জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
এখানে মোট দুটি বিষয় ।
ক, নারীদের নার্স এর চাকুরী
খ, নারীদের পুলিশ এর চাকুরী।
ক,
পর্দা রক্ষা করা ফরজ।
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللَّهِ عَظِيمًا
অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্ল াহ সাল্ল াল্ল াহু আলাইহি ওয়াসাল্ল াম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্ল াহ তাআলা রাসূলুল্ল াহ সাল্ল াল্ল াহু আলাইহি ওয়াসাললাম-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)
আর অসুস্থ্য মানুষদের সেবা করাও সওয়াবের কাজ। যেহেতু মহিলাদের জন্য মহিলা ডাক্তারের প্রয়োজন।
তাই মহিলাদের জন্য পর্দার বিধান পুরোপুরি ভাবে পালনের শর্তে ডাক্তারী শিক্ষা অর্জন করা জায়েজ আছে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৪/২৫৬)
ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা (আরব বিশ্বের সর্বোচ্চ ফতোয়া কমিটি)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে,
قد تجد الطبيبة حرجا وصعوبات في تغطية وجهها عن غير المحارم أثناء عملها، فهل هذا يعتبر من الضرورة لكشفه؟
মহিলা ডাক্তার তার কর্মস্থলে ডিউটি করার সময় পরপুরুষের সামনে চেহারা ঢেকে রাখতে সমস্যা ও কষ্ট হয়। সুতরাং চেহারা খোলা রাখার জন্য এটাকে জরুরত হিসেবে গণ্য করা যাবে কিনা?
তাঁরা উত্তর দিয়েছেন,
يحرم على المرأة كشف وجهها لغير محارمها، وليس هناك ضرورة لكشف الوجه في العمل
নারীর জন্য পরপুরুষের সামনে চেহারা খোলা রাখা হারাম। আর ডিউটি করার সময় প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চেহারা খুলে রাখার জরুরত বিদ্যমান নেই। (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১৭/২৭৭)
বিস্তারিত জানুনঃ
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
নারীদের নার্স হওয়া জায়েজ আছে।
তবে পরিপূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করতে হবে।
ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে।
শুধুমাত্র নারীদের সেবা করতে হবে।
সহকর্মীদের সাথে পর্দা মেইনটেইন করে কথা বলবে,অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা থেকে হেফাজতে থাকবে।
খ, নারীদের পুলিশ এর চাকুরী জায়েজ নেই।
নারীদের যদি কাজ করার দরকার হয় এবং সমাজ তার প্রয়োজন অনুভব করে তাহলে সে এমন কাজ করতে পারে যা তার স্বভাব-প্রকৃতি ও নারীত্বের জন্য উপযোগী। যেমন: মহিলাদের জন্য ডাক্তার, গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা ইত্যাদি। কিন্তু পুলিশ বিভাগে কাজ করার ব্যাপারে কথা হল, এটি এমন একটি পেশা যেখানে নারী-পুরুষের সংমিশ্রণ ঘটে। কারণ অধিকাংশ পুলিশ কর্মকর্তারা পুরুষ। তাছাড়া পুলিশি কার্যক্রম, তদন্ত ইত্যাদি সাধারণত পুরুষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেই হয়ে থাকে। এ কারণে আমরা তা বৈধ মনে করি না। কারণ এতে করে ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি হয় অথচ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ফিতনার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠিন ভাবে সতর্ক করেছেন।
সহিহ বুখারী ও মুসলিমে উসামা বিন যায়েদ রা. হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
ما تركت بعدي فتنة أضر على الرجال من النساء
“আমার পরে আমি পুরুষদের জন্য মহিলাদের চেয়ে অধিক ক্ষতিকর ফিতনা রেখে যাই নি।” (বুখারী ও মুসলিম)
আবু সাঈদ খুদরি রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
اتقوا الدنيا واتقوا النساء, فإن أول فتنة بني إسرائيل كانت في النساء وقد سألت أمنا عائشة رضي الله عنها فقالت : يا رسول الله هل على النساء جهاد؟ قال: نعم جهاد لا قتال فيه؛ الحج والعمرة رواه أحمد وأصله في البخاري
“তোমরা দুনিয়ার (ধোঁকা) থেকে বাঁচ এবং নারীর (ফিতনা থেকে) বাঁচ। কারণ, বানী ইসরাইলের সর্বপ্রথম ফিতনা নারীকে কেন্দ্র করেই হয়েছিল।
আমি আমাদের মা-জননী আয়েশা রা.কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, (আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম কে জিজ্ঞেস করলাম): হে আল্লাহর রাসূল, মহিলাদের জন্য কি জিহাদ আছে?
তিনি বললেন: “হ্যাঁ, এমন জিহাদ যাতে লড়াই নেই। তা হল হজ ও ওমরা।” (মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাজাহ, হা/৩৯১০, হাদিসটি সহিহ। হাদিসের মূল বক্তব্য সহিহ বুখারীতেও বর্ণিত হয়েছে)
এ কথায় কোনো সন্দেহ নাই যে, পুলিশ প্রশাসনে কর্মরত একজন মহিলার সর্বনিম্ন পরিস্থিতি হবে, পর্দা হীনতা। সাথে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা-যেমনটি উল্লেখ করা হয়েছে।
(সংগৃহীত)
★সুতরাং নারীদের পুলিশ এর চাকুরী জায়েজ নেই।
(০২)
মহিলাদের গোসল মহিলা করাবে।
পুরুষের গোসল পুরুষ করাবে।
যদি মহিলা মারা গেলে গোসল করানোর জন্য মহিলা পাওয়া না যায়,তাহলে মাহরাম পুরুষ তাকে হাত দিয়ে তায়াম্মুম করাবে।
পুরুষ মারা গেলে যদি গোসল করানোর জন্য পুরুষ না পাওয়া যায়,তাহলে মাহরাম মহিলা তাকে হাত দিয়ে তায়াম্মুম করাবে।
উভয় ছুরতে সতর কাপড় দিয়ে পূর্ণ ভাবে ঢেকে রাখতে হবে।
সেখানে স্পর্শ করানো যাবেনা।
চক্ষু অবনত রাখতে হবে।
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
فلا یغسل الرجل المراء ۃ وبالعکس ا ھ ونقل عن الخانیۃ انہ اذا کان للمراء ۃ محرم یممھا بیدہ واما الا جنبی فبخر قۃ علی یدہ ویغض بصرہ عن ذرا عھا وکذا الرجل فی امرانہ الا فی غض البصراھ ولعل وجھہ ان النظر خف من المس مجاز لشبھۃ الا ختلاف ۔ شامی ج ۱ ص ۸۰۳
সারমর্মঃ
মহিলাদের গোসল পুরুষ করাবেনা, পুরুষ দের গোসল মহিলা করাবেনা।
তবে যদি কাউকে পাওয়া না গেলে মাহরাম কেহ তাকে হাত দিয়ে তায়াম্মুম করাতে পারবে।
চক্ষু অবনত রাখতে হবে।
স্বামী স্ত্রীকে গোসল করানো,স্ত্রী স্বামীকে গোসল করানোর মাসয়ালা ব্যাতিক্রম।
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