আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১) আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াত এর আক্বিদা তে মাযহাব মানার হুকুম কি? যেকোনো এক মাযহাব ফলো করবো নাকি সব মাযহাব? নবী (সাঃ) এর মাযহাব বলতে কি কিছু আছে? একজন বলেছিল সে নবী (সাঃ) এর মাযহাব মানে, এটা কি ঠিক? আমি যেহেতু সাধারণ মানুষ, এক মাযহাব এর সকল মাসয়ালা জানিনা, ইন্টারনেটে একেক বক্তা একেক মাসয়ালা একেক মাযহাব অনুযায়ী দেয়, সেক্ষেত্রে এক মাযহাব কিভাবে মানবো?
২) নদী বা প্রাকৃতিক জিনিস যা মূলগতভাবে আল্লাহর সৃষ্টি, তা ব্যাক্তির নামে দখল দেয়া/কেনাবেচা এবং তাতে চাষ বৈধ? আর সেখান থেকে অনুমতি ছাড়া মাছ শিকার জায়েজ?
যেই নদী/পুকুর কারো নামে আছে কিনা জানিনা তা থেকে মাছ শিকার করা যাবে?

৩) অনেকে বলে শুটকি মাছ, পেয়াজ খাওয়া মাকরূহ, কারণ মুখে দুর্গন্ধ তৈরি হয়, এটা কি ঠিক?

৪) ভাষা দিবস, বাবা দিবস, মা দিবস, বিজয় দিবস, টিকা দিবস ইত্যাদি দিবস পালন কি জায়েজ?

জাযাকুমুল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
আখেরাতের মুক্তি পরকালের অনন্ত জীবন ব্যাপী সুখ সমৃদ্ধির জন্য মাযহাব বড় কথা নয়,বরং কুরআন সুন্নাহর অনুসরণই বড় কথা।হ্যা কুরআন সুন্নাহ কে যথাযথ পালন করার স্বার্থে আম জনতার জন্য যেকোনো একটি মাযহাব মানা ফরয।মাযহাব ব্যতীত কুরআন সুন্নাহর উপর যথাযথ আ'মল করা কখনো সম্ভবপর হবে না।

দ্বীনে ইসলাম তথা শরীয়ত হলো,কুরআন এবং হাদীসের সমষ্টির নাম।প্রথমত কুরআন এবং হাদীস আরবী। দ্বিতীয়ত আরবী বাগধারা অনেক কঠিন ও একই বাক্য বহুঅর্থের বাহক হওয়ার দরুণ কুরআন এবং হাদীসের সুস্পষ্ট ব্যখ্যা প্রয়োজন।তাছাড়া নাসিখ মানসূখ পরিচয় লাভ করাও একটা জটিল বিষয়।ইত্যাদি ইত্যাদি।সুতরাং এ সব অস্পষ্টতাকে স্পষ্টকরে যে ব্যখ্যা প্রদান করা হয়,মূলত সেটার নামই হল মাযহাব।যেহেতু অস্পষ্টতাকে দূর করে স্পষ্ট ব্যখ্যা করতে যেয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছে,তাই ভিন্ন ভিন্ন মাযহাবের সৃষ্টি হয়েছে।আরো জানুন- নাওয়াযিল-৪/৬২৯)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/3009

তাকলীদ(মুজতাহিদের অনুসরণ) করা ফরয।এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(সূরা নাহল-৪৩)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। (সূরা নিসা-৫৯)
উক্ত আয়াতে اولي الامرউলূল আমর এর ব্যখ্যায় হযরত জাবের রাযি, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি,আ'তা রাহ,মুজাহিদ রাহ,যাহহাক,আবুল আলিয়া রাহ,হাসান বসরি রাহ সহ অসংখ্য সাহাবা, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈন উল্লেখ করেন যে,এখানে উলূল আমর দ্বারা খুলাফা,উলামা,ফুকাহা উদ্দেশ্য।স্বয়ং আহলে হাদীসদের ইমাম নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান রাহও এ ব্যখ্যাকে নিজ তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
انما شفاء العي السوال
বক্রতা বা অজ্ঞদের শে'ফা হল,তারা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করবে।
এখন প্রশ্ন হল জ্ঞানী কারা?সমাজে যাদেরকে আলেম বলা হয়,তারাই কি জ্ঞানী?না এর জন্য বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যর প্রয়োজন রয়েছে?

যার তাকলীদ করা হবে, তার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম একটা পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েঝেন।
শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহ, উনার অমর গ্রন্থ আকিদাতুল-জায়্যিদ এ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন।মোটকথাঃ এ সমস্ত শর্তসমূহ আজকাল প্রায় বিরল।
মাযহাব ও তাকলীদ সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন
https://www.ifatwa.info/1936

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি অফলাইনে যে কোনো মাযহাবের কোনো আলেমের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে উক্ত মাযহাবের সকল মাস'আলা সম্পর্কে অবগত হতে পারেন। বা কোনো মাযহাবের কিতাব ক্রয় করে সেই মাযহাবের অধিকাংশ মাস'আলা সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।এভাবে ইউটিউবে ওয়াজ শুনতে গেলেই জগাখিচুড়ি হয়ে যাবে। সুতরাং আপনি হয়তো তাবলীগে সময় লাগান,বা অফলাইন কিংবা অনলাইন কোনো মাদরাসায় ভর্তি হয়ে যান।

(২)
আপনি যেই দেশে অবস্থান করবেন, সেই দেশের আইনের আলোকে নদী নালা ও জ্বলাশয়ের বিধান মেনে চলবেন।পরিত্যক্ত কোনো জায়গাতে যদি আপনি প্রথমেই আবাদ করেন বা চাষ করেন, তাহলে সেই জায়গা আপনার ভোগদখলে চলে আসবে,যদি না এই জায়গা সম্পর্কে বিশেষ কোনো সরকারি আইন না থাকে।

যেই নদী/পুকুর কারো নামে আছে কিনা?সে সম্পর্কে  জানা না থাকে, তাহলে সেই জায়গা থেকে মাছ শিকার করা যাবে।

(৩)
https://www.ifatwa.info/9417 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
হিদল/শিদল বা চ্যাপা শুটকি মূলত পুটি, টাকি, টেংরা ইত্যাদি মাছ থেকে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় তৈরি একধরনের দেশি খাবার। সুতরাং তা ভক্ষণে কোনো বাধা নেই।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
শুটকি খাওয়া মাকরুহ নয়,কেননা এর দুর্গন্ধ স্থায়ী নয়।হ্যা, কাচা পিয়াজ খাওয়া মাকরুহ।কেননা তা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

(৪)
দিবস পালন কখনো জায়েয হবে না। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/166


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (583,410 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...