আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
132 views
in সালাত(Prayer) by (22 points)
সামনে পরীক্ষা এইজন্য আম্মু মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে না করে।মেসে থাকি খাবার খাওয়ার জন্য বাইরে যাওয়া লাগে আর যেখানে খাইতে যাই তা মসজিদ থেকে অনেক দূরে।তখন না করে না কিন্তু নামাজের সময় না করে বলে যে বাসায় পড়ো।মানে অন্য কোন কিছু তে তাদের না নেই শুধু নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার ক্ষেত্রে এমন করে।ভর্তি পরীক্ষার পর আব্বুও মসজিদে যেতে বাধা দিসে, কারণ তখনও ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট হয়নি আর এইজন্য মানসম্মানের ভয়ে মসজিদে যেতে বাধা দেয়। এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি..?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


ফরয নামাযের ক্ষেত্রে পুরুষের জন্য শরীয়তের বিধান হচ্ছে, পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করা। কোনো শরয়ী ওযর ব্যতীত মসজিদের জামাত তরক করা জায়েয নেই।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন-

لَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنِ الصَّلَاةِ إِلَّا مُنَافِقٌ قَدْ عُلِمَ نِفَاقُهُ، أَوْ مَرِيضٌ، إِنْ كَانَ الْمَرِيضُ لَيَمْشِي بَيْنَ رَجُلَيْنِ حَتَّى يَأْتِيَ الصَّلَاةِ.

আমাদের অবস্থা এমন ছিল যে, নামায (-এর জামাত) থেকে পিছিয়ে থাকত কেবল এমন মুনাফিক, যার নিফাক স্পষ্ট ছিল অথবা অসুস্থ ব্যক্তি। তবে আমরা অসুস্থদেরকেও দেখতাম, দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে তারা নামাযের জন্য চলে আসত। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৫

হযরত ইবনে মাসউদ রা. আরো বলেন-
إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَّمَنَا سُنَنَ الْهُدَى، وَإِنَّ مِنْ سُنَنِ الْهُدَى الصَّلَاةَ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يُؤَذَّنُ فِيهِ.

নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হেদায়েতের তরীকাগুলো শিখিয়েছেন। হেদায়েতের এই তরীকাসমূহের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যেখানে আযান হয় সেখানে নামায আদায় করা। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৫

আরো জানুনঃ  
,
আদ্দুর রুল মুখতার গ্রন্থে আছেঃ
 
(فَلَا تَجِبُ عَلَى مَرِيضٍ وَمُقْعَدٍ وَزَمِنٍ وَمَقْطُوعِ يَدٍ وَرِجْلٍ مِنْ خِلَافٍ) فَقَطْ، ذَكَرَهُ الْحَدَّادِيُّ (وَمَفْلُوجٍ وَشَيْخٍ كَبِيرٍ عَاجِزٍ وَأَعْمَى) وَإِنْ وَجَدَ قَائِدًا (وَلَا عَلَى مَنْ حَالَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا مَطَرٌ وَطِينٌ وَبَرْدٌ شَدِيدٌ وَظُلْمَةٌ كَذَلِكَ) وَرِيحٌ لَيْلًا لَا نَهَارًا، وَخَوْفٌ عَلَى مَالِهِ، أَوْ مِنْ غَرِيمٍ أَوْ ظَالِمٍ، أَوْ مُدَافَعَةُ أَحَدِ الْأَخْبَثَيْنِ، وَإِرَادَةُ سَفَرٍ، وَقِيَامُهُ بِمَرِيضٍ، وَحُضُورُ طَعَامٍ (تَتَوَقَّهُ) نَفْسُهُ ذَكَرَهُ الْحَدَّادِيُّ، وَكَذَا اشْتِغَالُهُ بِالْفِقْهِ لَا بِغَيْرِهِ، كَذَا جَزَمَ بِهِ الْبَاقَانِيُّ تَبَعًا لِلْبَهْنَسِيِّ: أَيْ إلَّا إذَا وَاظَبَ تَكَاسُلًا فَلَا يُعْذَرُ،

সুতরাং অসুস্থ ব্যক্তি,বিকলাঙ্গ, দীর্ঘদিন যাবৎ রোগাক্রান্ত, হাত বা পার কোনো একটি কর্তিত ব্যক্তির উপর জামাত ওয়াজিব নয়।এগুলো হাদ্দাদি রাহ উল্লেখ করেছেন।ঠিক তেমনি শরীরের কোনো সাইট অচেতন ব্যক্তি এবং বয়োঃবৃদ্ধ অক্ষম ও অন্ধ ব্যক্তির উপর জামাত ওয়াজিব নয়।যদিও তাদেরকে মসজিদে নিয়ে যাওয়ার মত লোক থাকুক না কেন।ঠিক তেমনি বৃষ্টি, কাদা,কনকনে শীত,বা অন্ধকার যদি কোনো মানুষকে মসজিদে যেতে বাধা প্রদাণ করে তাহলে তখন দাদের উপরও জামাত ওয়াজিব নয়।রাত্রে প্রবল বাতাশ থাকলে ও জামাত ওয়াজিব নয়।নিজের মালে ক্ষতির আশংকা থাকলে, বা নিজে ঋণী থাকলে(এমন ঋণ যা পরিশোধের সামর্থ্য বর্তমানে নেই)বা জালিমের ভয় থাকলে কিংবা দুই ক্ষতির মধ্যে বড় ক্ষতিকে প্রতিহত করতে জামাত তরক করা যাবে।কেননা তখন তাদের উপর জামাত ওয়াজিব নয়।সফরের ইচ্ছা করলে বা অসুস্থ ব্যক্তির সেবার কারণে বা এমন খাদ্যর উপস্থিতিতে যার চাহিদা বর্তমানে অন্তরে রয়েছে,জামাত তরক করা যাবে।এগুলো হাদ্দাদি রাহ উল্লেখ করেছেন।

ঠিকতেমনি ফিকহের সাথে মশগুল থাকার কারণে জামাত তরক করা যাবে।তবে যদি কোনো মুফতী অলসতা বসত এটাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলেন,তবে তখন জমাতকর তরক করা জায়েয হবে না।(আদ্দুর্রুল মুখতার-১/৫৫৫)

আরো জানুনঃ 
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনাকে মসজিদে গিয়েই জামা'আতের সাথে নামাজ আদায় করতে হবে।
বাসায় নামাজ আদায় জায়েজ হবেনা।

এক্ষেত্রে বাবা মার নিষেধাজ্ঞা মানা যাবেনা,কেননা শরীয়তের খেলাফ বাবা মার কোনো আদেশ মানা বৈধ নয়।

হাদীস শরীফে এসেছে,রাসূলুল্লাহ সাঃবলেন-
لا طاعة في معصية إنما الطاعة في المعروف

গোনাহের কাজে কারো বশ্যতা স্বীকার করা যাবে না।(শরীয়ত যাদের বিধিনিষেধ মেনে চলার আদেশ দিয়েছে তাদের) আদেশ শুধুমাত্র বৈধ ও নেকীর কাজে মানা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

অন্য এক হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,
لَا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ

আল্লাহর অবাধ্যতায় কারো বিধিনিষেধ কে মান্য করা যাবে না।(মুসনাদে আহমাদ-১০৯৮)

আরো জানতে ভিজিট করুন: https://www.ifatwa.info/1707


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 590 views
0 votes
1 answer 340 views
0 votes
1 answer 158 views
...