‘রহিতকরণ’ বলে গণ্য। অনুরূপভাবে, অন্য সকল মানুষ যাদের নিকট আপনি আপনার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেননি, তারাও বিষয়টিকে ‘পরিবর্তন’ বলে গণ্য করবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এবং আপনার কাছে বিষয়টি ‘পরিবর্তন’ নয়।

( ইযহারুল হক, ১ম খণ্ড– আল্লামা রাহমাতুল্লাহ কীরানবী, পৃষ্ঠা: ৪৬৭-৪৬৮)
,
ড. বিলাল ফিলিপ্স তাঁর বইয়ে নাসখের তিনটি মৌলিক কারণ উল্লেখ করেছেন:
 
■ আসমানী আইনসমূহকে ধীরে ধীরে পূর্ণতার স্তরে নিয়ে যাওয়া।
■ ঈমানদারদের পরীক্ষা করা। কখনো তাদের একটি আইন মানতে বলা হয় আর কিছু কিছু জায়গায় তাদের সে আইন মানতে বারণ করা হয়। এভাবে পরীক্ষা করা হয়, ঈমানদাররা সবসময় আল্লাহর আইন মানতে কতটুকু প্রস্তুত।
■ কখনো কঠিন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ঈমানদারদের পুরষ্কার অর্জনের সুযোগ করে দেওয়া হয়। কারণ- কাঠিন্য যত বেশি, পুরস্কারও বেশি। আবার সহজ আইন প্রণয়ন করে ঈমানদারদের একটু বিশ্রাম প্রদান করে এ বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, আল্লাহ মূলতঃ তাদের কল্যাণই কামনা করেন। যেমন, প্রথম দিকে রাতের নামাজ আদায় করার পর পরের দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার ও সহবাস নিষিদ্ধ ছিলো। এই আইনটি কিছুটা কঠিন। পরবর্তীতে এই আইন রহিত করে রাতের বেলা পানাহার ও স্ত্রীর নিকট গমন করাকে বৈধ করা হয়

কুরআন বোঝার মূলনীতি– ড.বিলাল ফিলিপ্স, পৃষ্ঠা: ২২৮-২২৯
,
মোল্লা জীওয়ান রহ. বলেনঃ

 النسخ في الشريعة عبارة عن إنتهاء الحكم الشرعي المطلق
الذي كان في تقريرأوهامنا استمراره ؛

অর্থ :নাসখ বলা হয় কোন একটি শরয়ী  বিধানের শেষ মেয়াদ বর্ননা করা যে বিধানটি কে ( মেয়াদ উল্লেখ না থাকার কারণে ) মানুষ স্থায়ী মনে করে থাকেন ...!!
فهو تبدیل في حقنا وبيان محض في حق صاحب الشرع كما في المقتول فلا يلزم منه سفاهة الله تعالى؛

অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে একটা বিধান দিয়েছেন, তিনি জানেন যে, এই বিধানের উপর এতো দিন পর্যন্ত আমল চলবে, এর পর দ্বিতীয় বিধান দিবেন ,,,
কিন্তু বান্দাদের জানা না থাকার কারণে তারা ভাবে, দ্বিতীয় বিধানের দ্বারা প্রথম বিধান কে পরিবর্তন করা হয়েছে  ...!!
এর দ্বারা আল্লাহ তায়ালার জ্ঞানের ত্রুটির প্রমাণ করে না, বরং এটা আরো জোরালো ভাবে আল্লাহ তায়ালার প্রজ্ঞাময় হওয়ার প্রমাণ করে..!!
( তাফসীরাতে আহমাদিয় পৃষ্ঠা নং ১৬, ১৭ )

উদাহরণ স্বরূপ :
যেমন রোগীর বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র দেন। তিনি জানেন যে, এই ঔষধ দু'দিন সেবন করার পর রোগীর অবস্থা পরিবর্তন হবে এবং তখন অন্য ব্যবস্থাপত্র দিতে হবে,,
অবস্থার পরিবর্তন জানার ফলেই চিকিৎসক প্রথম দিন এক ওষুধ এবং পরে অন্য ওষুধ দেন...!!
এটা অনেক সময় ডাক্তার সাহেব রোগী কে বলেন না,
কিন্তু রোগীর জানা না থাকার কারণে কোন রোগী যদি মনে করেন যে, এটা ডাক্তার সাহেবের জ্ঞানের ত্রুটির প্রমাণ করে, তাহলে ঐ রোগীকে কি বলা হবে আপনারাই বলেন..!!
(মাআরেফুল ক্বোরআন বাংলা অনুবাদ পৃষ্ঠা ৫৩ - ৫৪)

আল্লাহ বান্দাদেরকে একটি বিধান দেন, সাথে তাঁর জ্ঞানে থাকে যে, আগামীতে উক্ত বিধান পরিবর্তন করে নতুন বিধান দেয়া হবে।
তবে পরিস্থিতির কথা ভেবে, কথাটা বান্দাকে জানাননি, কারণ, জানলে উক্ত বিধান পালনে মানুষ হিসেবে অনাগ্রহ আসতে পারে।

কিন্তু বান্দা বিষয়টি জানেনা। বিধায় সে ভাবতে থাকে, যদি পরিবর্তন করার ইচ্ছাই থেকে থাকে, তাহলে কেন আল্লাহ আগে ভিন্ন বিধান দিয়েছিলেন?


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...