আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
80 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম।


এমন একটি হাদীস আছে শুনেছি- " যে ব্যাক্তি শুভ-অশুভ বিশ্বাস করেনা, উল্কি আঁকেনা, ঝাড়ফুঁক এর আশ্রয় নেয়না, সে ঐ সত্তর হাজার ব্যাক্তির অন্তর্ভুক্ত হবে, যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে এবং তার প্রত্যেকের সাথে আরও সত্তর হাজার অন্তর্ভুক্ত হবে।"


প্রশ্ন হচ্ছে,
১)হাদীস টি যদি সহীহ হয়, তাহলে এটা কি শরীয়াহ সম্মত ঝাড়ফুঁক এর ক্ষেত্রেও গণ্য হবে?

২) কেউ যদি অতীত জীবনে এই হাদিস না জানা অবস্থায় এগুলো(ঝাড়ফুঁক নেয়া বা দেয়া) করে থাকে, তাহলে কি সে চিরতরে এই ৭০ হাজারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে?

৩) আমার পরিবারে অনেক কুসংস্কার ও শিরকি বিশ্বাস লালন করে(আল্লাহ হেদায়েত দিন), প্রায়ই জোরজবরদস্তি করে তাদের এসব মানার জন্য, দ্বীনের বুঝ কিছু আসার পর থেকে তাবিজ-কবচের আশ্রয় না নিলেও একদিন উক্ত হাদীস টি ভুলে যাওয়ায়, আর মা এর পীড়াপীড়ি তে আমার উপর কিছুটা মর্মাহত হয়ে কথা বলায় আমি পানিপড়া পান করে ফেলেছি। তাহলে কি আমি আর এই ৭০ হাজারের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবো না কখনো??


৪) তাবিজ-কবচের মধ্যে শিরক হবার সম্ভাবনা থাকলেও শরীয়াহ সম্মত ঝাড়ফুঁক তো জায়েজ, যারা এই ঝাড়ফুঁক করেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তারাও কি এই ৭০ হাজারের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না??


জাযাকুমুল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (721,400 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/9426 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেছেন যে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার সামনে সকল উম্মাতকে পেশ করা হয়েছিল। তখন আমি দেখেছি) দু’একজন নবী পথ চলতে লাগলেন এমতাবস্থায় যে, তাঁদের সঙ্গে রয়েছে লোকজনের ছোট ছোট দল। কোন কোন নবী এমনও আছেন যাঁর সঙ্গে একজনও নেই। অবশেষে আমার সামনে তুলে ধরা হল বিশাল দল। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এটা কী? এ কি আমার উম্মাত? উত্তর দেয়া হলঃ না, ইনি মূসা আঃ) এবং তাঁর কওম। আমাকে বলা হলঃ আপনি ঊর্ধ্বাকাশের দিকে তাকান। তখন দেখলামঃ বিশাল একটি দল যা দিগন্তকে ঢেকে রেখেছে।
তারপর আমাকে বলা হলঃ আকাশের দিগন্তসমূহ ঢেকে দিয়েছে এমন একটি বিশাল দলের প্রতি লক্ষ্য করুন। তখন বলা হলঃ এরা হল আপনার উম্মাত। আর তাদের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে চলে গেলেন। উপস্থিতদের কাছে কথাটির কোন ব্যাখ্যা প্রদান করলেন না। যে বিনা হিসাবের লোক কারা হবে?) ফলে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে তর্ক বিতর্ক শুরু হল। তারা বললঃ আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর অনুসরণ করে থাকি। সুতরাং আমরাই তাদের অন্তর্ভুক্ত। কিংবা তারা হল আমাদের সে সকল সন্তান-সন্ততি যারা ইসলামের যুগে জন্মগ্রহণ করেছে। আর আমাদের জন্ম হয়েছে জাহিলী যুগে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সংবাদ পৌঁছলে তিনি বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ তারা হল সে সব লোক যারা মন্ত্র পাঠ করে না, পাখির মাধ্যমে কোন কাজের ভাল-মন্দ নির্ণয় করে না এবং আগুনের সাহায্যে দাগ লাগায় না। বরং তারা তো তাদের রবের উপরই ভরসা করে থাকে। তখন উক্কাশা ইবনু মিহসান বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! তাদের মধ্যে কি আমি আছি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আরেকজন দাঁড়িয়ে বললঃ তাদের মধ্যে কি আমিও আছি? তিনি বললেনঃ ‘উক্কাশাহ এ সুযোগ তোমার আগেই নিয়ে নিয়েছে। [৩৪১০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫২৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৮৭)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
এই হাদীসে যে বলা হচ্ছে, যারা মন্ত্র পাঠ করে না,তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে।এর অর্থ এ নয় যে,বৈধ রুকইয়া করলে তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে না।বরং বলা হচ্ছে,যারা বিভিন্ন তন্ত্র মন্ত্র দ্বারা রুকইয়াহ করবে,তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে না।অথবা অর্থ এও হতে পারে যে,যারা রুকইয়ার প্রার্থনা করবে না,তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে।

কুরআন হাদীসের বাণী দ্বারা রুকইয়াহ জায়েয।রুকইয়াহ জিবরীল আলাইহিস সালাম করেছেন, রাসূলুল্লাহ করেছেন, সাহাবায়ে কিরাম করেছেন, এবং অন্যান্য সালাফে সালহীনরাও করেছেন। সুতরাং শরিয়তের সীমা লঙ্ঘন না হলে, এটা নিয়ে আপত্তির কিছু নাই, সংশয়েরও কিছু নাই।

সুতরাং বলা যায় যে,
আক্বিদা বিশুদ্ধ রেখে চিকিৎসা হিসেবে বৈধ কালাম দ্বারা তাবিজ ব্যবহার করা বৈধ রয়েছে-
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://ifatwa.info/226

(২)
তাওবাহ করে নিলে বিনা হিসাবে জান্নাতের অফার থেকে কেউ বঞ্চিত হবে না,যদি সে অতীতে অবৈধ কালাম দ্বারা রুকইয়াহ গ্রহণ করে থাকে।

(৩)
পানি পড়া পান করাতে কোনো সমস্যা নেই।

(৪)
জ্বী, বৈধ ঝাড়ফুঁক করাতে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...