আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
572 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (2 points)
আমি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ করি । আমি এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চাচ্ছি ।

১) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে আমরা দালাল হিসেবে একটি প্রোডাক্ট বিক্রি করি । প্রোডাক্টটি দালাল হিসেবে বিক্রি করার জন্য আমরা একটি কমিশন পাই । এক্ষেত্রে আমরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইটে প্রোডাক্ট সম্পর্কে কিছু তথ্য পাই যে এটা কিরকম প্রোডাক্ট । তবে আমরা কোন প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি না । উদাহরণস্বরূপ, আমি একটি (জ্ঞান বৃদ্ধি করা ওষুধ / Brain tablet ) প্রোডাক্ট বিক্রি করব । এখন আফিলিয়েট ওয়েবসাইটে এই প্রোডাক্টের যে তথ্য দেওয়া আছে ও এই প্রোডাক্টের যে ছবি দেওয়া আছে তা থেকে আমরা সাধারণভাবে বুঝতে পারি জ্ঞান বৃদ্ধি করা / Brain tablet -> ট্যাবলেট বিক্রি করা জায়েজ । তবে এমন হতে পারে যে , আমরা যে ট্যাবলেট এর প্রচার করছি সেটিতে কোন হারাম উপাদান যোগ করা আছে । সবগুলো অ্যাফিলিয়েট সাইট বিদেশিদের সাইট ও প্রোডাক্টগুলো বিদেশের মানুষের কাছেই বিক্রি করা হচ্ছে ও প্রস্তুতকারকও কোন বিদেশি লোক । আর, আমেরিকার ও ইউরোপের লোক (বিদেশি লোক) গুলো বেশির ভাগই খ্রিষ্টান । এমনটা হতে পারে কোনো খ্রিষ্টান প্রস্তুতকারক এই ওষুধটি হারাম উপাদান ব্যবহার করেছে । আর হারাম দ্রব্য মিশ্রিত ওষুধ খাওয়ানো জায়েজ হবে না । তাই, আমি এক কথা প্রসঙ্গে বলতে চাই যেহেতু আমরা ওষুধের উৎপাদন সম্পর্কে বিস্তারিত ওয়েবসাইট থেকে জানতে পারি না । (এরকম কোন কথা বলা হয়নি যে ঔষধটিতে কোন হারাম দব্য ব্যবহার করা হয়নি, সব হালাল ব্যবহার করা হয়েছে ।) হতে পারে ঔষধটিতে হারাম যোগ করা আছে । এক্ষেত্রে কি আমাদের এরকম (অনিশ্চিত) উপাদান জাতীয় পণ্য বিক্রি করা কি জায়েজ হবে  ও এর প্রচারণা করে (কমিশন) আয় করা কি জায়েজ হবে ?

আমি এক মুফতি সাহেব থেকে জেনেছিলাম,

"কোন ঔষধ এর পণ্য যদি সাধারন জ্ঞান থেকে দেখে বোঝা যায় যেটা হালাল ঔষধ , তবে এটা বিক্রি করা হালাল । তবে নিশ্চিত হারাম জানা থাকলে আলাদা বিষয় । যেমন বিক্রেতার ক্ষেত্রে কোন রোগীর জন্য ঘুমের ওষুধ বিক্রি করা জায়েজ, তবে কোন নেশাকারী কাছে বিক্রি করা জায়েজ না ।
অন্যদিকে দালাল হিসেবে কোন পণ্যের সকল খুঁটিনাটি পরীক্ষা করে বিক্রি করা সম্ভব নয় "

