উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
,
শরীয়তের বিধান মোতাবেক ব্যাভিচারী, ধর্ষনের ক্ষেত্রে ধর্ষক এর শাস্তি. বিচার একই।
ধর্ষন, ব্যভিচারের কারণে আল্লাহর লানত অবর্তীণ হয়। ইসলামে ধর্ষন ব্যভিচার হারাম ও জঘন্য অপরাধ।
অবিবাহতি কেহ যদি ব্যাভিচার করে,তাহলে তাকে ১০০ টি বেত্রাঘাত করা হবে।
,
আর বিবাহিত ব্যক্তি ধর্ষন, ব্যভিচার করলে তার কি শাস্তি হবে তা কুরআন এবং হাদিসে সুস্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
لا تقربوا الزني إنه كان فاحشة وساء سبيلا
‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হইও না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ।’
(সুরা বনি ইসরাঈল : ৩৪
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
الزانية والزاني فاجلدوا كل واحد منهما مائة جلدة
‘ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণী উভয়কে একশ’ ঘা করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকরী করবে এদের প্রতি দয়া যেন তোমাদের অভিভূত না করে। যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী হয়ে থাক। ঈমানদারদের একটি দল যেন এদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।’ (সুরা নুর : আয়াত ০২)
,
إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ أَنَّهُمَا أَخْبَرَاهُ أَنَّ رَجُلَيْنِ اخْتَصَمَا إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَحَدُهُمَا اقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ وَقَالَ الْآخَرُ وَهُوَ أَفْقَهُهُمَا أَجَلْ يَا رَسُولَ اللهِ فَاقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ وَأْذَنْ لِي أَنْ أَتَكَلَّمَ قَالَ تَكَلَّمْ قَالَ إِنَّ ابْنِي كَانَ عَسِيفًا عَلَى هَذَا قَالَ مَالِكٌ وَالْعَسِيفُ الأَجِيرُ زَنَى بِامْرَأَتِهِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ عَلَى ابْنِي الرَّجْمَ فَافْتَدَيْتُ مِنْهُ بِمِائَةِ شَاةٍ وَجَارِيَةٍ لِي ثُمَّ إِنِّي سَأَلْتُ أَهْلَ الْعِلْمِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ مَا عَلَى ابْنِي جَلْدُ مِائَةٍ وَتَغْرِيبُ عَامٍ وَإِنَّمَا الرَّجْمُ عَلَى امْرَأَتِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَا وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لأقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللهِ أَمَّا غَنَمُكَ وَجَارِيَتُكَ فَرَدٌّ عَلَيْكَ وَجَلَدَ ابْنَهُ مِائَةً وَغَرَّبَهُ عَامًا وَأُمِرَ أُنَيْسٌ الأَسْلَمِيُّ أَنْ يَأْتِيَ امْرَأَةَ الْآخَرِ فَإِنْ اعْتَرَفَتْ رَجَمَهَا فَاعْتَرَفَتْ فَرَجَمَهَا
আবূ হুরাইরাহ ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁরা বলেছেন, একবার দু’ লোক ঝগড়া করতে করতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এলো। তাদের একজন বলল, আল্লাহর কিতাব মুতাবিক আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দিন। দু’জনের মধ্যে (বেশি) বুদ্ধিমান অন্য লোকটি বলল, হ্যাঁ। হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফয়সালা করে দিন। আর আমাকে কিছু বলার অনুমতি দিন। তিনি বললেনঃ বল। লোকটি