আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
843 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)
২)স্বামী তার স্ত্রীকে মারধর করার পরে স্ত্রী যদি স্বামী থেকে পৃথক থাকে, তবে তিনদিনের বেশি একজন মুসলিম অপর মুসলিমের সাথে কথা বন্ধ রাখার যে গুনাহ্ হয়, সেটা হবে কি এক্ষেত্রে?

৩) স্বামী তার স্ত্রীকে মারধর করার পরে স্ত্রী যদি স্বামী থেকে পৃথক থেকে কথা বন্ধ রেখে স্বামীকে মানসিক কষ্টে না ভুগিয়ে রাখে, তবে প্রতিশোধ গ্রহণ না করে ক্ষমা করে দেবার যে ফজিলত সেটাও কি এখানে ধর্তব্য হবে?

৪) যদি মানসিক কষ্টে ভোগাতে চায় তবে এক্ষেত্রে গুনাহ্ হবে কি? যেহেতু সে স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি জুলুম করেছে।

৫) এই নির্যাতন করা সত্ত্বেও স্ত্রী স্বামীর সাথে নিজে থেকে গিয়ে কথা বলে ভালো হতে চাইলে সন্তানরা যদি নিষেধ করে, এতে কি সন্তানদের গুনাহ্ হবে?

৬) শ্বাশুড়ির স্পর্শে যদি মেয়ে জামাইয়ের মধ্যে বিন্দু পরিমাণও কামভাব জাগ্রত হয়,  তবে কি মেয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তালাক হয়ে যাবে?  মেয়ের সংসার করা আর বৈধ হবে কি?

৭) তেমনিভাবে পুত্রবধূর স্পর্শে  যদি শ্বশুড়ের মধ্যে কামভাব জাগ্রত হয় বিন্দু পরিমাণও, তবে কি সেই মেয়ের সাথে সংসার করা ছেলের জন্য বৈধ হবে?
৮) জ্ঞাতসারে কারো দ্বারা কারোর কোনভাবে সম্মানহানিমূলক কাজ হলে সেটা কি গুনাহ্ হবে?

৯) কোন নন মাহরাম ছেলেকে যদি কোন মেয়ে তার ব্যাপারে কোন বিষয় কারো সাথে বলতে নিষেধ করে, তবুও সেই ছেলে তার মাকে বলে দেয়, এমতাবস্থায় এতে  সেই ছেলের কি খিয়ানত করার গুনাহ্ হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم  

(০১) 
শরীয়তের বিধান হলো  কোন চরিত্রহীনা নারীর সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ করা উচিত নয়। অনুরূপ যে নারীরা অন্য নারীর রূপ কোন বন্ধু বা স্বামীর নিকটে বর্ণনা করে তাদের সামনে বেপর্দা হওয়া নিষিদ্ধ। আর অমুসলিম মহিলাদের সামনে হাত ও চেহারা ছাড়া অন্যান্য অঙ্গ খোলা বৈধ নয়।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতঃ কোনো নারীকে  যদি প্রতিনিয়ত  দৈনিক ৪০ জন নন মাহরাম পুরুষ বেপর্দা অবস্থায় দেখে, তিবে সেই নারীর সামনেও অপর মুসলিম নারীর আপাদমস্তক পর্দা করা ফরজ বলে কোনো কিতাবে  পাইনি।
তবে যেই সমস্ত মহিলাদেরকে ফাহেসাহ মহিলা বলেই হয়তোবা কেহ মাসয়ালায়াটি বলেছেন।
তাই তাদের সামনেও বেপর্দা না হওয়া উচিত।
এটাই সতর্কতা।
,
(০২) স্বামী তার স্ত্রীকে মারধর করার পরে স্ত্রী যদি স্বামী থেকে পৃথক থাকে, তবে তিনদিনের বেশি একজন মুসলিম অপর মুসলিমের সাথে কথা বন্ধ রাখার যে গুনাহ্ হয়, সেটা হবে। 
কারন এটি দুনিয়াবী কারনে ঝগড়া। 

