হুজুর এক্ষেত্রে কি তালাক হবে?

Question

আসসালামুয়ালাইকুম ওরাহমাতুল্লা হুজুর।আমার কিছু প্রশ্ন ছিল।কস্ট করে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েন পয়েন্ট করে।তখন বুঝব ভাল করে।

১।হুজুর আমার আর আমার স্বামীর কোনদিন তালাকের ব্যপারে কথা হয়েছে কিনা মনে নেই।স্বামীর ও মনে নেই।আমার ও  মনে নেই।কোন বান্ধবীকেও বলেছে কিনা জানি না।আমার কি বান্ধবী কে জিগ্যেস করা উচিত? যদি ও ভুল উত্তর দেয় তাহলে?

২।যদি স্বামি বলে অপশন ২টা হয় যে কোন একটা পছন্দ করতে হবে।একটা হয় আমি অন্যটা তুমার পরিবার।২ টা একসাথে পাবে না।যদি আমি পরিবার পছন্দ করি তাহলে কি তালাক হবে? ওনি তহ তালাকের কথা বা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে নি।বললে হয়ত এর পরে বলত তখন কথার সময় বলে নি।

৩।স্বামি ও স্ত্রীর বিয়ে হয়েছে কিন্তু এখনও সংংসার শুরু করে নি।স্ত্রী যদি রাগের মাথায় মেসেজে বলে যাব না তুমার বাসায়, সংংসার করব না।স্বামীও যদি বলে আসিও না,করিও না।মানে ভবিষ্যৎ কালের শব্দে। আর আগের কথা তহ স্বামীকে এখন জিগ্যেস করলে বলে নিয়ত ছিল না তালাকের।এতে কি তালাক হবে?

৪।স্ত্রী যদি মেসেজে স্বামিকে বলে আমাকে তালাক দাও আমি চলে যাব বা স্ত্রী যদি বলে তুমাকে ৩ তালাক দিলাম আমি চলে যাব।আর স্বামীও যদি মেসেজে বলে চলে গেলে যাওগা।মানে আমার ইচ্ছে যাব কি যাব না।যদি তালাক দিছি না বলে বা নিজ থেকে যাও না বলে।তাহলে কি তালাক হবে?

৫।আমার বিয়েটা মা মেনে নিচ্ছিল না।আমি স্বামীকে বলতেছি বাবা কি বলে দেখি।স্বামীও অনেক কান্নাকাটি করতেছিল আমিও।কারন আমরা কেউ ছাড়তে চাই না ।স্বামী বলতেছিল তুমি যদি তুমার বাবা যা বলে তাই কর।তাহলে তুমার বাবা যদি না মানে আল্লাহর  কসম তাহলে ছেড়ে  দিব।তুমার সুখের জন্য সব করব।আল্লাহর হাজির নাজির করে বলতেছি(শপথ) কোনদিন ক্ষতি করব না তুমার।ফোন ও করব না এরপর।এমনভাবে চলে যাব আর আসব না।মানে এসব বাবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বলেছিল।বাবা সিদ্ধান্ত নিছে যে সেখানে কিছু বলে নি সব আমার ওপর ছেড়ে দিছে।এটাও বলেছে বাবা তার মানি এই না আমি মেনে নিছি।মানে পড়ালেখা শেষ হলে আমি যেটা বুঝি সেটা করতে বলেছে।হুজুর যদি বাবা না মানত তাহলে কি আমাদের তালাক হত?আর এখন আমাদের সম্পর্ক ঠিক আছে?

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِن تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ وَإِن تَسْأَلُوا عَنْهَا حِينَ يُنَزَّلُ الْقُرْآنُ تُبْدَ لَكُمْ عَفَا اللَّهُ عَنْهَا ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ حَلِيمٌ
হে মুমিণগন, এমন কথাবার্তা জিজ্ঞেস করো না, যা তোমাদের কাছে পরিব্যক্ত হলে তোমাদের খারাপ লাগবে। যদি কোরআন অবতরণকালে তোমরা এসব বিষয় জিজ্ঞেস কর, তবে তা তোমাদের জন্যে প্রকাশ করা হবে। অতীত বিষয় আল্লাহ ক্ষমা করেছেন আল্লাহ ক্ষমাশীল, সহনশীল।(সূরায়ে মায়েদা-১০১-১০২)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : ما نهيتكم عنه ، فاجتنبوه ، وما أمرتكم به فأتوا منه ما استطعتم ، فإنما أهلك الذين من قبلكم كثرة مسائلهم واختلافهم على أنبيائهم . رواه البخاري ومسلم .
আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি যে,তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে যে সমস্ত জিনিষ থেকে নিষেধ করেছি, সে সমস্ত জিনিষ থেকে বিরত থাকো,এবং যে সমস্ত জিনিষের আদেশ করেছি, যথাসম্ভব সেগুলো পালন করার চেষ্টা করো। তোমাদের পূর্ববর্তীগণ তাদের অধিক প্রশ্ন এবং মতপার্থক্যর কারণেই ধংস হয়েছে।(বোখারী-মুসলিম)

https://www.ifatwa.info/1379 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
তালাকের ওয়াসওয়াসা আসলে মাথা নাড়ালে তালাক পতিত হবে না।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ : َ ( ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﺠَﺎﻭَﺯَ ﻟِﻲ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﻭَﺳْﻮَﺳَﺖْ ﺑِﻪِ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻞْ ﺃَﻭْ ﺗَﻜَﻠَّﻢ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার খাতিরে আমার উম্মতের অন্তরে চলে আসা ওয়াসওয়াসা(শয়তানি প্ররোচনা) বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ/শাস্তি প্রদাণ করবেন না।যতক্ষণ না সে কথা বা কাজের মাধ্যমে সেটাকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে। (সহীহ বোখারী-২৩৯১,সহীহ মুসলিম-১২৭)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনার প্রত্যেকটা পয়েন্ট পড়েছি, কোনো পয়েন্ট অনুযায়ীই তালাক পতিত হবে না।

আপনি এ বিষয়ে আর নতুন করে প্রশ্ন না করে, বরং কমেন্ট করুন।প্রয়োজনে আমার সাথে মুবাইলে কথা বলবেন।

Comments

উত্তর দেয়া হয়েছে।