বলল, আমার পুত্র ও লোকটির কাছে চাকর হিসাবে ছিল। (মালিক বলেন, الْعَسِيفُ শব্দের অর্থ চাকর) আমার পুত্র এর স্ত্রীর সঙ্গে যেনা করেছে। লোকেরা বলেছে যে, আমার পুত্রের (শাস্তি) রজম হবে। তাই আমি একশ’ বক্রী ও একটি বাঁদী নিয়ে তার ফিদইয়া দিয়েছি। এরপর আমি আলিমদের নিকট এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছি। তাঁরা আমাকে জানালেন যে, আমার পুত্রের একশ’ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন হবে। আর রজম হবে এর স্ত্রীর। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি তোমাদের উভয়ের মধ্যে অবশ্যই আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফয়সালা করে দেব। তোমার বক্রী ও বাঁদী তোমাকেই ফিরিয়ে দেয়া হবে। তিনি তাঁর পুত্রকে একশ’ বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য নির্বাসিত করলেন। আর উনায়ক আসলামীকে আদেশ দেয়া হল অন্য লোকটির স্ত্রীর কাছে যাওয়ার জন্য। সে যদি (ব্যভিচার) স্বীকার করে তবে তাকে রজম করতে। সে তা স্বীকার করল, সুতরাং তাকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করা হল। [বুখারী ৬৬৩৩,২৩১৪, ২৩১৫] ইসলামী ফাউন্ডেশন- ৬১৭৯)
,
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الْأَنْبَارِيُّ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ نُعَيْمِ بْنِ هَزَّالٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: كَانَ مَاعِزُ بْنُ مَالِكٍ يَتِيمًا فِي حِجْرِ أَبِي، فَأَصَابَ جَارِيَةً مِنَ الْحَيِّ، فَقَالَ لَهُ أَبِي: ائْتِ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَخْبِرْهُ بِمَا صَنَعْتَ لَعَلَّهُ يَسْتَغْفِرُ لَكَ، وَإِنَّمَا يُرِيدُ بِذَلِكَ رَجَاءَ أَنْ يَكُونَ لَهُ مَخْرَجًا، فَأَتَاهُ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي زَنَيْتُ فَأَقِمْ عَلَيَّ كِتَابَ اللَّهِ، فَأَعْرَضَ عَنْهُ، فَعَادَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي زَنَيْتُ فَأَقِمْ عَلَيَّ كِتَابَ اللَّهِ، فَأَعْرَضَ عَنْهُ فَعَادَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي زَنَيْتُ، فَأَقِمْ عَلَيَّ كِتَابَ اللَّهِ، حَتَّى قَالَهَا أَرْبَعَ مِرَارٍ، قَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّكَ قَدْ قُلْتَهَا أَرْبَعَ مَرَّاتٍ، فَبِمَنْ؟ قَالَ: بِفُلَانَةٍ، فَقَالَ: هَلْ ضَاجَعْتَهَا؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: هَلْ بَاشَرْتَهَا؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: هَلْ جَامَعْتَهَا؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: فَأَمَرَ بِهِ أَنْ يُرْجَمَ، فَأُخْرِجَ بِهِ إِلَى الْحَرَّةِ، فَلَمَّا رُجِمَ فَوَجَدَ مَسَّ الْحِجَارَةِ جَزِعَ فَخَرَجَ يَشْتَدُّ، فَلَقِيَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُنَيْسٍ وَقَدْ عَجَزَ أَصْحَابُهُ، فَنَزَعَ لَهُ بِوَظِيفِ بَعِيرٍ فَرَمَاهُ بِهِ فَقَتَلَهُ، ثُمَّ أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ، فَقَالَ: هَلَّا تَرَكْتُمُوهُ لَعَلَّهُ أَنْ يَتُوبَ، فَيَتُوبَ اللَّهُ عَلَيْهِ صحيح (دون قوله لعله أن ...)
