আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
150 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ। আলহামদুলিল্লাহ কয়েকটি  সরকারি হাসপাতালে নবজাতক শিশু দের জন্য SCANU নামে নতুন ইউনিট শুরু হয়েছে।আমার সেখানে ডিউটি ছিল,আমি অবজারভ করলাম,সেখানে অনেক বাচ্চার মা থাকে না(সিজারিয়ান সেকশন এর জন্য অন্য ওয়ার্ড এ থাকে বা অন্য হাসপাতালে ই থাকে),আবার কিছু মা এর বুকে দুধ আসে না,সেক্ষেত্রে তারা অন্য মা এর কাছ থেকে দুধ খাওয়ায়।কিন্তু দুঃখের বিষয় হল,তারা এ ব্যাপারটা খুবই স্বাভাবিক ভাবে নিয়েছে,তাদের কোন দুধ মাতা সম্পর্কে কোন গুরুত্ব নেই,আর আমাদের সিস্টার বা ওয়ার্ড বয়,খালা কেউই এ ব্যাপারে কিছু বলে না।আরও ভয়ংকর ব্যাপার যেটা,বাচ্চাদের নাকে নল(এনজি টিউব) তে দুধ দেয়ার সময়,তারা কোন টোকেন রাখে না,দু একজনের দুধ নিয়ে সব বাচ্চাকে এনজি দিয়ে দেয়,এ ব্যাপারে তো রোগীর লোক আরোই জানে না যে এনজি দিয়ে মায়ের দুধ দেয়া হয়।আমাদের কয়েকজন সিস্টার হিন্দু,তাদের কথা বাদ দিলাম,মুসলিম সিস্টার গুলো ও এ ব্যাপারে খেয়াল রাখে না।আজকে আমি স্যার এর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি,তিনি আমাকে বললেন যে দু একবার খেলে নাকি সমস্যা নাই,এরকম কোন হাদিস নাকি তিনি পড়েছেন।আমি স্যার কে বলে এসেছি যে আমি জেনে আপনাকে জানাব। স্যার দুধ মা এর লিস্ট করতে রাজি হয়েছেন,চেষ্টা করবেন বলেছেন,আমি জানতে চাচ্ছি এনজি দিয়ে যে অন্য মা এর দুধ দেয়া হচ্ছে,আবার সেটার কোন ডকুমেন্টস রাখা হচ্ছে না,তাহলে আমি একা কি করতে পারি?আজকে সবাইকে ব্যাপার টা বলে এসেছি।স্যার আমাকে আর একটা সমাধান বলেছেন,হিন্দু কোন মা এর কাছে খেলে হয়।ইসলাম এই ব্যাপার এ কি বলে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


শরীয়তের বিধান হলো যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এক ফোটা দুধ বা তার চেয়েও কম দুধ বাচ্চার পেটে চলে যায়,তাহলেই মাহরাম হয়ে যাবে। 
এটাই হানাফি মাযহাব সহ জমহুরদের মত। 

সুরা নিসার ২৩ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

৪:২৩ حُرِّمَتۡ عَلَیۡکُمۡ اُمَّهٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ وَ عَمّٰتُکُمۡ وَ خٰلٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُ الۡاَخِ وَ بَنٰتُ الۡاُخۡتِ وَ اُمَّهٰتُکُمُ الّٰتِیۡۤ اَرۡضَعۡنَکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ مِّنَ الرَّضَاعَۃِ وَ اُمَّهٰتُ نِسَآئِکُمۡ وَ رَبَآئِبُکُمُ الّٰتِیۡ فِیۡ حُجُوۡرِکُمۡ مِّنۡ نِّسَآئِکُمُ الّٰتِیۡ دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ ۫ فَاِنۡ لَّمۡ تَکُوۡنُوۡا دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ ۫ وَ حَلَآئِلُ اَبۡنَآئِکُمُ الَّذِیۡنَ مِنۡ اَصۡلَابِکُمۡ ۙ وَ اَنۡ تَجۡمَعُوۡا بَیۡنَ الۡاُخۡتَیۡنِ اِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿ۙ۲۳﴾

তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতাদেরকে, তোমাদের মেয়েদেরকে, তোমাদের বোনদেরকে, তোমাদের ফুফুদেরকে, তোমাদের খালাদেরকে, ভাতিজীদেরকে, ভাগ্নীদেরকে, তোমাদের সে সব মাতাকে যারা তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছে, তোমাদের দুধবোনদেরকে, তোমাদের শ্বাশুড়ীদেরকে, তোমরা যেসব স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছ সেসব স্ত্রীর অপর স্বামী থেকে যেসব কন্যা তোমাদের কোলে রয়েছে তাদেরকে, আর যদি তোমরা তাদের সাথে মিলিত না হয়ে থাক তবে তোমাদের উপর কোন পাপ নেই এবং তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীদেরকে এবং দুই বোনকে একত্র করা(তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে)। তবে অতীতে যা হয়ে গেছে তা ভিন্ন কথা। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। 

★এখানে মাহরামদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বলা হয়েছে,  সে সব মাতাকে যারা তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছে, 
সুতরাং অল্প দুধ করালেও হারাম হয়ে যাবে। 
কেননা কোনো পরিমান নির্দিষ্ট নেই।

وقلیل الرضاع وکثیره سواء في إثبات الحرمة ؛ لأن المنصوص علیه فعل الإرضاع دون العدد. قال اللّٰہ تعالیٰ: وَاُمَّہَاتُکُمُ اللَّاتِيْ اَرْضَعْنَکُمْ
محمود بن أحمد، برهان الدين، الامام، المحیط، 4: 95
সারমর্মঃ অল্প হোক বা বেশি হোক,হুরমত প্রমানিত হওয়ার দিক দিয়ে সমান।  

قیل لابن عمر رضي اللّٰه عنهما إن ابن الزبیر یقول لا تحرم الرضعة ولا الرضعتان. فقال: قضاء اللّٰه تعالیٰ أولیٰ من قضاء ابن الزبیر. قال اللّٰه تعالیٰ: وَاُمَّهٰتُکُمُ اللاَّتِیْ اَرْضَعْنَکُمْ وَاَخَوَاتُکُمْ مِنَ الرَّضَاعَةِ.
فخرالدين الزيلعي، عثمان بن علي، تبیین الحقائق، 2: 631
সারমর্মঃ ইবনে যুবায়ের রাঃ যখন মাসয়ালা বলেছিলেন যে এক বা দুই বার দুধ পানের দ্বারা রাজায়াত প্রমানিত হয়না,তখন ইবনে ওমর রাঃ বলেছেন যে আল্লাহর ফায়সালা ইবনে যুবায়েরের ফায়সালা থেকে সঠিক। 

قلیل الرضاع وکثیره إذا حصل في مدة الرضاع تعلق به التحریم. کذا في الهدایة
نظام الدین و جماعته، الفتاویٰ الهندیة، 1: 342
সারমর্মঃ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দুধ অল্প পরিমান পান করুক বা বেশি পরিমান, তার সাথে হুরমতের সম্পর্ক স্থাপন হবে। 

আরো জানুনঃ  

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত সকল ছুরতে দুধ সম্পর্ক স্থাপন হবে।
আর এটি লিস্ট করে ভালোভাবে জানানো না হলে বিষয়টি অনেক বড় ঝামেলার বিষয় হবে।
পরবর্তীতে তাদের সন্তানাদিদের মাঝে বিবাহ হলে তারা আজীবন যেনার সংসার করবে।
এক্ষেত্রে হিন্দু কোনো মায়ের দুধ করানো হলে সেই হিন্দু মহিলা ঐ সন্তানের দুধ মাতা হবে,তাই এক্ষেত্রেও লিস্ট করতে হবে।
হয়তোবা পরবর্তীতে তার সন্তান মুসলিম হয়ে যেতে পারে,সেক্ষেত্রে সেই পরিবারে বিবাহও হয়ে যেতে পারে।
,
যদি বিষয়টি ক্লিয়ার করে হিসাব রাখা সম্ভব না হয়,হিসেব পুরোপুরি তার আসল মাকে বলা সম্ভব না হয়,বা  সকলের নাম পরিচয় বলা সম্ভব না হয়,তাহলে এ পদ্ধতি নাজায়েজ হবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...