আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
248 views
in পবিত্রতা (Purity) by (4 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম
গত শুক্রবার আছরের সময় চশমা ঠিক করতে গিয়ে হাতে আর নখে সুপার গ্লু লেগেছিল। তাৎক্ষনিক কিছু সময় ঘষাঘষি করার পরও ছুটে নাই। তবে  চামড়ায় যা লেগেছিল তা ১ দিন পর চলে গেছে কিন্তু নখের উপর অল্প কিছু লেগে ছিল তা শুরুর দিন অন্য হাতের নখ দিয়ে ঘষেছিলাম ওঠেনি।
.. এই কয়েকদিনে পবিত্রতা অর্জনের সময় সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়ার পরেও উঠেনি ..  আর  তখন নখটি ছোটো ছিলো বিধায় কাটতেও পারি নি... আজ ৫ দিন এ অবস্থায় ওযু করে নামাজ আদায় করেছি... একবার গোসল ফরজ হয়েছিল সেটাও আদায় করেছি.. এখন এই ৫ দিনের নামাজ আর ফরজ গোসল আবার আদায় করতে হবে???

সাধ্যমতো চেষ্টা বলতে অন্য হাতের আঙুল দিয়ে বেশ কয়েকবার ঘষে তুলে ফেলার চেষ্টা করেছি.. অার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সময় কিছু সময় ঘষেছি.. এতোটুকু..

এই চেষ্টার জন্য মাফ পাবো নাকি এই কয়েকদিনের সমস্ত নামাজ গোসল আবার আদায় করতে হবে।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ফরয গোসলের ক্ষেত্রে সমস্ত শরীর একবার ধৌত করা ফরয।সুতরাং পানি পৌছতে বাধা দেয় এমন কোনো জিনিষ শরীরের সাথে লেগে থাকতে পারবে না।বরং এমন জিনিষকে শরীর থেকে পৃথক করা বা পৃথক রাখা ফরয।মারাক্বিল ফালাহ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
ولا بد من زوال ما يمنع من وصول الماء للجسد كشمع وعجين
শরীরে পানি পৌছতে বাধা দানকারী জিনিষ শরীর থেকে পৃথক রাখতে হবে।যেমন- মোম,বা মাখানো আটা। (মারাক্বিল ফালাহ-১/৪৫)

ঠিক তেমনি হাদাছে আসগর থেকে পবিত্রতা অর্জনের উদ্দেশ্যে ওজুর ক্ষেত্রে ওজুর সমস্ত অঙ্গকে ধোত করা ফরয।এবং পানি পৌছতে বাধা প্রদাণ কারী সকল জিনিষকে শরীর থেকে পৃথক রাখা জরুরী।

فِي فَتَاوَى مَا وَرَاءَ النَّهْرِ إنْ بَقِيَ مِنْ مَوْضِعِ الْوُضُوءِ قَدْرُ رَأْسِ إبْرَةٍ أَوْ لَزِقَ بِأَصْلِ ظُفْرِهِ طِينٌ يَابِسٌ أَوْ رَطْبٌ لَمْ يَجُزْ وَإِنْ تَلَطَّخَ يَدُهُ بِخَمِيرٍ أَوْ حِنَّاءٍ جَازَ
যদি ওজুর অঙ্গ সমূহের মধ্য থেকে সুই বরাবর কোনো অংশতে পানি না পৌছে,অথবা নকের মূল অংশের সাথে শুকনা বা ভিজা মাঠি লেগে এঠে যায়,তাহলে ওযু বিশুদ্ধ হবে না।কেউ যদি মেহিদি বা খামির(এক প্রকার রঙ্গিলা গাস) দ্বারা হাতকে রঙ্গিয়ে দেয়,তাহলে তার ওজু হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪)

গোসলের ক্ষেত্রে সমস্ত শরীরে পানি পৌছানো ফরয,এ মূলনীতির আলোকে সম্পূরক হিসেবে একটি মাস'আলা ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে এভাবে বর্ণিত রয়েছে-
وَفِي الْجَامِعِ الصَّغِيرِ سُئِلَ أَبُو الْقَاسِمِ عَنْ وَافِرِ الظُّفُرِ الَّذِي يَبْقَى فِي أَظْفَارِهِ الدَّرَنُ أَوْ الَّذِي يَعْمَلُ عَمَلَ الطِّينِ أَوْ الْمَرْأَةِ الَّتِي صَبَغَتْ أُصْبُعَهَا بِالْحِنَّاءِ، أَوْ الصَّرَّامِ، أَوْ الصَّبَّاغِ قَالَ كُلُّ ذَلِكَ سَوَاءٌ يُجْزِيهِمْ وُضُوءُهُمْ إذْ لَا يُسْتَطَاعُ الِامْتِنَاعُ عَنْهُ إلَّا بِحَرَج-
আবুল কাসিম রাহ কে লম্বাটে নক বিশিষ্ট ব্যক্তির ওজু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো?
-যে নকের মধ্যে ময়লা জমে গেছে বা যে ব্যক্তি মাঠির কাজে ব্যস্ত থাকে, বা যে মহিলা নিজ হাতকে মেহদী দ্বারা রঙ্গিয়েছে,অথবা চামড়া বিক্রেতা বা পেইন্টার- উপরুক্ত ব্যক্তির নকের কোনে কোনোকিছু আটকে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। তখন আবুল কাসিম রাহ জবাবে বলেছিলেন, প্রত্যেকরই ওজু হবে।কেননা এত্থেকে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই বোন!
শরীরে এমন কিছু লেগে থাকলে যা ওজু গোসলের সময় শরীরে পানি পৌছতে বাধা প্রদাণ করে।শরীরে এমন জিনিষ লেগে থাকাবস্থায় ওজু-গোসল কিছুই হবে না। বিশেষ প্রয়োজনে মূল নকের পরে অতিরিক্ত নক সম্পর্কে শরীয়তে কিছুটা শীতিলতা রয়েছে।যা আমরা ইতিপূর্বে দেখেছি। বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/1024

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি  নখের মূল অংশে সুপারগ্লোব থাকে তাহলে অযু হবে না। কিন্তু যদি মূল নখের অতিরিক্ত অংশে সুপারগ্লোব থাকে, তাহলে অজু হবে। কিন্তু যথাসাধ্য চেষ্টা করার পরও যদি এই সুপারগ্লোব না উঠে, তাহলে এই সুপারগ্লোব থাকাবস্থায়ও অজুতে কোনো সমস্যা হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...