আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
235 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (27 points)
edited by

১. রাসুল কে ভালবাসা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত এটা জানি,কিন্তু আজকাল যেমন দেখা যায় বেশিরভাগ লোক ই রাসুলের সুন্নাহ পালন,তা অনুসারে জীবন যাপনের নাম গন্ধ নেই কিন্তু বড় বড় কথা বলে,নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে বিভিন্ন পোস্টে দিয়ে রাখে রাসুল কে ভালবাসি,রাসুল আমার সব এই টাইপ কথা।

আমি রাসুলের সুন্নাহ মেনে চলার চেষ্টায় আছি,কিন্তু এক হাদিস অনুসারে রাসুল যেমন বলেছেন নিজের বাবা মা,সন্তান-স্ত্রী এবং দুনিয়াবি সকল কিছুর চেয়েও রাসুল কে বেশি ভালো না বাসলে মুমিন হওয়া যাবে না,আমি এখনো এ অবস্থার ধারে কাছেও নেই,কিন্তু আবার তার মানে এই না যে একেবারেই রাসুলের প্রতি ভালবাসা নেই আমার হৃদয়ে,অবশ্যই আছে, তবে হাদিসের বর্ননা মতে এত বেশি পরিমানে এখনো ভালবাসতে পারিনি । ফলে মাঝে মধ্যে নিজের সাথে নিজে কথা বলার দ্বারা এভাবে বলেছি যে রাসুল কে ভালবাসার পথে আসার চেষ্টা করছি কিন্তু এখনো রাসুল কে আমি পুরোপুরি ভালবাসতে পারি নি,রাসুলকে পুরোপুরি ভালবাসি এই কথা আত্মবিশ্বাসের সাথে বলার অবস্থায় আসিনি,এটা কি ভুল হয়েছে আমার দ্বারা? আমার ঈমানের সাথে সাংঘর্ষিক/বিপরীত হয়ে গিয়েছে কি বিষয়টা?


যদি হয়ে থাকে এখন আমার করণীয় কি?

২. তাফসীরে ইবনে কাসীর খন্ড ২,পৃষ্ঠা ৩৫০ কে সুত্র দেখিয়ে কোন এক কিতাবে এক হাদিস তুলে ধরে বলা হয়েছে রাসুল(সা.) উমর(রাযি) কে বলেছেন তার সত্তার চেয়েও বেশি রাসুল কে ভালো না বাসলে সে খাটি মুমিন হতে পারবে না। (অর্ধেক টা হাদিস বললাম,আমার প্রশ্ন যেটুকু নিয়ে)

 * এ হাদিস টি কি সহিহ?

 *সত্তা অর্থাৎ আল্লাহর চেয়ে রাসুল কে বেশি ভালবাসার বিষয়টি আমার কাছে স্পষ্ট নয়,এ বিষয়টির মুল অর্থ টা বুঝিয়ে বললে সুবিধা হত।

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম   


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ : لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتّى أَكُوْنَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِه وَوَلَدِه وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ (প্রকৃত) মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা, তার সন্তান-সন্ততি এবং অন্যান্য সকল মানুষ হতে প্রিয়তম হই।
(বুখারী ১৫, মুসলিম ৪৪, ইবনু মাজাহ ৬৭, দারেমী ২২৭৮৩, আহমাদ ১২৮১৪)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
এখানে প্রকৃত,পূর্ণাঙ্গ মুমিন হওয়ার কথা উল্লেখ হয়েছে।
বিষয়টি এমন যে কোনো ব্যাক্তির কাছে তার পিতা, তার সন্তান-সন্ততি এবং অন্যান্য সকল মানুষ হতে রাসুলুল্লাহ সাঃ কে প্রিয়তম মনে না হয়,তাহলে তার ঈমান পূর্ণাঙ্গ হবেনা,অপূর্ণাঙ্গ থেকে যাবে।

বিষয়টি এমন নয় যে সে ঈমানদার হবেনা।
এটি ঠিক নয়।

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়টা  আপনার ঈমানের সাথে সাংঘর্ষিক/বিপরীত হয়ে যায়নি।

(০২)
 ওমর রা.-এর উক্ত ঘটনা হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
 আব্দুল্লাহ ইবনে হিশাম রা. বলেন

كُنّا مَعَ النّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ وَهُوَ آخِذٌ بِيَدِ عُمَرَ بْنِ الخَطّابِ، فَقَالَ لَهُ عُمَرُ: يَا رَسُولَ اللهِ، لَأَنْتَ أَحَبّ إِلَيّ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ إِلّا مِنْ نَفْسِي، فَقَالَ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: لاَ، وَالَذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، حَتّى أَكُونَ أَحَبّ إِلَيْكَ مِنْ نَفْسِكَ، فَقَالَ لَهُ عُمَرُ: فَإِنّهُ الآنَ، وَاللهِ، لَأَنْتَ أَحَبّ إِلَيّ مِنْ نَفْسِي، فَقَالَ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: الآنَ يَا عُمَرُ!

একদিন আমরা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলাম। নবীজী ওমর রা.-এর হাত ধরা ছিলেন। ওমর রা. বলে উঠলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমার কাছে সবকিছু থেকে প্রিয়, তবে আমার জান ছাড়া। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না ওমর, এতে হবে না। যে সত্তার হাতে আমার জান তাঁর কসম! (ততক্ষণ পর্যন্ত তুমি পূর্ণাঙ্গ মুমিন হতে পারবে না,) যতক্ষণ না আমি তোমার কাছে তোমার জানের চেয়েও প্রিয় না হই। পরক্ষণেই ওমর রা. বললেন, হাঁ এখন তা হয়েছে; আল্লাহর কসম! (এখন থেকে) আপনি আমার কাছে আমার জানের চেয়েও প্রিয়। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হাঁ ওমর! এখন হয়েছে। সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৬৩২

★হাদীসের হুকুম সহীহ।

★এখানে সত্তা অর্থাৎ আল্লাহর চেয়ে রাসুল কে বেশি ভালবাসা নয়।
বরং সত্তা মানে নিজের জান।
সুতরাং নিজের জানের চেয়ে রাসুল কে বেশি ভালবাসতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...