আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
256 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (10 points)
একজন মুসলিম ভাইয়ের পক্ষ্য থেকে প্রশ্ন করছি।

স্বামী-স্ত্রী এক ছাদের নিচেই বসবাস করে প্রায় ৮ বছর। কোনো সন্তান নেই। এক বিছানাতে ঘুমালেও কেউ কারো সাথে কথা বলে না দীর্ঘদিন। কোনো ভাবেই তাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছে না। স্ত্রী সবসময় অহংকারী মনোভাব পোষন করে যা স্বামীর জন্য খুব পীড়াদায়ক। যেহেতু স্ত্রী এর সাথে সম্পর্ক ভালো নয় তাই স্বামীর মনেও শয়তান সারাক্ষন খারাপ পথে ধাবিত হওয়ার ওয়াসওয়াসা দিতে। সামাজিক কারনে সে স্ত্রী কে তালাক ও দিতে পারছে না আবার দ্বিতীয় বিবাহ ও করতে পারছে না।

এ পরিস্থিতিতে স্বামী কি করতে পারে ?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم  

হাদীস শরীফে এসেছে  
عن أبي أیوب رضي اللّٰہ عنہ أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم قال: لا یحل لمسلم أن یہجر أخاہ فوق ثلاث لیال یلتقیان فیعرض ہذا و یعرض خذت وخیرہما الذي یبدأ بالسلام۔ (رواہ مالک في الموطا ۲؍۹۰۷، صحیح البخاري رقم: ۶۲۳۷، الترغیب و الترہیب رقم: ۴۱۸۹)
যার সারমর্ম হলো কোনো মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের সাথে ৩ দিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা,সম্পর্ক ছিন্ন রাখা জায়েজ নেই।   
,
অপর এক হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আউফ ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, কিছু লোক এসে আয়েশা (রা.)-কে বলল, আপনি যে অমুক জিনিস বিক্রি করেছেন কিংবা কাউকে দান করে দিয়েছেন, এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) বলেছেন, ‘যদি খালাম্মা আমার কথা না মানেন, তাহলে আমি তাঁর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে দেব। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে আয়েশা (রা.)-কে যে পরিমাণ ভাতা দেওয়া হয়, তা কমিয়ে দিয়ে শুধু খরচ চালনার পরিমাণ অর্থ দেব।’ আয়েশা (রা.) জিজ্ঞেস করেন, ‘সে কি এ কথা বলেছে?’ লোকেরা বলল, হ্যাঁ, তিনি এ কথাই বলেছেন। অতঃপর আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, ইবনে জুবাইরের সঙ্গে আর কখনো কথা বলব না।’ এরপর তিনি তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকে। 
ইবনে জুবাইর (রা.) আয়েশা (রা.)-এর কাছে সুপারিশকারী পাঠিয়েছেন। কিন্তু আয়েশা (রা.) কারো কোনো সুপারিশ মানতে চাননি এবং শপথও ভাঙতে চাননি। বিষয়টি ইবনে জুবাইরের (রা.) জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে। পরে আয়েশা (রা.)-কে ওই হাদিস স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, যে হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন দিনের বেশি কোনো মুসলমানের সঙ্গে রাগ করে কথা বলা বন্ধ রাখা বৈধ নয়।’ সবাই মিলে আয়েশা (রা.)-কে জোর দিয়ে বলে যে আপনি যা করছেন সেটা গুনাহ। তখন তিনি কেঁদে ফেলেন এবং বলেন, ‘আমি কসম খেয়ে ফেলেছি এবং কসম অত্যন্ত কঠিন বিষয়।’ শেষ পর্যন্ত তিনি কসম ভঙ্গ করে ইবনে জুবাইরের সঙ্গে কথা বলেন এবং কসমের কাফফারাস্বরূপ ৪০ জন দাস মুক্ত করে দেন। পরবর্তী জীবনে আয়েশা (রা.) তাঁর এ ভুলের কথা মনে হলেই কাঁদতেন এবং এত বেশি পরিমাণে কাঁদতেন যে চোখের পানিতে তাঁর ওড়না ভিজে যেতো।
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামী স্ত্রী পরস্পরে কথা বন্ধ রেখে যাহা করছে,তাহা স্পষ্ট নাজায়েজ ।     
স্বামীর হক স্ত্রী আদায় করছেনা,স্ত্রীর হক স্বামী আদায় করছেনা। এটা নাজায়েজ। 
আল্লাহর কাছে এর কঠিন জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে।
,
প্রশ্নে উল্লেখ আছে যে  ""যেহেতু স্ত্রী এর সাথে সম্পর্ক ভালো নয় তাই স্বামীর মনেও শয়তান সারাক্ষন খারাপ পথে ধাবিত হওয়ার ওয়াসওয়াসা দিচ্ছে""।

সুতরাং দ্রুত স্বামীর জন্য করনীয় হলো প্রথমে শেষ বারের মতো স্ত্রীকে ভালো করে বুঝানো,এটাতে কাজ না হলে  উভয় পক্ষের মুরব্বিদেরকে নিয়ে ফায়সালার জন্য বসুন।  
তাতেও কাজ না হলে তালাক দিয়ে দিন।
,
এক্ষেত্রে যেহেতু আপনাদের গুনাহ হচ্ছে,আর আপনার বড় গুনাহের দিকে ধাপিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে,তাই সামাজিকতার দিকে তাকানো কোনো ভাবেই ঠিক হবেনা।
,
কোনো ভাবেই যদি তাকে মানানো সম্ভব না হয়,বা ২য় বিবাহ করা সম্ভব না হয়,তাহলে তালাক দিতেই হবে।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...