আমি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ করি । আমি এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চাচ্ছি ।
১) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে আমরা দালাল হিসেবে একটি প্রোডাক্ট বিক্রি করি । প্রোডাক্টটি দালাল হিসেবে বিক্রি করার জন্য আমরা একটি কমিশন পাই । এক্ষেত্রে আমরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইটে প্রোডাক্ট সম্পর্কে কিছু তথ্য পাই যে এটা কিরকম প্রোডাক্ট । তবে আমরা কোন প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি না । উদাহরণস্বরূপ, আমি একটি (জ্ঞান বৃদ্ধি করা ওষুধ / Brain tablet ) প্রোডাক্ট বিক্রি করব । এখন আফিলিয়েট ওয়েবসাইটে এই প্রোডাক্টের যে তথ্য দেওয়া আছে ও এই প্রোডাক্টের যে ছবি দেওয়া আছে তা থেকে আমরা সাধারণভাবে বুঝতে পারি জ্ঞান বৃদ্ধি করা / Brain tablet -> ট্যাবলেট বিক্রি করা জায়েজ । তবে এমন হতে পারে যে , আমরা যে ট্যাবলেট এর প্রচার করছি সেটিতে কোন হারাম উপাদান যোগ করা আছে । সবগুলো অ্যাফিলিয়েট সাইট বিদেশিদের সাইট ও প্রোডাক্টগুলো বিদেশের মানুষের কাছেই বিক্রি করা হচ্ছে ও প্রস্তুতকারকও কোন বিদেশি লোক । আর, আমেরিকার ও ইউরোপের লোক (বিদেশি লোক) গুলো বেশির ভাগই খ্রিষ্টান । এমনটা হতে পারে কোনো খ্রিষ্টান প্রস্তুতকারক এই ওষুধটি হারাম উপাদান ব্যবহার করেছে । আর হারাম দ্রব্য মিশ্রিত ওষুধ খাওয়ানো জায়েজ হবে না । তাই, আমি এক কথা প্রসঙ্গে বলতে চাই যেহেতু আমরা ওষুধের উৎপাদন সম্পর্কে বিস্তারিত ওয়েবসাইট থেকে জানতে পারি না । (এরকম কোন কথা বলা হয়নি যে ঔষধটিতে কোন হারাম দব্য ব্যবহার করা হয়নি, সব হালাল ব্যবহার করা হয়েছে ।) হতে পারে ঔষধটিতে হারাম যোগ করা আছে । এক্ষেত্রে কি আমাদের এরকম (অনিশ্চিত) উপাদান জাতীয় পণ্য বিক্রি করা কি জায়েজ হবে ও এর প্রচারণা করে (কমিশন) আয় করা কি জায়েজ হবে ?
আমি এক মুফতি সাহেব থেকে জেনেছিলাম,
"কোন ঔষধ এর পণ্য যদি সাধারন জ্ঞান থেকে দেখে বোঝা যায় যেটা হালাল ঔষধ , তবে এটা বিক্রি করা হালাল । তবে নিশ্চিত হারাম জানা থাকলে আলাদা বিষয় । যেমন বিক্রেতার ক্ষেত্রে কোন রোগীর জন্য ঘুমের ওষুধ বিক্রি করা জায়েজ, তবে কোন নেশাকারী কাছে বিক্রি করা জায়েজ না ।
অন্যদিকে দালাল হিসেবে কোন পণ্যের সকল খুঁটিনাটি পরীক্ষা করে বিক্রি করা সম্ভব নয় "
আর আমি প্রশ্নকারী এতোটুকু জানি যে , চিকিৎসার জন্য হারাম দ্রব্য সেবন করা জায়েজ আছে - তাহলে কি এরকম পণ্য বিক্রি করা জায়েজ ?
২) অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে আমাদেরকে একটি এফিলিয়েট লিংক দেওয়া হয় । আর আমরা (দালালরা/অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার /মধ্যস্থতাকারী ) কোন সোশ্যাল মিডিয়া অথবা ওয়েবসাইটে এই প্রোডাক্টের সম্পর্কে লেখা-লেখি করি । তারপর আমরা লেখাগুলোর শেষে , একথা লিখি যে :---- যদি কারো এই প্রোডাক্টি পছন্দ হয় তবে তারা চাইলে এই লিঙ্ক থেকে ওয়েবসাইটে গিয়ে পণ্যটি অর্ডার করে কিনে নিতে পারেন । এক্ষেত্রে একটি মাসাআলাগত সমস্যার সৃষ্টি হয় , সমস্যাটি হলো :- আমাদেরকে যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট থেকে যে এফিলিয়েট লিংক দেওয়া হয় , সেই এফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে তারা (ক্রেতারা) একটি পণ্য অর্ডারের ওয়েবসাইটে যায় । অনেক সময় দেখা যায় ঐই ওয়েবসাইটটিতে মহিলাদের ছবি থাকে । এক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার থাকেনা / আমরা কোন অশ্লীল ছবি ব্যবহার করিনা । এটা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইটের মালিকই এফিলিয়েট লিংকের ওয়েবসাইটে এরকম অশ্লীল ছবি যোগ করে থাকে । এক্ষেত্রে আমরা কি এই পণ্যের এফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে আয় করতে পারবো ? আমাদের আয় কি হালাল হবে ?
