আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
231 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
edited by
1. আমি গতকাল রাত মোবাইল থেকে অশ্লীল ভিডিও দেখে হস্তমৈথুনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তখন আমার কাছে মনে হল যে, এই হাত দিয়ে তালাকের মাসআলা পড়েছি, এখন এই হাত দিয়েই আবার এসব ভিডিও এবং হস্তমৈথুন করবো? তাই হাত ধুয়ে নিলাম। হাত ধুয়ার পর মনে মনে সিন্ধান্ত পরিবর্তন করেছি আজকে হস্তমৈথুন না করার। আমার কাছে মনে হল আমি তো হস্তমৈথুনের জন্য হাত ধুয়েছি। এখন আবার এই হাত দিয়ে তালাকের মাসআলা পড়লে যদি তালাকের ব্যাপারে সমস্যা হয়? তাই আবার হাত ধুয়ে। কিছুক্ষণ পর আবার হাত ধুয়েছি যে হস্তমৈথুন করবো। আবার মনে মনে সিন্ধান্ত পরিবর্তন করেছি। এভাবে কয়েকবার হাত ধোয়ার পর আমি ভয় পেয়ে গেলাম তাই তালাকের মাসআলা পড়ার জন্য হাত ধুয়েছি এবং মনে মনে স্থির করেছি আজকে হস্তমৈথুন করবো না। বিছানায় যাওয়ার পর তালাকের মাসআলা পড়ার জন্য আইফতোয়া সাইটের নাম লিখলাম এবং আমি সেই হাত দিয়েই আবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে হস্তমৈথুন করে ফেলেছি।

১.১. এখন আমি যদি উচ্চারণ করে বলে থাকি যে, আজকে হস্তমৈথুন করবো না। এরপর করলেও কি সেটা শর্তযুক্ত তালাকের মধ্যে পড়ে যাবে?

১.২. হস্তমৈথুন এবং তালাক নিয়ে এভাবে বাড়াবাড়ি করা এবং শেষ পর্যন্ত হস্তমৈথুন করার কারনে কি আল্লাহ তালা আমার উপর শর্তযুক্ত তালাক দিয়ে দিতে পারেন?

2. রাতে হস্তমৈথুনের পর আমার হাতের আংগুলে বীর্য লেগে যায়। এরপর আমি হাত অন্য হাত দিয়ে পাত্র দিয়ে ঢেলে পানি দিয়ে ধুয়েছি। অর্থাৎ এক হাত দিয়েই আংগুল ধুয়েছি। এরপর যেখানে বীর্য লেগে ছিল সেখানে মাটিতে ঘশেছি। এরপর ২ হাত ধৌত করেছি। সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার করেনি। এরপর কিছুটা ভেজা হাত দিয়ে মোবাইল স্পর্শ করেছি৷ কিছুক্ষণ পর যেই আংগুলে বির্য লেগেছিল সেই আংগুল আর সাথের আংগুল দিয়ে ঘষা দিয়েছি, আমার কেমন জানি লেগেছে যেন বীর্য থেকে গেছে। এখন এই অবস্থায় কি হাত পাক হয়েছিল? হাত পাক না হলে তো আমার মোবাইল ও নাপাক হয়ে গেছে। মোবাইল নাপাক হলে তা ঘেমে হয়তো অন্যন্য স্থানে ছড়াবে। আমার ভয় হচ্ছে যে আমি কি তাহলে হাত ভাল করে ধুইনি? উল্লেখ্যঃ আমি কিছুদিন আগে মারাত্মক ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ছিলাম পবিত্রতার ব্যপারে। এখন আমি কি আমার হাত পাক ধরে নিবো নাকি নাপাক? নাপাক হলে আমার মোবাইল পাক করতে হবে। কারণ, এই মোবাইল স্পর্শ করার পর আমি তো কোরআন ও স্পর্শ করতে পারি ভেজা হাতে।
২.১ঃ আমার হাত কি পাক হয়েছিল?

২.২ঃ হাত যদি পাক না হয়ে থাকে এবং আমি যদি ভেজা হাত দিয়ে অনেক কিছু নাপাক করে ফেলি এমনকি মোবাইল নাপাক হয়ে যাওয়ার কারণে ঘামে ভিজে কিংবা অজুর পানিতে ভিজে মোবাইল থেকে কোরআন শরিফ এ ছড়ায় এতে কি আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিবেন কিংবা শর্তযুক্ত তালাক দিয়ে দিবেন?

