আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
150 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (40 points)
reshown by

আসসালামু আলাইকুম... সম্প্রতি ফেসবুকে দেখলাম এক বোন তার নবজাতক কন্যার নাভী ও প্রথম চুল ফেলে না দিয়ে রেখে দিয়েছিলেন।এখন তিনি সেটাকে স্মৃতি হিসেবে এমন ভাবে সংরক্ষণ করেছেন যেভাবে এটা কখনোই নষ্ট হবেনা এবং এটা তার পরের প্রজন্ম সেটা অলংকার হিসেবে ব্যবহার করবে।

 

সে তার কন্যা সন্তানের চুল এক ধরনের স্বচ্ছ ঘন আঠার ভিতরে কিছু শুকনো ফুল দিয়ে তারপর শুকিয়ে গলার লকেট  বানান। এই লকেটটি দেখতে একদম কাচের মত স্বচ্ছ, ভিতরে চুল ও শুকনো নাভী আছে সেটা বোঝা যাচ্ছে। পার্থক্য শুধু কাচ ভেঙ্গে গেলেও রেসিন (Resin) লকেটটি ভাঙ্গবে না। 

 

১. এভাবে কি কারো চুল লকেটে স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণ করা যাবে যেখানে চুল স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে?  চুল পুতে না ফেলে সংরক্ষণ কি জায়েজ?

 

২. এই বোন থেকে অনেক বোন অনুপ্রাণিত হয়ে এই কাজ করতে চাচ্ছে। এক বোন তার মরহুম মায়ের চুল এভাবে রেসিনের লকেটে স্মৃতি হিসেবে বসাতে চাচ্ছে।  এটা কি জায়েজ? 

৩.মেয়েদের চুল সতরের অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু চুল পড়ে গেলে সেটা কি সতরের অন্তর্ভুক্ত থাকবে?তখন সেটা রেখে দেয়া যাবে?

 

৪. কোন পুরুষের চুল এভাবে লকেট বা চাবির রিং আকারে স্মৃতি হিসেবে রাখা জায়েজ হবে? 

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


মহান আল্লাহ মানুষকে সম্মানিত করে সৃষ্টি করেছেন, তাদের অঙ্গগুলোও সম্মানিত। তাই তাদের অঙ্গের সঙ্গেও এমন ব্যবহার করা যাবে না, যা তাদের সম্মান হানি করে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আর আমি মানব সন্তানকে সম্মানিত করেছি...।’ (সুরা ইসরা, আয়াত : ৭০)

হজরত মিল বিনতে মিশরাহ আল আশআরি থেকে বর্ণিত, তিনি তাঁর পিতা মিশরাহ [যিনি রাসুল (সা.)-এর সাহাবি ছিলেন]-কে দেখেছেন যে তিনি নখ কাটার পর তা দাফন করে ফেলতেন। তিনি বলতেন, তিনি রাসুল (সা.)-কে এমন করতে দেখেছেন। [আত তারিখুল কুবরা (ইমাম বুখারি) : ৮/৪৫]

ইমাম আহমদ (রহ.)-কে এক ব্যক্তি কর্তিত চুল ও নখের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এগুলো কি দাফন করব নাকি ফেলে দেব?’ তিনি বলেন, ‘দাফন করে ফেলো।’ লোকটি বলল, ‘আপনি এ ব্যাপারে কিছু পেয়েছেন?’ তিনি বলেন, ‘ইবনে ওমর (রা.) এগুলো দাফন করে ফেলতেন।’ (আল মুগনি, ইবনে কুদামা : ১/১১০)

(১.২)
ফাতাওয়ায়ে শামিতে এসেছেঃ

قال العلامة الحصکفي رحمه الله تعالی: "و کل عضو لا یجوز النظر إلیه قبل الانفصال، لا یجوز بعده و لا بعد الموت، کشعر عانة و شعر رأسها". ( الشامیة ٦ / ٣٧١ )

সারমর্মঃ
শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পূর্বে যে সমস্ত অঙ্গের দিকে নজর দেওয়া জায়েজ নেই, সে সমস্ত অঙ্গ শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পর,মারা যাওয়ার পরেও তার দিকে নজর দেওয়া জায়েজ নেই।
যেমন মাথার চুল,নাভির তলদেশের চুল।

★সুতরাং এটি যেহেতু গায়রে মাহরামের দেখার আশংকা আছে,এবং এতে যেহেতু কোনো এক সময় সেই মানুষের অঙ্গের অসম্মানীরও সম্ভাবনা রয়েছে,  তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতটি জায়েজ নেই।    

(০৩)
বিষয়টি মতবিরোধ পূর্ণ মাসয়ালাঃ   

اتَّفَقَ الْفُقَهَاءُ عَلَى عَدَمِ جَوَازِ النَّظَرِ إِلَى شَعْرِ الْمَرْأَةِ الأَْجْنَبِيَّةِ، كَمَا لَا يَجُوزُ لَهَا إِبْدَاؤُهُ لِلأَْجَانِبِ عَنْهَا. وَذَهَبَ الْحَنَفِيَّةُ وَالشَّافِعِيَّةُ إِلَى الْقَوْل بِعَدَمِ جَوَازِ النَّظَرِ إِلَيْهِ وَإِنْ كَانَ مُنْفَصِلاً» - «الموسوعة الفقهية الكويتية» (26/ 107)

মহিলাদের মাথার সাথে মিলিত চুল সতরের অন্তর্ভুক্ত এ সম্পর্কে সমস্ত ফুকাহা একমত। মাথা থেকে পৃথক চুলের ব্যাপরে হানাফি এবং শাফেয়ী মাযহাবের ফুকাহাগণ বলেন যে, এ চুলের দিকেও পরপুরুষ দৃষ্টি দিতে পারবেনা। 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

https://ifatwa.info/15516/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ 
মাথা আঁচড়ানোর পর যে চুল পাওয়া যায় সেটা পর্দার বিধানের অন্তর্ভুক্ত নয়। 
মাথা আঁচড়ানোর পর যে চুল পাওয়া যায় সেটা মাটিতে পুঁতে ফেলা ওয়াজিব। কেননা এটা একজন মানুষের অংশ যা সম্মানি। সুতরাং সেটাকে দাফন করতে হবেই। 

তবে অনেক ইসলামী স্কলারগন এই চুলকেও পর্দার বিধানের অন্তর্ভুক্ত মনে করেন,তাই সতর্কতামূলক পর্দার বিধানের অন্তর্ভুক্ত ধরে নিয়ে তাহা দাফন করা উচিত।

আরো জানুনঃ 

(০৪)
কোনো একসময় অসম্মানিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় এর বৈধতা নেই।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...