৩) অনেক সময় দেখা যায় আমরা যে প্রোডাক্ট বিক্রি করলাম সে প্রোডাক্টের কভারে / মোড়কে মহিলাদের ছবি লাগানো থাকে । এক্ষেত্রে এমন পণ্য বিক্রি করা কি জায়েজ হবে, যে সকল পণ্যের কভারে মহিলাদের ছবি দেওয়া আছে ? আর এটা স্বাভাবিক যে প্রোডাক্ট এর কভার / মোড়কে মহিলাদের ছবি দেয়া থাকলে মানুষের চোখ এর দৃষ্টি ওই ছবিতে পড়বে ও যার ফলে গুনাহ হবে । এক্ষেত্রে, মহিলাদের ছবিযুক্ত মোড়কসহ প্রোডাক্ট বিক্রি করা কি জায়েজ হবে ও এর কমিশন নেওয়া কি জায়েজ হবে ও এরকম প্রোডাক্ট বিক্রি করার আর্থিক আয় কি আমার জন্য হালাল হবে ?
### এফিলিয়েট লিংক এর ওয়েবসাইটের মহিলার ছবি অথবা হালাল প্রোডাক্টের মোড়কে মহিলাদের ছবি যুক্ত হওয়া এর ক্ষেত্রে -> আমরা দেখছি যে মালিকপক্ষই মূলত মহিলাদের ছবি যোগ করছে । এর জন্য তো তারা গুনাহাগার হওয়ার কথা , তাদের গুনাহার দায় তো আর আমাদের উপর আসার কথা নয় । তারা যদি ছবি যোগ করে থাকে তাহলে এর জন্য তাদের আয় হারাম হওয়ার কথা কিন্তু আমরা তো শুধুমাত্র এটাকে প্রচার করেছি , এটার মার্কেটিং ও প্রমোট করেছি , আমরা তো কোন ছবি যোগ করি নি । এই ক্ষেত্রে কি তাদের গুনাহ এর দায়ভার আমাদের নিতে হচ্ছে ? বিষয়টা কি এমন ? তারা যদি ছবি যোগ করে থাকে তাহলে তারা গুনাগার ও তাদের ইনকাম হারাম হওয়ার কথা , নাকি এক্ষেত্রে আমাদের আয় ইনকামও হারাম হবে ।
বাংলাদেশের সকল মুদির দোকানে এরকম দেখা যায় যে , দোকানদার বিক্রেতা হিসেবে হিসেবে ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করছে আর এই পণ্যগুলোর মোড়কে মহিলাদের ছবি আছে ।
বিশেষ করে লাক্স সাবানের মোড়ক , শ্যাম্পু, বিভিন্ন চিপসের প্যাকেটের উপর ও অন্যান্য বিভিন্ন পণ্যতে এরকম মহিলাদের ছবি যোগ করা আছে । এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমি জানতে চাচ্ছি , তাহলে যেই মুদির দোকানদার মহিলাদের ছবি যুক্ত পণ্য বিক্রি করছে তারা আয় কি হারাম হবে ? অন্যদিকে যে সাপ্লায়ার এই পণ্যটি একই স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহন করে (গোডাউন থেকে দোকানে দোকানে) পৌঁছে দিচ্ছে তার আয় কি হারাম হবে ? যারা এই সাবান টি তৈরি করছে তাদের আয়ের কি হারাম হবে ? পণ্য কোম্পানির যে সকল ডিজাইনার এই মোড়কের ডিজাইনে মহিলাদের ছবি যোগ করছে তাদের আয় কি হারাম হবে না ? আর যে লোক এ কোম্পানির মালিক, যিনি সবকিছুর প্রধান তারা আয় কি হারাম হবে ?
অর্থাৎ দুঃখের সাথে জিনিসটা কি এরকম বলা যায় বাংলাদেশের প্রায় ৭০% মানুষই হারাম খাচ্ছে / এর সাথে সম্পৃক্ত ?