২.৩ঃ যদি হাত পাক হয়েও থাকে আমার কি সতর্কতা হিসেবে মোবাইল পাক করা উচিত?

৩. যেহেতু তালাক এবং পবিত্রতার ব্যাপার একসাথে মিশে গেছে। পবিত্রতা অর্জনের বিষয়টি কি আল্লাহর কাছে আলাদা থাকবে নাকি পবিত্রতা অর্জনে গাফিলতি করলে তালাকের ব্যাপারে সমস্যা হবে?

৪. উপরে বর্নিত ১, ২ ও ৩ নং প্রশ্নগুলো করার সময় আমার গোসল ফরজ ছিল, আমার মোবাইলও সম্ভবত নাপাক ছিল। কারণ ২নং প্রশ্নে বর্ণনা করেছি। সেই গোসল ফরজ আদায় না করেই প্রশ্ন করেছি। নিচের প্রশ্নগুলো পরবর্তীতে এডিট করে ফরজ গোসলের পর করেছি। এডিট করে লেখা পরিবর্তন করেছি। এতে কি কোন সমস্যা হবে?

৫. হস্তমৈথুন এর উপর আমি আমার গোপনাঙ্গ টিস্যু দিয়ে মুছেছিলাম। এরপর প্রশ্রাব করে ইস্তেঞ্জা করে ঘুমিয়েছি। এক্ষেত্রে, আমার প্যান্ট কি ৩ বার ধৌত করতে হবে বা প্যান্ট কি নাপাক?

৬. ২ নং ঘটনাটি বর্ননায় আমার কাছে মনে হয় আমি হয়তো ভাল করেই হাত ধুয়েছি। তবুও হাতে কেমন যেন লেগেছে। আমি সিন্ধান্ত নিতে পারছিনা হুজুর।

৭. ২ং ঘটনার পর সেই ভেজা হাত দিয়ে আমি আমার একটি জামায় মুছেছি। এরপর আবারও ভালভাবে হাত ধুয়ে আবারো একই জামায় মুছেছি, তবুও হাতের কিছু অংশ ভেজা থাকায় হাত মশারিতে লেগেছে। এখন কি মশারীও নাপাক হয়ে গেছে? আমার জন্য মশারি পাক থাকা জরুরি কারণ, আমি রাতে কয়েকবারই হাত ধৌত করি এবং ভেজা হাত মশারিতে লাগে আবার মোবাইলেও লাগে। হাত মুছার কাপড় আমার বিছানায় ছিল, রাতে সেটি একবার পড়ে শুয়েছিলাম।কাথা গায়ে দিয়েছিলাম, পরে ভাবলাম যদি জামা নাপাক হয়ে যায় তাহলে তো শরীর ঘেমে বিছানায় ছড়াবে। এখন যদি আমার সেই কাপড় নাপাক হয়েও থাকে তাহলে কি আমার মশারী, কাথা ও বিছানায় নাপাক হয়ে গেছে? কারণ, গরমের সময় নাপাক বিছানায় ঘুমালে তো নাপাক শরীরে লাগতে পারে।

২নং ঘটনার সিন্ধান্তের উপর বুঝতে পারবো কি কি নাপাক হয়েছে।

নিচের অংশটুকু লেখার সময় আমাকে এক হিন্দু লোক বিস্কিট খেতে দিয়েছিল। সেই লোকের দেওয়া বিস্কুট খেতে খেতে ৮নং প্রশ্ন করেছি।

৮. আপনি আমাকে তালাকের ওয়াসওয়াসা থেকে মুক্ত হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাওয়ায় আপনি লিখেছেনঃ-

"আপনি তালাক সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন করবেননা।

তালাক সংক্রান্ত কোনো মাসয়ালা পড়বেননা।

তালাকের কথা মুখ দিয়ে,লিখনির মাধ্যমে বের করবেননা।
এই বিষয়ে কোনো চিন্তা আসলেই অন্য মনস্ক হয়ে যাবেন।

অন্য কাজে লিপ্ত হয়ে যাবেন।"

এখন আমি তো প্রশ্ন করে ফেলেছি এবং অন্য মনস্ক হতে পারিনি৷ এক্ষেত্রে কি তালাকের ব্যাপারে কোন সমস্যা হবে?

বিঃ দ্রঃ আমি অবিবাহিত। উপরে বর্নিত তালাকের ব্যাপারে সমস্যা বলতে আমি বুঝিয়েছি 'শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে কি না?'

