বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
কেরাত ধীরগতিতে পড়তে আল্লাহ তা'আলা নির্দেশ দিয়েছেন।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا
কোরআন আবৃত্তি করুন সুবিন্যস্ত ভাবে ও স্পষ্টভাবে।(সূরা মুজ্জাম্মিল-৪)
কুরআন তেলাওয়াত এমন ধীরগতিতে পড়তে হবে,যাতেকরে তার অর্থকে সহজে অনুধাবন করা যায়।আল্লাহ তা'আলা বলেন,
كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِيَدَّبَّرُوا آيَاتِهِ وَلِيَتَذَكَّرَ أُوْلُوا الأَلْبَابِ
এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।(সূরা সোয়াদ-২৯)
নামায প্রশান্তির সাথে ধীরগতিতে পড়াই নিয়ম।যাতেকরে তার প্রত্যেকটা রুকুন আদায় হয়।দ্রুতগতিতে নামায পড়া সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে।
'আলা ইবনু 'আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত।
عَنِ الْعَلَاءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ فِي دَارِهِ بِالْبَصْرَةِ، حِينَ انْصَرَفَ مِنَ الظُّهْرِ، وَدَارُهُ بِجَنْبِ الْمَسْجِدِ، فَلَمَّا دَخَلْنَا عَلَيْهِ، قَالَ: أَصَلَّيْتُمُ الْعَصْرَ؟ فَقُلْنَا لَهُ: إِنَّمَا انْصَرَفْنَا السَّاعَةَ مِنَ الظُّهْرِ، قَالَ: فَصَلُّوا الْعَصْرَ، فَقُمْنَا، فَصَلَّيْنَا، فَلَمَّا انْصَرَفْنَا، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «تِلْكَ صَلَاةُ الْمُنَافِقِ،يَجْلِسُ يَرْقُبُ الشَّمْسَ حَتَّى إِذَا كَانَتْ بَيْنَ قَرْنَيِ الشَّيْطَانِ، قَامَ فَنَقَرَهَا أَرْبَعًا، لَا يَذْكُرُ اللهَ فِيهَا إِلَّا قَلِيلًا»
তিনি বলেন, তিনি একদিন আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) এর বসরাস্থ বাড়ীতে গেলেন। আর বাড়ীটি মসজিদের পাশেই অবস্থিত ছিল। তিনি (আলা ইবনু আবদুর রহমান) তখন সবেমাত্র যুহরের সালাত আদায় করছেন। আলা ইবনু ‘আবদুর রহমান বলেনঃ আমরা তার (আনাস ইবনু মালিকের) কাছে গেলে তিনি আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কি আসরের সালাত আদায় করছ? আমরা জবাবে তাকে বললাম, আমরা এই মাত্র যুহরের সালাত আদায় করে আসলাম। এ কথা শুনে তিনি বললেনঃ যাও আসরের সালাত আদায় করে আসো। এরপর আমরা গিয়ে আসরের সালাত আদায় করে তার কাছে ফিরে আসলে তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ ঐ সালাত হলো মুনাফিকের সালাত যে বসে বসে সূর্যের প্রতি তাকাতে থাকে আর যখন তা অস্তপ্রায় হয়ে যায় তখন উঠে গিয়ে চারবার ঠোকর মেরে আসে। এভাবে সে আল্লাহকে কমই স্মরণ করতে পারে।(সহীহ মুসলিম-৬২২)
ইমাম নববী রাহ. উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় বলেন,
قال النووي في شرحه: تَصْرِيح بِذَمِّ مَنْ صَلَّى مُسْرِعًا بِحَيْثُ لَا يُكْمِل الْخُشُوع وَالطُّمَأْنِينَة وَالْأَذْكَار ، وَالْمُرَاد بِالنَّقْرِ : سُرْعَة الْحَرَكَات كَنَقْرِ الطَّائِرِ. اهـ ,
এখানে নিন্দা জ্ঞাপন করা হচ্ছে তাদেরকে যারা খুশু খুজু এবং আল্লাহর যিকির ব্যতীত নামায পড়ে।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
নামাযের ফরজ ওয়াজিব গুলো আদায় না হলে নামাযই আদায় হবে না।আর ফরয ওয়াজিব গুলি আদায় পূর্বক কেউ যদি সুন্নত মুস্তাহাব কে পরিত্যাগ করে দ্রুতগতিতে নামাযকে সম্পন্ন করে নেয়,তাহলে তার নামাযকে বাতিল বা ফাসিদ বলা যাবে না।তবে সুন্নাহ সম্বলিত নামাযও বলা যাবে না।
ফরয ওয়াজিব সুন্নত মুস্তাহাব আদায় পূর্বক কেউ যদি তারাতারি নামাযকে পড়ে নেয়,তাহলে তাকে নিন্দা করা যাবে না।
তবে ধীরগতিতে প্রশান্তচিত্তে নামায আদায় করাই তাকওয়ার দাবী।
সুতরাং
আপনার উচিৎ এত তারাতারি পড়বেন না যে নামাযের সুন্নত মুস্তাহাব গুলোকে আদায় করা যায় না।বরং সুন্নত মুস্তাহাব গুলোকে আদায় করে সামান্য দ্রুতগতিতে পড়ে নিবেন।আল্লাহ আমাদের সবার নামাকে কবুল করুক।আমীন।