আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
167 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (32 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু।

১। তারাবিহ নামাজ কি নবী করিম সাঃ পড়েছেন?? / আমাদের কে কি পড়তে বলেছেন?
২।  আমি শুনেছিলাম যে হযরত ওমর রাঃ ১ম তারাবিহ নামাজ জামাতে পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন?  তাহলে কি এইটা বিদাআত হবে? ওস্তাদ একটু এই বিষয় কিলিয়ার হওয়ার জন্য জানতে চাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তারাবিহ নামাজ বিশ রাকাত পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। 
কেহ যদি বিনা ওযরে বিশ রাকাত না পড়ে,বা ওযর বশত বিশ রাকাত না পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলে,তাহলে সে গুনাহগার হবে।
,
এবং শেষে তিন রাকাত বিতর পড়া ওয়াজিব। 
,     
ইমাম বুখারীসহ সিহাহ সিত্তার সকল গ্রন্থকারের উস্তাদের ২৬ খন্ডে রচিত কিতাব ‘মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবাহ’( ২/১৬৪)-তে সহিহ সনদে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, 

ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﻓِﻲ ﺭَﻣَﻀَﺎﻥَ ﻋِﺸْﺮِﻳﻦَ ﺭَﻛْﻌَﺔً ﻭَﺍﻟْﻮِﺗْﺮَ  

রাসূল ﷺ রমযান মাসে বিশ রাকাআত তারাবী ও বিতির আদায় করতেন।
হাদিসটি এই হাদিসগ্রন্থগুলোতেও বর্ণিত হয়েছে– সুনানুল কোবরা লিল-বায়হাকী: ২/৬৯৮, আল-মুনতাখিব: ৬৫৩, আল-মু’জামুল কাবীর: ১১/৩৯৩, আল-মু’জামুল আওসাত: ১/২৪৩।

 عن ابن عباس ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يصلى فى رمضان عشرين ركعة والوتر

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত। রাসূল সা: রমজান মাসে বিশ রাকাত এবং বিতির পড়তেন। {মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-৫/২২৫, হাদীস নং- ৭৬৯২, মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ-২১৮, আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-১২১০২, মাজমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-১৭২, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪৩৯১}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
উপরোক্ত হাদীস গুলো প্রমান বহন করে যে রাসুলুল্লাহ সাঃ তারাবিহ এর নামাজ পড়েছেন।  


(০২)
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
রাসুলুল্লাহ সাঃ তারাবিহ এর নামাজ শুরুতে ২/৩ রাত মসজিদে জামাত করে পড়ানোর পর পরবর্তীতে সেটি যেনো আল্লাহ তায়ালা উম্মতের উপর ফরজ না করে দেন,এই লক্ষ্যে বাসায় তারাবিহ নামাজ পড়েছেন।
যেহেতু মসজিদে আর তারাবিহ এর নামাজ হয়নি,তাই ছাহাবায়ে কেরামগনও বাসাতেই তারাবিহ এর নামাজ আদায় করতেন।

পরবর্তীতে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর মৃত্যুর পর যেহেতু ওহির দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো,আর তারাবিহ ফরজ হওয়ার সুযোগ ছিলোনা ,তাই ওমর ফারুক রাঃ মসজিদে  জামাতের সহিত তারাবিহ চালু করেন।
সকল ছাহাবায়ে কেরামগন সেটি মেনে নেন।  

ইয়াজিদ বিন রূমান বলেন,
 كان الناس يقومون في زمان عمر بن الخطاب في رمضان بثلاث وعشرين ركعة 

লোকেরা (সাহাবী ও তাবেয়িগণ) ওমর রাযি. এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবী এবং তিন রাকাত বিতির রমযান মাসে আদায় করতো। (মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৪৪৩, মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৩৮০, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪৩৯৪)

সায়েব বিন ইয়াজিদ বলেন,
 كـانوا يقـومـون عهد عمر بن الخطاب رضى الله عنه فى شهر رمضان بعشرين ركعة وكانوا يقومون بالمأتين وكانو يتوكؤن على عصيتهم فى عهد عثمان من شدة القيام  

ওমর রাযি. এর শাসনামলে লোকেরা (সাহাবী ও তাবেয়িগণ) বিশ রাকাত তারাবী পড়তেন। আর উসমান রাযি. এর শাসনামলে লম্বা কেরাতের কারণে লাঠির উপর ভর দিতেন। (বায়হাকী-৪/২৯৬)

বিস্তারিত জানুনঃ   

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى ذَاتَ لَيْلَةٍ فِي الْمَسْجِدِ فَصَلَّى بِصَلاَتِهِ نَاسٌ ثُمَّ صَلَّى مِنَ الْقَابِلَةِ فَكَثُرَ النَّاسُ ثُمَّ اجْتَمَعُوا مِنْ اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ أَوْ الرَّابِعَةِ فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا أَصْبَحَ قَالَ قَدْ رَأَيْتُ الَّذِي صَنَعْتُمْ وَلَمْ يَمْنَعْنِي مِنَ الْخُرُوجِ إِلَيْكُمْ إِلاَّ أَنِّي خَشِيتُ أَنْ تُفْرَضَ عَلَيْكُمْ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ.

উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাতে মসজিদে সালাত আদায় করছিলেন, কিছু লোক তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলো। পরবর্তী রাতেও তিনি সালাত আদায় করলেন এবং লোক আরো বেড়ে গেল। অতঃপর তৃতীয় কিংবা চতুর্থ রাতে লোকজন সমবেত হলেন, কিন্তু আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন না। সকাল হলে তিনি বললেনঃ তোমরা যা করেছ আমি লক্ষ্য করেছি। তোমাদের নিকট বেরিয়ে আসার ব্যাপারে এ আশঙ্কাই আমাকে বাধা দিয়েছে যে, তোমাদের উপর তা ফরজ হয়ে যাবে। এটা ছিল রমাযান মাসের ঘটনা। (বুখারী শরীফ ১১২৯.৭২৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১০৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১০৬২)

★রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের পর যেহেতু আর ওহি আসার সম্ভাবনা নেই এবং নতুন কোনো বিষয় ফরজ হওয়ারও কোনো অবকাশ নেই সেজন্য হজরত ওমর (রা.) তারাবির নামাজ বিশ রাকআত নির্দিষ্ট করেন এবং জামায়াতে আদায় করার ব্যবস্থা করেন। হাজার হাজার সাহাবী হজরত ওমরের (রা.) এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সাহাবাদের ইজমা দ্বারা বিষয়টি সাব্যস্ত হয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...