৯. প্রশ্ন লেখার সময় আমি যদি অন্যের সাথে অন্য বিষয়ে কোন মিথ্যা বলি তাহলে কি শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে?

১০. হস্তমৈথুন এর পর গতকাল রাতে ঘুমানোর সময় আমি একটি ফতোয়ার ওয়েবসাইট তৈরি করার সিন্ধান্ত নিয়েছি। যেহেতু, আমার শরীর নাপাক ছিল এবং মোবাইলও সম্ভবত নাপাক ছিল, আর এই মোবাইল দিয়েই ফেইসবুকে একটি ফতোয়ার গ্রুপ থেকে এই আইডিয়া নিয়েছিলাম এখন আমি যদি সেই ফতোয়ার ওয়েবসাইট তৈরি করি তাহলে আমি কি সওয়াব পাবো এবং এতে কি শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে? আমি নিজেই ওয়েবসাইট বানাতে পারি।

১১। হুজুর, আমি গতকালও প্রশ্ন করেছিলাম। আপনি আমাকে হস্তমৈথুন ছেড়ে দেওয়ার জন্য একটি লিংক দিয়েছিলেন এবং সত্যি কথা বলতে বলেছিলেন। আমি যদি হস্তমৈথুন ছেড়ে দেওয়ার সেই উপায় গুলো ভালভাবে না পড়ি, হস্তমৈথুন না ছাড়ি এবং মিথ্যা বলা না ছাড়ি তাহলে কি শর্তযিক্ত তালাক হয়ে যেতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


তালাকের কথা চিন্তা করল কিন্তু সে শব্দ করে উচ্চারন করল না, বা তার  জিহবা নড়ল না, অর্থাৎ সে মনে মনে বলল, তাহলে তালাক পতিত হবে না। কারণ শুধু অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)
 
অপর এক হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ

আবূ যার আল-গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মাতের ভুল , বিস্মৃতি ও বলপূর্বক যা করিয়ে নেয়া হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন। [সুনানে ইবনে মাজাহ, ২০৪৩]
 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,

(০১)
১.১. আপনি যদি উচ্চারণ করে বলে থাকেন যে, আজকে হস্তমৈথুন করবো না। এরপর করলে সেটা শর্তযুক্ত তালাকের মধ্যে পড়ে যাবেনা।

১.২. হস্তমৈথুন এবং তালাক নিয়ে এভাবে বাড়াবাড়ি করা এবং শেষ পর্যন্ত হস্তমৈথুন করার কারনে  আল্লাহ তায়ালা আপনার উপর শর্তযুক্ত তালাক দিবেননা।

(০২)
২.১ঃ আপনার হাত পাক হয়েছিলো।

২.২ঃ 
এতে আল্লাহ আপনাকে শাস্তি দিবেননা কিংবা শর্তযুক্ত তালাক দিয়ে দিবেননা।

২.৩ঃ 
আপনার সতর্কতা হিসেবে মোবাইল পাক করা উচিত নয়।

(০৩)
পবিত্রতা অর্জনের বিষয়টি আল্লাহর কাছে আলাদা থাকবে।

পবিত্রতা অর্জনে গাফিলতি করলে তালাকের ব্যাপারে সমস্যা হবেনা।

(০৪)
এতে কোনো সমস্যা হবেনা। 

(০৫)
প্যান্টে যেহেতু বীর্য লাগেনি,তাই তাহা পাক করতে হবেনা।

(০৬)
আপনার হাত পাক হয়েছে।
সন্দেহের কিছু নেই।

(০৭)
যেহেতু আপনার হাত পাক হয়ে গিয়েছিলো,তাই এগুলোর কিছুই নাপাক হয়নি।

(০৮)
এক্ষেত্রে তালাকের ব্যাপারে কোন সমস্যা হয়নি।

আপনাকে যেটা বলা হয়েছিলো,সেটি পরামর্শ মাত্র। 

(০৯)
এতে শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবেনা।

(১০)
ফতোয়ার ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখানে বিজ্ঞ ফুকাহায়ে কেরামদের দায়িত্বে রেখে দিয়ে উম্মাহর খেদমতের কাজ করা হলে আপনি সওয়াব পাবেন।

তবে বিজ্ঞ মুফতি সাহেব ব্যাতিত কেহই যেনো সেই ওয়েবসাইটে ফতোয়া প্রদান না করে।

এতে শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবেনা।

(১১)
এতে শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।
আপনি নিশ্চিত থাকুন।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...