ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
আত্মহত্যা কোনো ভাবেই সমাধান নয়।
একটি আত্মহত্যা শুধু একটি জীবনকে শেষ করে দেয় না বরং একটি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এমনকি গোটা মানবজাতিকে হুমকির মধ্যে ফেলে দেয়।
প্রত্যেক আত্মহত্যায় চেষ্টাকারী ব্যাক্তির ফিকির করা উচিত, যে আত্মহত্যা করার পর তার পরিবারের উপর কি যন্ত্রণা যায়, কি চাপ যায়,কতটা কষ্ট পায় মা বাবা,আত্মীয় স্বজন।
আত্মহত্যা কারী ব্যাক্তি দুনিয়াও হারায়,আখেরাতও হারায়।
সুতরাং এটি কোনো সমাধান হতেই পারেনা।
ইসলামী আইন ও বিধানে আত্মহত্যাকে হারাম করা হয়েছে এবং তার পরিণতিতে বলা হয়েছে, আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির আত্মহত্যা করার পদ্ধতি অনুযায়ী তার যন্ত্রণাকে অব্যাহত রাখা হবে।
পবিত্র কুরআনে এ ব্যাপারে নির্দেশিত হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর করুণাময়।’ (সূরা আন-নিসা, ৪ : ২৯-৩০)
অন্য দিকে অনেক হাদিস আত্মহত্যা এবং এর শাস্তি সম্পর্কে আমাদের অবহিত করে। রাসূলুল্লাহ সা: আমাদের এ ব্যাপারে বিশেষভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামেও তার সেই যন্ত্রণাকে অব্যাহত রাখা হবে। আর যে ব্যক্তি ধারালো কোনো কিছু দিয়ে আত্মহত্যা করবে, তার সেই যন্ত্রণাকেও জাহান্নামে অব্যাহত রাখা হবে।’ (সহিহ বুখারি, খণ্ড ২, হাদিস নং ৪৪৬)
এখন যারা ইসলামী অনুশাসনে বিশ্বাসী এবং সে আলোকে নিজেদের জীবন পরিচালনা করেন, তারা কখনো আত্মহত্যা করে নিজেদের পরকালীন জীবনকে জাহান্নামে নিশ্চিত করতে চাইবে না এটাই স্বাভাবিক।
★আত্মহত্যা থেকে বাঁচার জন্য তাক্বদীরে বিশ্বাস মযবুত করা জরূরী ।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘মুমিনের বিষয়টি বিস্ময়কর। যখন সে কল্যাণপ্রাপ্ত হয়, তখন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। আবার যখন বিপদগ্রস্ত হয়, তখন ছবর করে। উভয় অবস্থায় সে আল্লাহর নিকট পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়’ (মুসলিম)।
★সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা করা জরুরী । আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হন’ (তালাক ৬৫/৩)।
★হতাশা থেকে বাঁচতে হবে,হতাশ হওয়া যাবেনা।
আল্লাহ বলেন, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না’ (যুমার ৩৯/৫৩)। অতএব মুমিন কখনো হতাশায় ভোগে না।
আত্মহত্যা মহাপাপ। এরপরেও মানুষ আত্মহত্যা করে।
কোন মুমিন আত্মহত্যা করতে পারে না। কেননা এটা করলে সে ইহকাল ও পরকাল দু’টিই হারাবে। তাকে এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, উপায়-উপাদানের মালিক আল্লাহ।
নিরুপায় মানুষ আল্লাহর উপর একান্ত ভরসা করে বৈধ পন্থায় চেষ্টা করে গেলে আল্লাহ অবশ্যই তার জন্য উত্তম পথ বের করে দিবেন।
এ ব্যাপারে তিনি তার অনুগত বান্দাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, তার জন্য তিনি উপায় বের করে দেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রূযী দেন, যা সে কল্পনাও করেনি’ (তালাক ৬৫/২-৩)।
তিনি বলেন ‘যারা আমাদের পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, অবশ্যই আমরা তাদেরকে আমাদের পথসমূহে পরিচালিত করব। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথে থাকেন’ (আনকাবূত ২৯/৬৯)
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি নিজ পরিবারকে দিয়ে তাদের পরিবারের সাথে বৈঠক করাবেন।
সামগ্রিকভাবে আপনি এবং আপনার পরিবার তাদের কাছে মাফ চাইবেন।
ইনশাআল্লাহ সমাধান মিলবে।
,
অনেক বুঝানোর পরেও কাজ না হলে আপনি ধৈর্য ধারন করে যাবেন।
যদি সে তালাকও দেয়,তবুও হতাশ হবেননা।
নিশ্চয়ই আপনার জন্য উত্তম কোনো কিছু অপেক্ষা করছে।
আখেরাতের শাস্তির তুলনায় দুনিয়ার জিন্দেগীর এ শাস্তি কিছু নয়।
ধৈর্য করে আল্লাহর উপর ভরসা করে ঈমান আমল নিয়ে চললে আখেরাতে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম জাযা দিবেন।
শুধুমাত্র আল্লাহকে আপন মনে করুন।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
শুধুমাত্র স্বামীর জন্য কেনো আত্মহত্যা করবেন?
অথচ যিনি আপনাকে সৃষ্টি করলেন, রিযিক দিলেন,এতো লক্ষ কোটি নিয়ামত দ্বারা ভরপুর করলেন,সেই মহান সত্তার কথা ভাববেননা?
সুতরাং আপনি হতাশ হবেননা।
,
যে যে পরামর্শ দেয়া হলো,আমল করুন,সমাধান মিলবে,ইনশাআল্লাহ।