উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
স্ত্রী যদি তালাকের অধিকার পায়,তাহলে স্বামীর আগেই নিজেকে নিজে তালাক দিতে পারবে।
শরয়ী ওযরের ভিতরে এমনটা করা হলে ইসলাম এটাকে সাপোর্ট করে।
ওযর ছাড়া এমনটি করলে যদিও তালাক হয়ে যাবে,তবে স্ত্রী এতে গুনাহগার হবে।
★লক্ষনীয় যে স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিলে তালাক পতিত হবেনা।
স্ত্রীকে বলতে হবে যে আমি স্বামীর দেওয়া ক্ষমতা বলে নিজেকে নিজে তালাক প্রদান করিলাম।
★স্ত্রী তখনি নিজের উপর তালাক পতিত করতে পারে, যখন স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেবার অধিকার প্রদান করে থাকে। এছাড়া স্ত্রী ইচ্ছে করলেই নিজের উপর তালাক পতিত করার অধিকার রাখে না।
এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, বাংলাদেশের আইন অনুপাতে বিয়ের সময় যে কাবিন নামা করা হয়ে থাকে, তাতে বেশ কিছু তথ্য সংযোজিত করা হয়ে থাকে। যার নিচে স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে স্বাক্ষর করতে হয়।
উক্ত সরকারি কাবিননামার ১৮ ও ১৯ একটি ধারা রয়েছে। যাতে স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেবার দিয়েছে কি না? দিলে কী কী শর্তে প্রদান করেছে? এ মর্মে একটি অপশন রয়েছে।
যদি উক্ত প্যারায় স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক পতিত করার অধিকার প্রদান করে থাকে, তা জেনেশুনে স্বামী উক্ত কাবিন নামার নিচে সাইন করে থাকে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী নিজের উপর তালাক পতিত করার অধিকারপ্রাপ্তা হয়। তখন উপরোক্ত ধারা অনুপাতে স্বামী লিখিত তালাকের শর্ত পাওয়া গেলে স্ত্রী নিজের উপর তালাক পতিত করার অধিকার পাবে।
যদি শর্ত না পাওয়া যায়, কিংবা স্বামী স্ত্রীকে তালাকের অধিকার প্রদান না করে থাকে, তাহলে স্ত্রী নিজের উপর তালাক পতিত করার অধিকার পায় না।
উপরোক্ত শরয়ী বিধান অনুপাতে স্ত্রী যদি স্বামী কর্তৃক তালাক দেওয়ার ক্ষমতা পায়,তাহলে স্ত্রীকে বলতে হবে যে আমি স্বামীর দেওয়া ক্ষমতা বলে নিজেকে নিজে তালাক প্রদান করিলাম।
তাহলে তালাক পতিত হবে।
অন্যথায় তালাক পতিত হবেনা।
,
★★এক্ষেত্রে স্বামীর আগে তালাক দিলে তালাক স্ত্রীর তালাক তো পতিত হবেই,সাথে সাথে স্বামী যদি তাকে তালাক দেয়,তাহলে আরেকটি তালাক পতিত হবে।
সব মিলে ২ তালাক পতিত হবে।
আর কেহ যদি এক্ষেত্রে এক তালাক না দিয়ে ২ তালাক দেয়,তাহলে সব মিলে ৩ তালাক পতিত হয়ে স্ত্রী পুরোপুরি স্বামীর জন্য হারাম হয়ে যাবে।
,
শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত তাকে আর বিবাহ করা যাবেনা।
তাকে নিয়ে ঘর সংসার করা হারাম হবে।
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ
رَجُلٌ اسْتَكْتَبَ مِنْ رَجُلٍ آخَرَ إلَى امْرَأَتِهِ كِتَابًا بِطَلَاقِهَا وَقَرَأَهُ عَلَى الزَّوْجِ فَأَخَذَهُ وَطَوَاهُ وَخَتَمَ وَكَتَبَ فِي عُنْوَانِهِ وَبَعَثَ بِهِ إلَى امْرَأَتِهِ فَأَتَاهَا الْكِتَابُ وَأَقَرَّ الزَّوْجُ أَنَّهُ كِتَابُهُ فَإِنَّ الطَّلَاقَ يَقَعُ عَلَيْهَا(الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، رد المحتار، كتاب الطلاق، مطلب فى الطلاق بالكتابة-4/456، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
যার সারমর্ম হলো কেহ যদি কাহারো দ্বারা তালাক লিখে নিজ স্ত্রীর কাছে পত্র পাঠায়,এবং স্ত্রীর কাছে স্বীকার করে যে এটা তাহারই পত্র।
তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
وفي رد المحتار- وأنواعه ثلاثة : تفويض ، وتوكيل ، ورسالة وألفاظ التفويض ثلاثة : تخيير وأمر بيد ، ومشيئة .
( قال لها اختاري أو أمرك بيدك ينوي ) تفويض ( الطلاق ) لأنها كناية فلا يعملان بلا نية ( أو طلقي نفسك فلها أن تطلق في مجلس علمها به ) مشافهة أو إخبارا ( وإن طال ) يوما أو أكثر ما لم يوقته ويمضي الوقت قبل علمها ( ما لم تقم ) لتبدل مجلسها حقيقة ( أو ) حكما بأن ( تعمل ما يقطعه ) مما يدل على الإعراض لأنه تمليك فيتوقف على قبول في المجلس لا توكيل ، فلم يصح رجوعه ، حتى لو خيرها ثم حلف أن لا يطلقها فطلقت لم يحنث في الأصح ( لا ) تطلق ( بعده ) أي المجلس ( إلا إذا زاد ) في قوله طلقي نفسك وأخواته ( متى شئت أو متى ما شئت أو إذا شئت أو إذا ما شئت ) فلا يتقيد بالمجلس ( ولم يصح رجوعه ) لما مر (رد المحتار-كتاب الطلاق، باب تفويض الطلاق-4/452
যার সারমর্ম হলো স্ত্রীকে যদি স্বামী তালাক প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করে,তাহলে সে চাইলে নিজেকে নিজে তালাক দিতে পারবে।
এটাকে তালাকে তাফবিজ বলে।
এভাবে বলবে যে আমি স্বামী প্রদত্ত ক্ষমতা বলে নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান করিলাম।
এটা যদি সময়ের সাথে নির্দিষ্ট থাকে,তাহলে সেই সময়ের ভিতরেই শুধু তার ইখতিয়ার থাকবে।
পরে আর এই সুযোগ থাকবেনা।
আর যদি সময়ের সাথে নির্দিষ্ট না করে,তাহলে যেকোনো সময় স্ত্রী উল্লেখিত পদ্ধতিতে তালাক দিতে পারবে।