হাদীস শরীফে এসেছে  
عن أبي أیوب رضي اللّٰہ عنہ أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم قال: لا یحل لمسلم أن یہجر أخاہ فوق ثلاث لیال یلتقیان فیعرض ہذا و یعرض خذت وخیرہما الذي یبدأ بالسلام۔ (رواہ مالک في الموطا ۲؍۹۰۷، صحیح البخاري رقم: ۶۲۳۷، الترغیب و الترہیب رقم: ۴۱۸۹)
যার সারমর্ম হলো কোনো মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের সাথে ৩ দিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা,সম্পর্ক ছিন্ন রাখা জায়েজ নেই।   
,
قال أبو داؤد: إذا کانت الہجرۃ للّٰہ فلیس من ہذا بشيء، فإن النبي صلی اللّٰہ علیہ وسلم ہجر بعض نسائہ أربعین یوما، وابن عمر ہجر إبنا لہ إلی أن مات۔ (الترغیب والترہیب مکمل ۵۸۵ بیت الأفکار الدولیۃ)
আবু দাউদ রহঃ বলেন যদি কথা বন্ধ করা,সম্পর্ক ছিন্ন করা আল্লাহর জন্যই হয়ে থাকে,তাহলে জায়েয আছে।
কেননা রাসুল সাঃ কিছু স্ত্রীদের সাথে আল্লাহর জন্যই কথা বন্ধ রেখেছিলেন।     
,
,
(০৩) স্বামী তার স্ত্রীকে মারধর করার পরে স্ত্রী যদি স্বামী থেকে পৃথক থেকে কথা বন্ধ রেখে স্বামীকে মানসিক কষ্টে না ভুগিয়ে রাখে, তবে প্রতিশোধ গ্রহণ না করে ক্ষমা করে দেবার যে ফজিলত সেটাও এখানে ধর্তব্য হবে।
এখানে সে অনেক ফজিলত পাবে।
ক্ষমা করার ফজিলত, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ফজিলত ইত্যাদি।     
,
(০৪) 
যদি মানসিক কষ্টে ভোগাতে চায় তবে এক্ষেত্রে
মানসিক কষ্ট দ্বারা উদ্দেশ্য কি?
যদি উদ্দেশ্য  হয় যে আইনি মোকাবেলা করবেন,তাহলে তা জায়েজ আছে।
যদি সমাজের কাছে বিচার দেন,তাও জায়েজ আছে।   
তবে ৩ দিনের বেশি কথা বলা বন্ধ রাখা গুনাহ হবে।

(০৫) এই নির্যাতন করা সত্ত্বেও স্ত্রী স্বামীর সাথে নিজে থেকে গিয়ে কথা বলে ভালো হতে চাইলে সন্তানরা যদি নিষেধ করে, এতে  সন্তানদের গুনাহ্ হবে।

(৬.৭)
শ্বাশুড়ির স্পর্শে যদি মেয়ে জামাইয়ের মধ্যে বিন্দু পরিমাণও কামভাব জাগ্রত হয়,  তবে  মেয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তালাক হয়ে যাবেনা

তেমনিভাবে পুত্রবধূর স্পর্শে  যদি শ্বশুড়ের মধ্যে কামভাব জাগ্রত হয় বিন্দু পরিমাণও, তবে  সেই মেয়ের সাথে সংসার করা ছেলের জন্য অবৈধ হবেনা

শরীয়তের বিধান হলো প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে  শাশুড়ী   জামাই এর অথবা পুত্রবধু শশুরের সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়।

স্পর্শ করার পর পুরুষের  উত্তেজনা যদি এমন হয় যে
তার স্পর্শের সাথে সাথে তার পুরুষের লিঙ্গ দাড়িয়ে যায়,

আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর যদি উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পায়,তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবে। 

তাহলে মেয়ে স্বামীর জন্য সারাজীবনের জন্য হারাম হয়ে যাবে।    
তাদের মাঝে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে।

যদিও এখানে স্পর্শ করেছে পুত্রবধু বা শাশুড়ী ,উত্তেজনা অনুভব করেছে জামাই বা শশুর ।

কারন ২ জনের এক জন বর্ণিত উত্তেজনা  অনুভব করলেই হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবে।    
,
আর যদি এমন উত্তেজনা অনুভব না করে,তাহলে  হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবেনা।   

فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة

وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)
যার সারমর্ম হলো 

সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى

وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)

যার সারমর্ম হলো

পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হলোঃ লিঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
 স্পর্শ করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। সেই সাথে স্পর্শ করার আগে বা শেষে, হাত ছেড়ে দেওয়ার আগে বা পর যদি উত্তেজনা অনুভূত হয় তাহলেও নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।
,
বিস্তারিত জানুন

,
(০৮) জ্ঞাতসারে কারো দ্বারা কারোর কোনভাবে সম্মানহানিমূলক কাজ হলে সেটা  গুনাহ্ হবে।

৯) কোন নন মাহরাম ছেলেকে যদি কোন মেয়ে তার ব্যাপারে কোন বিষয় কারো সাথে বলতে নিষেধ করে, তবুও সেই ছেলে তার মাকে বলে দেয়, এমতাবস্থায় এতে  সেই ছেলের খিয়ানত করার গুনাহ্ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...