বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
জবাবঃ-
মানি অর্ডার (Money Order)বাংলাদেশ পোষ্ট অফিসের সংজ্ঞা অনুযায়ী-A money order is an order issued by the post office for the payment of a sum of money through the agency of the post office,অর্থাৎ মানি অর্ডার পোস্ট অফিস বা পোস্ট অফিসের সংস্থার মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ প্রদানের জন্য জারি করা একটি আদেশ।• মানি অর্ডার ফর্ম কালি দ্বারা অবশ্যই পূরণ করতে হবে;• একটি একক মানি অর্ডার ৫০০০ টাকার বেশি ইস্যু করা উচিত নয়।
*Investopedia তে বলা হয়েছে-
A money order is a certificate, usually issued by governments and banking institutions, that allows the stated payee to receive cash on demand. A money order functions much like a check, in that the person who purchased the money order may stop payment.অর্থাৎ মানি অর্ডার একটি সার্টিফিকেট, সাধারণত সরকার এবং ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের দ্বারা ইস্যু করা হয়, যা বিবৃত প্রাপকের দাবিতে নগদ অর্থ গ্রহণ করার অনুমতি দেয়। মানি অর্ডার একটি চেকের মত কাজ করে থাকে, যাতে অর্থের ক্রয়কারী ব্যক্তি অর্থ প্রদান বন্ধ করতে পারে।
*Wikipedia তে বলা হয়েছে-A money order is a payment order for a pre-specified amount of money.অর্থাৎ মানি অর্ডার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের জন্য একটি পেমেন্ট অর্ডার।
সঞ্চয়পত্রঃ
ব্যাংকের প্রচলিত সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে যে টাকা জমা রাখা হয় এককালীন, ৩ বছর/৫ বছর/ ১০বছরের জন্য। সে টাকা জমা রাখার পরে প্রতি মাসে ব্যাংক কর্তৃক টাকা জমাকারীকে একটা এমাউন্ট দেয়া হয়।
মানি অর্ডারের উপরোক্ত ব্যখ্যা অনুযায়ী তাতে হারামের কোনো সংশ্লিষ্টতা মনে হচ্ছে না।তবে সঞ্চয়পত্র হারাম।
যাদের চাকুরীর সিংহ ভাগ কাজ হারাম সংশ্লিষ্ট, তাদের সেই চাকুরী জায়েয নয়।সুতরাং সঞ্চয় পত্র মেন্টনের চাকুরী জায়েয হবে না।কিন্তু যদি কারো অন্যান্য বৈধ কাজের দায়িত্ব থাকে,এবং ফাঁকে ফাঁকে সঞ্চয়পত্রের কাজকে আঞ্জাম দিতে হয়,তাহলে ইস্তেগফারের সাথে এমন চাকুরীর রুখসত ফকাহায়ে কেরামগণ দিয়ে থাকেন।(২)ব্যাংকের প্রচলিত সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে যে টাকা জমা রাখা হয় এককালীন, ৩ বছর/৫ বছর/ ১০বছরের জন্য। সে টাকা জমা রাখার পরে প্রতি মাসে ব্যাংক টাকা জমাকারীকে একটা এমাউন্ট দেয়া হয়। এটা স্পষ্টত সুদ।কেননা সুদ বলা হয়,ঋণ নেয়ার পর ঋনদাতাকে কিছু দেয়ার চুক্তি করা।
আল্লাহ তা'আলা বলেন-
ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺄْﻛُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﺮِّﺑَﺎ ﻻَ ﻳَﻘُﻮﻣُﻮﻥَ ﺇِﻻَّ ﻛَﻤَﺎ ﻳَﻘُﻮﻡُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺘَﺨَﺒَّﻄُﻪُ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤَﺲِّ ﺫَﻟِﻚَ ﺑِﺄَﻧَّﻬُﻢْ ﻗَﺎﻟُﻮﺍْ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟْﺒَﻴْﻊُ ﻣِﺜْﻞُ ﺍﻟﺮِّﺑَﺎ ﻭَﺃَﺣَﻞَّ ﺍﻟﻠّﻪُ ﺍﻟْﺒَﻴْﻊَ ﻭَﺣَﺮَّﻡَ ﺍﻟﺮِّﺑَﺎ ﻓَﻤَﻦ ﺟَﺎﺀﻩُ ﻣَﻮْﻋِﻈَﺔٌ ﻣِّﻦ ﺭَّﺑِّﻪِ ﻓَﺎﻧﺘَﻬَﻰَ ﻓَﻠَﻪُ ﻣَﺎ ﺳَﻠَﻒَ ﻭَﺃَﻣْﺮُﻩُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻭَﻣَﻦْ ﻋَﺎﺩَ ﻓَﺄُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏُ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻫُﻢْ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺧَﺎﻟِﺪُﻭﻥَ
যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়।
তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত!
অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন।
অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল।
আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।
সূরা বাকারা-২৭৫;
রিবা বা সূদ কাকে বলে?
বর্ণিত রয়েছে এ ব্যপারে উলামায়ে কেরামগণ একমত যে, প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তাই রিবা বা সুদ হিসেবে পরিগণিত হবে।
যেমন
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺣَﻔْﺺٌ، ﻋَﻦْ ﺃَﺷْﻌَﺚَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟْﺤَﻜَﻢِ، ﻋَﻦْ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻛُﻞُّ ﻗَﺮْﺽٍ ﺟَﺮَّ ﻣَﻨْﻔَﻌَﺔً، ﻓَﻬُﻮَ ﺭِﺑًﺎ » ﻣﺼﻨﻒ ﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺷﻴﺒﺔ
তরজমাঃ-প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তাই রিবা বা সুদ।(মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বাহ-২০৬৯০)
মুনাফার শর্তে ঋণ দিলে তা রিবার অন্তর্ভুক্ত।তবে শর্ত ব্যতীত যদি ঋণদার ঋণ পরিশোধের সময় কিছুটা বেশী দিয়ে দিলে তা রিবার অন্তর্ভুক্ত হবে না।বরং তা বৈধ-ই হবে।
যেমন এক হাদীসে এসেছে,হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
عن ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﻟِﺮَﺟُﻞٍ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺳِﻦٌّ ﻣِﻦْ ﺍﻹِﺑِﻞِ ﻓَﺠَﺎﺀَﻩُ ﻳَﺘَﻘَﺎﺿَﺎﻩُ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﺃَﻋْﻄُﻮﻩُ ، ﻓَﻄَﻠَﺒُﻮﺍ ﺳِﻨَّﻪُ ﻓَﻠَﻢْ ﻳَﺠِﺪُﻭﺍ ﻟَﻪُ ﺇِﻻ ﺳِﻨًّﺎ ﻓَﻮْﻗَﻬَﺎ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ( ﺃَﻋْﻄُﻮﻩُ ، ﺇِﻥَّ ﺧِﻴَﺎﺭَﻛُﻢْ ﺃَﺣْﺴَﻨُﻜُﻢْ ﻗَﻀَﺎﺀً )
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে জনৈক ব্যক্তির একটি বাচ্ছা বয়সী উট পাওনা ছিলো,অতঃপর যখন সে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে এসে তা চাইলো।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ উনার পাওনা উনাকে বুঝিয়ে দাও।সাহাবায়ে কেরাম (সদকার মালের মধ্যে খুজে)উক্ত ব্যক্তির পাওনা কমবয়সী উট পেলেন না।বরং তার থেকে একটু বেশী বয়সী উট পেলেন।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেনঃ তোমরা তা তাকে দিয়ে দাও,কেননা তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই সর্বোত্তম, যে ঋণ পরিশোধের সময় উদারতা প্রদর্শন করে।তথা অতিরিক্ত দিয়ে দেয়।(সহীহ বুখারী-২৩৯৩,সহীহ মুসলিম-১৬০০)
সুতরাং, সঞ্চয়পত্র সুদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে হারাম।
শিক্ষক ছাত্রদের হক আদায় করতে গড়িমসি করলে শিক্ষকের সম্পূর্ণ বেতন হালাল হবে না।
শিক্ষক দায়িত্ব আদায় করার পর ছাত্ররা তাদের হক আদায় না করলে, এতে শিক্ষকের কোনো দায়ভাড় নেই।শিক্ষকের বেতন হালাল হবে।
বাবা মার সাথে সর্বদা নরম ভাষায় কথা বলতে হবে।মাতাপিতার সাথে উত্তম আচরণ ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। মাতাপিতার সাথে উত্তম আচরণ করতে সর্বোচ্ছ চেষ্টা করতে হবে।শতচেষ্টার পরও যদি মাঝেমধ্যে মাতাপিতার সাথে কখনো উচ্ছবাক্য হয়ে যায়,তাহলে সাথে সাথেই ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।সন্তান দ্বীন পালন করতে সচেষ্ট,এমতাবস্থায় যদি মাতাপিতা সন্তানকে অসহ্য যন্ত্রণা দিতে সচেষ্ট থাকে,এবং রাগ করা ব্যতীত এ অসহ্য যন্ত্রনা থেকে বাঁচা অসম্ভব, তাহলে এমতাবস্থায় সন্তান রাগ করলে আশা করা যায় যে,সন্তানের কোনো সমস্যা হবে না।