ইয়াযীদ ইবনু সু‘আইম ইবনু হায্যাল (রহঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, মাঈয ইবনু মালিক ইয়াতিম ছিলো। সে আমার পিতার তত্ত্বাবধানে ছিলো। সে এক গোত্রের জনৈক বাঁদীর সঙ্গে সঙ্গম করে। আমার পিতা তাকে বলেন, তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যাও এবং তাঁকে তোমার কৃতকর্মের ব্যাপারে জানাও। তিনি হয় তো তোমার জন্য ক্ষমা চাইবেন। বস্তুতঃ এর দ্বারা তিনি তার অপরাধ থেকে মুক্তির সন্ধানই চেয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর সে তাঁর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তো যেনা করেছি; সুতরাং আমার উপর আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তি বাস্তবায়িত করুন। তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। সে পুনরায় বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তো যেনা করেছি; আমার উপর আল্লাহর কিতাব বাস্তবায়িত করুন। তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। সে আবারো বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তো যেনা করেছি; আমার উপর আল্লাহর কিতাব বাস্তবায়িত করুন। একথা সে চারবার বলার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তো চারবার একথা বললেন, তা কার সঙ্গে? সে বললো, অমুক নারীর সঙ্গে।
তিনি প্রশ্ন করলেনঃ তুমি কি তার সঙ্গে শুয়েছ? সে বললো, হ্যাঁ। তিনি আবারো প্রশ্ন করলেনঃ তুমি কি তার শরীরে শরীর মিশিয়েছ? সে বললো, হ্যাঁ। তিনি পুনরায় প্রশ্ন করলেনঃ তুমি কি তার সঙ্গে সঙ্গম করেছো? সে বললো, হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তাকে আল-হাররা এলাকায় নিয়ে যাওয়া হলো। যখন তাকে পাথর মারা শুরু হলো, সে আঘাতের চোটে আতঙ্কিত হলো এবং দ্রুত দৌঁড়াতে লাগলো। আব্দুল্লাহ ইবনু উনাইস (রাঃ) এমতাবস্থায় তার সাক্ষাৎ পেলেন যে, তাকে পাথর মারার জন্য নিয়োজিত ব্যক্তিগণ তাকে ধরতে অপারগ হলো। তিনি উটের সামনের পায়ের হাড় তুলে তার দিকে নিক্ষেপ করেন এবং তাতে সে নিহত হয়। অতঃপর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে এ ঘটনা ব্যক্ত করেন। তিনি বললেনঃ তোমরা তাকে ছেড়ে দিলে না কেন? সে হয় তো তাওবাহ করতো, আর আল্লাহ তার তাওবাহ কবূল করতেন।
সহীহঃ এ কথাটি বাদেঃ (... لعله أن)
(আবু দাউদ ৪৪১৯)
,
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ: رَأَيْتُ مَاعِزَ بْنَ مَالِكٍ حِينَ جِيءَ بِهِ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، رَجُلًا قَصِيرًا، أَعْضَلَ، لَيْسَ عَلَيْهِ رِدَاءٌ، فَشَهِدَ عَلَى نَفْسِهِ أَرْبَعَ مَرَّاتٍ أَنَّهُ قَدْ زَنَى، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَلَعَلَّكَ قَبَّلْتَهَا؟ قَالَ: لَا، وَاللَّهِ إِنَّهُ قَدْ زَنَى الْآخِرُ، قَالَ: فَرَجَمَهُ، ثُمَّ خَطَبَ، فَقَالَ: أَلَا كُلَّمَا نَفَرْنَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، خَلَفَ أَحَدُهُمْ لَهُ نَبِيبٌ كَنَبِيبِ التَّيْسِ يَمْنَحُ إِحْدَاهُنَّ الْكُثْبَةَ، أَمَا إِنَّ اللَّهَ إِنْ يُمَكِّنِّي مِنْ أَحَدٍ مِنْهُمْ إِلَّا نَكَلْتُهُ عَنْهُنّ صحيح
