আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
727 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (38 points)
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।।
১)উক্ত কথোপকথনে তালাক পতিত হয়েছে কিনা?

স্বামীঃভাই,একটা ছোট বিষয়কে কেন্দ্র করে তুমি ডেইলি ঝামেলা লাগাবা।
ক্যান?বুঝিনা না আমি।ক্যান?
আমি তোমার ফ্যামিলির সাথে কথা বলবো যে তাদের মেয়ে থাকতে পারবে নাহ,এইজন্য ডেইলি ঝামেলা হচ্ছে।এর থেকে জানাজানি হওয়ার আগেই ছাড়াছাড়ি হয়ে যাক।আমি আজকে বা কালকে আন্টির(মেয়ের মা) সাথে কথা বলে তোমাকে জানিয়ে দিচ্ছি
আর হচ্ছে না।শুধু শুধু এত অপবাদ আমি নিতে পারব নাহ।অনেক হইছে।ঐদিনও ছোট একটা বিষয় নিয়ে তুলকালাম বানিয়ে ফেলছ।আজকেও।তুমি যেমন ছেলে চাও ঐরকম খুঁজে নিও।ঐ ছেলে আমি না।এইভাবে হচ্ছে না।ডেইলি ডেইলি পেইন নিতে আমি পারবো না।এতো কথা আমি শুনতে পারবো নাহ

২)এখানে তালাক কার্যকর হয়ে গেছে?

স্ত্রীঃএক্সামের মধ্যে ঝগড়া লাগুক আমি চাই না।এমনি আমি আজকে অনেক কিছু ভেবে ফেলছি।সেপারেশন(বিচ্ছেদ) এর চিন্তা আসে আমার ঝগড়া বা অভিমান হলে।আমার চিন্তা সবসময় এক্সট্রিম হয়।
স্বামীঃ"বাসায় পাঠায়া দিও ডিভোর্স লেটার সাইন কইরা দিমু নি।এত হাতে পায়ে ধইরা আমি কারো সাথে থাকতে পারমু না।একটু কিছু হইলেই যার মনে এইডি আসে"।

এখানে স্ত্রী বলল যে একটু কথা লাগলেই তার সেপারেশন বা বিচ্ছেদের কথা মনে আসে।তখন স্বামী রেগে গিয়ে বলে উক্ত কথা বলে।শুনেছিলাম তালাকের মজলিসে এ ধরনের কথা ব্যবহার করলে নিয়ত না থাকলেও তালাক কার্যকর হয়।স্ত্রী যে বলল,তার মাথায় বিচ্ছেদের চিন্তা আসে ঝগড়া  হলে।এরপরই স্বামী রাগ করে কথাগুলো বলে।এটাকে কী তালাকের আলোচনার পরিস্থিতি/তালাকে মজলিশ/বা তালাকের শব্দ উচ্চারণের হালত বলে?স্বামী আসলে স্ত্রীকে তালাক দিতে ইচ্ছুক না,কিন্তু স্ত্রীর মাথায় বিচ্ছেদের চিন্তা ঘুরে দেখে রাগ করে বলেছে।

 ৩)নিকাহনামায় যদি চার শর্তে স্ত্রী তালাক দেয়ার অধিকার পাবে লিখা থাকে,কিন্তু তা স্বামী দেখেনি বা খেয়াল করেনি,এক্ষেত্রে স্বামী কী চাইলে নিজের ইচ্ছায় না করতে পারবে যে তালাকের অধিকার দিবে না স্ত্রীকে?
৪)কেনায়া শব্দ যদি স্বামী বলে,কিন্তু পরবর্তীতে তালাকের নিয়ত ছিল কিনা জিগেস করলে বলে যে নিয়াত ছিল না,এক্ষেত্রে স্বামীর কথাকে সত্য ধরে নেয়া হবে এবং বিয়ে বহাল থাকবে?

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
তালাক খুবই মারাত্মক একটি বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে।
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় তালাকের ইঙ্গিত সূচক বাক্যে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

আরো জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামী বলেছিলো, ""তুমি যেমন ছেলে চাও ঐরকম খুঁজে নিও""

এটি কেনায়া বাক্য, এখানে স্বামী তালাকের নিয়ত করে থাকলে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে।
আর তালাকের নিয়ত না করে থাকলে তালাক পতিত হবেনা।

(০২)
স্বামীঃ"বাসায় পাঠায়া দিও ডিভোর্স লেটার সাইন কইরা দিমু নি।এত হাতে পায়ে ধইরা আমি কারো সাথে থাকতে পারমু না।একটু কিছু হইলেই যার মনে এইডি আসে"।

এখানে ডিভোর্স লেটারে সাইন করবে বলেছে,সাইন তো করেনি।
এখানে স্বামী ভবিষ্যতে সাইন করবে,তাই এটি ওয়াদা মূলক বাক্য।
এতে তালাক হবেনা।

(০৩)
স্বামী না জেনে শুনেই যদি সেখানে সাইন করে থাকে,তাহলে এতে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।
এখানে যেহেতু স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পায়নি,তাই 
এখানে স্বামী তালাকের অধিকার না করে দেওয়ার  প্রশ্নই আসে।
স্ত্রী তো অধিকারই পায়নি।

বিস্তারিত জানুনঃ

(০৪)
হ্যাঁ  এক্ষেত্রে স্বামীর কথাকে সত্য ধরে নেয়া হবে এবং বিয়ে বহাল থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
reshown
অনেক অনেক শুকরিয়া। জাঝাকাল্লাহ, শাইখ
১ নং প্রশ্নে "এর চেয়ে জানাজানি হওয়ার আগেই ছাড়াছাড়ি হয়ে যাক-স্বামীর একথায় বিবাহে কোনো সমস্যা হয়েছে কী??

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...