ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
শবে বরাত মানে মুক্তির রাত।
যেহেতু এই রাতটি গুনাহ থেকে মুক্তির রাত। তাই এই রাতকে শবে বরাত বলা হয়।
এই রাতে আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের গুনাহ মাফ করে থাকেন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِىْ مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ عَنْ رَسُولِ اللّهِ ﷺ قَالَ: إِنَّ اللّهَ تَعَالى لَيَطَّلِعُ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِه إِلَّا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ
আবূ মূসা আল আশ্‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা শা‘বান মাসের পনের তারিখ রাত্রে দুনিয়াবাসীর প্রতি ফিরেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া তাঁর সৃষ্টির সকলের গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
হাদীসের হুকুমঃ হাসান।
(ইবনু মাজাহ্ ১৩৯০, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ১৫৬৩, সহীহুল জামি‘ ১৮১৯,মিশকাত ১৩০৬।)
عن علي بن أبي طالب قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ( إذا كانت ليلة النصف من شعبان فقوموا ليلها وصوموا نهارها . فإن الله ينزل فيها لغروب الشمس إلى سماء الدنيا . فيقول ألا من مستغفر لي فأغفر له ألا من مسترزق فأرزقه ألا مبتلى فأعافيه ألا كذا ألا كذا حتى يطلع الفجر )
হযরত আলী বিন আবু তালীব রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যখন শাবান মাসের অর্ধেকের রজনী আসে [শবে বরাত] তখন তোমরা রাতে নামায পড়, আর দিনের বেলা রোযা রাখ। নিশ্চয় আল্লাহ এ রাতে সূর্য ডুবার সাথে সাথে পৃথিবীর আসমানে এসে বলেন-কোন গোনাহ ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি আমার কাছে? আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। কোন রিজিকপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে রিজিক দিব। কোন বিপদগ্রস্থ মুক্তি পেতে চায় কি? আমি তাকে বিপদমুক্ত করে দিব। আছে কি এমন, আছে কি তেমন? এমন বলতে থাকেন ফযর পর্যন্ত। {সূনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৩৮৮, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৮২২, }
(০২)
যেই সমাজে এই রাতেকে কেন্দ্র করে হালুয়া-রুটি পাকানোর রেওয়াজ আছে,সেই সমাজবাসীদের জন্য এই রাতকে কেন্দ্র করে হালুয়া রুটি পাকানো বিদ'আত হবে।
এটিই ইসলামী স্কলারদের মত।
বিস্তারিত জানুনঃ
(০৩)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এটা অপচয় নয়,কর্তৃপক্ষের নিয়ম মানার স্বার্থে এমন করাতে কোনো গুনাহ হবেনা।
(০৪)
যেহেতু এটি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নিষেধ,তাই এটি জায়েজ হবেনা।
তবে তাদের পক্ষ থেকে অনুমতি থাকলে জায়েজ হবে।
(০৫)
কোনো নবি বা রাসুলের চেয়ে সাহাবিদের মর্যাদা বেশি নয়।
এক্ষেত্রে বানোয়াট বর্ননা রয়েছে,যার উপর ভিত্তি করর কিছু মানুষ এহেন কথা বলে থাকে।
তা হলোঃ-
علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل
“আমার উম্মতের আলেমগণ বনি ইসরাইলের নবীদের মত।”
বিজ্ঞ মুহাদ্দিসগণ বলেন, এটি কোনও হাদিস নয় বরং হাদিসের নামে ভিত্তিহীন কথা ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামে চরম মিথ্যাচার।
যরকাশি রহঃ এ হাদিস সম্পর্কে বলেন, لا يعرف له أصل “এর কোনও ভিত্তি জানা যায় না।” (আল লাআলি/১৬৭)
আজলুনী রহঃ বলেন, এটি বানোয়াট ও ভিত্তিহীন কথা। (কাশফুল খাফা ওয়া মুযীলিল ইলবাস)
ইমাম সু্য়ূতী রহঃ বলেন, لا أصل له “এর কোনও ভিত্তি নাই।” (আদ দুরারুল মানসুরা)
মোল্লা আলি কারী রহঃ বলেন, قيل لا أصل له أو بأصله موضوع “বলা হয়েছে, এর কোন ভিত্তি নাই বা এর মূল হল বানোয়াট।” (আল আসরার আল মরফুআহ ২৪৭)
যুরকানি রহঃ বলেন, لا أصل له “এর কোনও ভিত্তি নাই।” (মুখতাসারুল মাকাসিদ/৬৫২)
আলবানি রহঃ বলেন, لا أصل له “এর কোনও ভিত্তি নাই।” (সিলসিলা যাঈফা/৪৬৬)