জাবির ইবনু সামুরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মাঈয ইবনু মালিককে দেখেছি, যখন তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হাযির করা হয়। সে ছিলো বেটে, মাংসল ও বলিষ্ঠ গড়নের লোক, তার দেহে কোনো চাঁদর ছিলো না। সে নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য দিয়ে বলে যে, সে যেনা করেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সম্ভবত তুমি তাকে চুমু দিয়েছ। সে বললো, না, আল্লাহর কসম! এ দুর্ভাগা নিশ্চয়ই যেনা করেছে। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তাকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করা হয়। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ভাষন দিতে গিয়ে বলেনঃ জেনে রাখো! আমরা যখনই আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে যাই, আর এদিকে যদি তাদের কেউ পিছনে গিয়ে পাঠা ছাগলের ন্যায় ভ্যাভ্যা করে এবং কোনো নারীকে যৎকিঞ্চিৎ বীর্য দান করে, জেনে রাখো! আল্লাহ যদি আমাকে তাদের কারো উপর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা দেন, তবে তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে নারীদের থেকে প্রতিহত করবো।
(আবু দাউদ ৪৪২২)
,
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِمَاعِزِ بْنِ مَالِكٍ: أَحَقٌّ مَا بَلَغَنِي عَنْكَ؟ قَالَ: وَمَا بَلَغَكَ عَنِّي؟ قَالَ: بَلَغَنِي عَنْكَ أَنَّكَ وَقَعْتَ عَلَى جَارِيَةِ بَنِي فُلَانٍ؟ قَالَ: نَعَمْ، فَشَهِدَ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ، فَأَمَرَ بِهِ فَرُجِمَ صحيح
,
ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাঈয ইবনু মালিককে ডেকে বললেনঃ তোমার সম্বন্ধে যে সংবাদ আমার কানে পৌঁছেছে তা কি সত্য? সে বললো, আমার সম্বন্ধে আপনার নিকট কিরূপ সংবাদ পৌঁছেছে? তিনি বললেনঃ তুমি নাকি অমুক গোত্রের জনৈক বাঁদীর সঙ্গে যেনা করেছো? সে বললো, হ্যাঁ। অতঃপর সে চারবার একথার স্বীকারোক্তি করে। সুতরাং তিনি তাকে পাথর নিক্ষেপে হত্যা করার আদেশ দেন। অতঃপর তাকে পাথর মারা হয়।
,
(আবু দাউদ ৪৪২৫)
,
হজরত ওয়াইল ইবনে হুজর (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে এক মহিলাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হলে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে কোনোরূপ শাস্তি দেননি, তবে ধর্ষককে হদের (কোরআন-হাদিসে বহু অপরাধের ওপর শাস্তির কথা আছে। এগুলোর মধ্যে যেসব শাস্তির পরিমাণ ও পদ্ধতি কোরআন-হাদিসে সুনির্ধারিত তাকে- হদ বলে) শাস্তি দেন। ’ -ইবনে মাজাহ: ২৫৯৮
★সরকারি মালিকানাধীন এক গোলাম গণিমতের পঞ্চমাংশে পাওয়া এক দাসির সঙ্গে জবরদস্তি করে ব্যভিচার (ধর্ষণ) করে। এতে তার কুমারিত্ব নষ্ট হয়ে যায়। হজরত উমর (রা.) ওই গোলামকে কশাঘাত করেন এবং নির্বাসন দেন। কিন্তু দাসিটিকে সে বাধ্য করেছিল বলে তাকে কষাঘাত করেননি। ’ –সহিহ বোখারি: ৬৯৪৯
,
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ، يَقُولُ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَهُوَ جَالِسٌ عَلَى مِنْبَرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللَّهَ قَدْ بَعَثَ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم بِالْحَقِّ وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الْكِتَابَ فَكَانَ مِمَّا أُنْزِلَ عَلَيْهِ آيَةُ الرَّجْمِ قَرَأْنَاهَا وَوَعَيْنَاهَا وَعَقَلْنَاهَا فَرَجَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَرَجَمْنَا بَعْدَهُ فَأَخْشَى إِنْ طَالَ بِالنَّاسِ زَمَانٌ أَنْ يَقُولَ قَائِلٌ مَا نَجِدُ الرَّجْمَ فِي كِتَابِ اللَّهِ فَيَضِلُّوا بِتَرْكِ فَرِيضَةٍ أَنْزَلَهَا اللَّهُ وَإِنَّ الرَّجْمَ فِي كِتَابِ اللَّهِ حَقٌّ عَلَى مَنْ زَنَى إِذَا أَحْصَنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ إِذَا قَامَتِ الْبَيِّنَةُ أَوْ كَانَ الْحَبَلُ أَوْ الاِعْتِرَافُ .