আর আমি প্রশ্নকারী এতোটুকু জানি যে , চিকিৎসার জন্য হারাম দ্রব্য সেবন করা জায়েজ আছে - তাহলে কি এরকম পণ্য বিক্রি করা জায়েজ ?
২) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে আমাদেরকে একটি এফিলিয়েট লিংক দেওয়া হয় । আর আমরা (দালালরা/অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার /মধ্যস্থতাকারী )  কোন সোশ্যাল মিডিয়া অথবা ওয়েবসাইটে এই প্রোডাক্টের সম্পর্কে লেখা-লেখি করি । তারপর আমরা লেখাগুলোর শেষে  , একথা লিখি যে  :---- যদি কারো এই প্রোডাক্টি পছন্দ হয় তবে তারা চাইলে এই লিঙ্ক থেকে ওয়েবসাইটে গিয়ে পণ্যটি অর্ডার করে কিনে নিতে পারেন । এক্ষেত্রে একটি মাসাআলাগত  সমস্যার সৃষ্টি হয় , সমস্যাটি হলো :- আমাদেরকে যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট থেকে যে এফিলিয়েট লিংক দেওয়া হয় , সেই এফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে তারা (ক্রেতারা) একটি পণ্য অর্ডারের ওয়েবসাইটে যায় । অনেক সময় দেখা যায় ঐই ওয়েবসাইটটিতে মহিলাদের ছবি থাকে । এক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার থাকেনা / আমরা কোন অশ্লীল ছবি ব্যবহার করিনা । এটা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইটের মালিকই এফিলিয়েট লিংকের ওয়েবসাইটে এরকম অশ্লীল ছবি যোগ করে থাকে । এক্ষেত্রে আমরা কি এই পণ্যের এফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে আয় করতে পারবো ? আমাদের আয় কি হালাল হবে ?
৩) অনেক সময় দেখা যায় আমরা যে প্রোডাক্ট বিক্রি করলাম সে প্রোডাক্টের কভারে / মোড়কে মহিলাদের ছবি লাগানো থাকে । এক্ষেত্রে এমন পণ্য বিক্রি করা কি জায়েজ হবে, যে সকল পণ্যের কভারে মহিলাদের ছবি দেওয়া আছে ? আর এটা স্বাভাবিক যে প্রোডাক্ট এর কভার / মোড়কে মহিলাদের ছবি দেয়া থাকলে মানুষের চোখ এর দৃষ্টি ওই ছবিতে পড়বে ও যার ফলে গুনাহ হবে । এক্ষেত্রে, মহিলাদের ছবিযুক্ত মোড়কসহ প্রোডাক্ট বিক্রি করা কি জায়েজ হবে ও এর কমিশন নেওয়া কি জায়েজ হবে ও এরকম প্রোডাক্ট বিক্রি করার আর্থিক আয় কি আমার জন্য হালাল হবে ?
### এফিলিয়েট লিংক এর ওয়েবসাইটের মহিলার ছবি অথবা হালাল প্রোডাক্টের মোড়কে মহিলাদের ছবি যুক্ত হওয়া এর ক্ষেত্রে -> আমরা দেখছি যে মালিকপক্ষই মূলত মহিলাদের ছবি যোগ করছে । এর জন্য তো তারা গুনাহাগার হওয়ার কথা , তাদের গুনাহার দায় তো আর আমাদের উপর আসার কথা নয় । তারা যদি ছবি যোগ করে থাকে তাহলে এর জন্য তাদের আয় হারাম হওয়ার কথা কিন্তু আমরা তো শুধুমাত্র এটাকে প্রচার করেছি , এটার মার্কেটিং ও প্রমোট করেছি , আমরা তো কোন ছবি যোগ করি নি । এই ক্ষেত্রে কি তাদের গুনাহ এর দায়ভার আমাদের নিতে হচ্ছে ? বিষয়টা কি এমন ? তারা যদি ছবি যোগ করে থাকে তাহলে তারা গুনাগার ও তাদের ইনকাম হারাম হওয়ার কথা , নাকি এক্ষেত্রে আমাদের আয় ইনকামও হারাম হবে ।

বাংলাদেশের সকল মুদির দোকানে এরকম দেখা যায় যে , দোকানদার বিক্রেতা হিসেবে হিসেবে ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করছে আর এই পণ্যগুলোর মোড়কে মহিলাদের ছবি আছে ।

বিশেষ করে লাক্স সাবানের মোড়ক , শ্যাম্পু, বিভিন্ন চিপসের প্যাকেটের উপর ও অন্যান্য বিভিন্ন পণ্যতে এরকম মহিলাদের ছবি যোগ করা আছে । এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমি জানতে চাচ্ছি , তাহলে যেই মুদির দোকানদার মহিলাদের ছবি যুক্ত পণ্য বিক্রি করছে তারা আয় কি হারাম হবে ? অন্যদিকে যে সাপ্লায়ার এই পণ্যটি একই স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহন করে (গোডাউন থেকে দোকানে দোকানে) পৌঁছে দিচ্ছে তার আয় কি হারাম হবে ? যারা এই সাবান টি তৈরি করছে তাদের আয়ের কি হারাম হবে ? পণ্য কোম্পানির যে সকল ডিজাইনার এই মোড়কের ডিজাইনে মহিলাদের ছবি যোগ করছে তাদের আয় কি হারাম হবে না ? আর যে লোক এ কোম্পানির মালিক, যিনি সবকিছুর প্রধান তারা আয় কি হারাম হবে ?