আবূ তাহির ও হারমালাহ্ ইবনু ইয়াহইয়াহ্ (রহঃ) ..... 'আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, "উমর ইবনু খাত্তাব (রাযিঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বারের উপর বসা অবস্থায় বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সত্য দীনসহ পাঠিয়েছেন এবং তার উপর কিতাব (কুরআন) অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহর নাযিলকৃত বিষয়ের মধ্যে آيَةُ الرَّجْمِ (ব্যভিচারের জন্য পাথর নিক্ষেপের আয়াত) রয়েছে। তা আমরা পাঠ করেছি, স্মরণ রেখেছি এবং হৃদয়ঙ্গম করেছি। সুতরাং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যভিচারের জন্য রজম করার হুকুম বাস্তবায়ন করেছেন। তার পরবর্তী সময়ে আমরাও (ব্যভিচারের জন্য) রজমের হুকুম বাস্তবায়িত করেছি। আমি ভয় করছি যে, দীর্ঘদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর কেউ এ কথা হয়তো বলবে যে, আমরা আল্লাহর কিতাবে (ব্যভিচারের শাস্তি) রজমের নির্দেশ পাই না। তখন আল্লাহ কর্তৃক নাযিলকৃত এ ফরয কাজটি পরিত্যাগ করে তারা মানুষদেরকে পথভ্রষ্ট করে ফেলবে। নিশ্চয়ই আল্লাহর কিতাবে বিবাহিত নর-নারীর ব্যভিচারের শাস্তি رجم (পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা) এর হুকুম সাব্যস্ত। যখন সাক্ষ্য দ্বারা তা প্রমাণিত হয়, কিংবা গর্ভবতী হয়, অথবা সে নিজে স্বীকার করে।
(মুসলিম ৪৩১০ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪২৭১, ইসলামিক সেন্টার ৪২৭১)
★★অনেক ইসলামী স্কলারদের মত হলোঃ
‘ধর্ষণের অপরাধে ব্যভিচারের শাস্তি প্রয়োগের পাশাপাশি ‘মুহারাবা’র শাস্তিও প্রয়োগ করতে হবে।
কারন ধর্ষনের ক্ষেত্রে ২ টি বিষয় পাওয়া যায়,
*যেনা, ব্যাভিচার
*বল প্রয়োগে সম্ভ্রম লুণ্ঠন।
প্রথমটার তারনে শাস্তির কথা উপরে উল্লেখ হয়েছে।
২য় টার কারনে সেই সমস্ত ইসলামী স্কলারগন মুরাবাহার শাস্তি আরোপের কথা বলেন।
মুহারাবা কি?‘মুহারাবা’ হলো অস্ত্র দেখিয়ে বা অস্ত্র ছাড়াই ভীতি প্রদর্শন করে ডাকাতি করা কিংবা লুণ্ঠন করা। এক কথায় ‘মুহারাবা’ হলো পৃথিবীতে অনাচার সৃষ্টি, লুণ্ঠন, নিরাপত্তা বিঘ্নিতকরণ, ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা ইত্যাদি।
এ সব অপরাধের শাস্তি হিসেবে আল্লাহ ঘোষণা করেন-‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে-
>> তাদেরকে হত্যা করা হবে
অথবা>> শূলীতে চড়ানো হবে
অথবা>> তাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে (ডান হাত বাম পা/বাম হাত ডান পা) কেটে দেয়া হবে
অথবা>> দেশ থেকে বহিষ্কার তথা নির্বাসিত করা হবে।এটি হল তাদের জন্য দুনিয়ার লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৩৩)
এ আয়াতের আলোকে বিচারক ধর্ষণকারীকে ব্যভিচারের শাস্তির সঙ্গে সঙ্গে উল্লেখিত ৪ ধরনের যে কোনো শাস্তি প্রয়োগ করতে পারবে।