অর্থাৎ দুঃখের সাথে জিনিসটা কি এরকম বলা যায় বাংলাদেশের প্রায় ৭০% মানুষই হারাম খাচ্ছে / এর সাথে সম্পৃক্ত ?

1 Answer

+1 vote
by (597,330 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
চিকিৎসার জন্য ঢালাওভাবে হারাম জিনিষ অনুমোদনযোগ্য নয়,বরং তখনই অনুমোদনযোগ্য যখন হালাল কোনো জিনিষ দ্বারা চিকিৎসা সম্ভবপর হবে না।
সুতরাং উক্ত ঔষধে যদি হারাম উপাদান প্রথম থেকে যাচাইবাচাই ব্যতিত তথা হালাল উপাদান অন্বেষণ করা ব্যতিত প্রথম থেকেই হারাম উপাদান যোগ করা হয়ে থাকে, তাহলে এরকম ঔষধ কখনো জায়েয হবে না।

ছবি ডিজাইন করা এবং ছবি সংযোজনের অনুমতি বা আদেশ প্রদাণ করা সম্পূর্ণই হারাম ও নাজায়েয। তবে পণ্য বিক্রেতার জন্য উক্ত হারাম ছবি সম্ভলিত প্রডাক্ট বিক্রি করা হারাম হবে না।এবং ক্রয়কারীর জন্যও হারাম হবে না।হ্যা, ক্রয়কারীর উপর ওয়াজিব যে, তিনি ক্রয় করার পর উক্ত ছবিকে তুলে ফেলবেন।অযথা ছবি সম্ভলিত মোড়ক ঘরে রেখে ফিরিশতার জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনার দীর্ঘ বিবরণ পড়ে আমরা বলবো যে,
ঔষধে হারাম উপাদান রয়েছে কি না? সেটা নিশ্চিত না হওয়ার দরুণ বিষয়টির বিধান অস্পষ্ট। আর অস্পষ্ট বিষয় জায়েয হলেও পরিত্যাগ করা তাকওয়ার দাবী।

নু'মান ইবনে বশির বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি-
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,(কোনো জিনিষ)হালাল (হওয়া)পরিস্কার।(এবং কোনো জিনিষ) হারাম(হওয়া) ও পরিস্কার। হ্যা এ দুয়ের মধ্যে কিছু বিধান রয়েছে সাদৃশ্যপূর্ণ। যার সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই জানেনা।যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষ থেকে বেঁছে থাকল, সে যেন তার দ্বীন এবং ইজ্জতকে হেফাজত করে নিল। আর যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষে পতিত হল, সে যেন হারামে পতিত হল। যেমন রাখাল ক্ষেতের দেয়াল ঘেষে পশু চড়ালো।এখানে সম্ভাবনা রয়েছে যে, পশু ক্ষেতে নেমে যাবে। 
জেনে রাখ! প্রত্যেক বাদশারই একটি সীমান্তরেখা রয়েছে।এবং আল্লাহ যমীনে তার সীমারেখা হল,তার হারাম বিধি-বিধান।জেনে রাখ! শরীরে একটি মাংসপিণ্ড রয়েছে। যখন সেই মাংসপিণ্ড ভাল থাকে তখন সারা শরীর-ই ভাল থাকে।আর যখন সেই মাংসপিণ্ড নষ্ট হয়ে যায়,তখন সমস্ত শরীরই নষ্ট হয়ে যায়। সেই বস্তু হল,ক্বলব বা অন্তর।(সহীহ বুখারী-৫২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।
by (2 points)
মুফতী সাহেব,
2 নং প্রশ্নোত্তরটি দেওয়া হয়নি ।
আমাদেরকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট থেকে প্রোডাক্টের একটি অ্যাফিলিয়েট লিংক দেওয়া হয় । প্রথমত, আমরা সেই প্রোডাক্ট সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়াতে লেখা-লেখি করি ও সর্বশেষ এই লিখি যে, যার এই প্রোডাক্টটি পছন্দ হয়েছে এই লিংক থেকে কিনে নিতে পারে । এফিলিয়েট লিংক টি আসলে এই প্রোডাক্টের অর্ডারের ওয়েবসাইট লিংক । যদি এই অ্যাফিলিয়েট লিংকটির ওয়েবসাইটে কোন মহিলাদের ছবি থাকে তাহলে এর জন্য কি আমার আয় হারাম হবে ? (কিন্তু আমি এই সাইটে কোন ছবি যোগ করি নি এটা প্রোডাক্টের মালিক নিজেই যোগ করে রেখেছে)।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 163 views
...