আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
260 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (40 points)
আসসালামআলাইকুম , পিতার রেখে যাওয়ার সম্পত্তি নিয়ে  একটা প্রশ্ন করতে চাচ্ছিলাম ।  প্রথমে বলি আমার পরিবার সম্পর্কে । আমার পরিবার  এ আমি ,আমার ভাই , মা এবং দাদী । যদিও দাদী আমাদের সাথে থাকে না , চাচা কাছে থাকে । আমি এবং আমার ভাই এখনো স্টাডি তে আছি । বোন সব বিবাহিত ।

আমার আব্বু মারা গেছেন প্রায় 2বছর হলো । এখন ওনার  রেখে যাওয়া সম্পত্তি আমার আম্মু তত্ত্বাবধানে আছে । আমাদের পরিবারের প্রয়োজনীয় খরচ এ থেকে হয় । কিছু দিন আগে আমি জানতে পারি যে মৃত ব্যাক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তির বণ্টন করতে হয় আত্মীয়র মাঝে । এখন আমি আমার আম্মুকে বললে অনি দিতে রাজি না । ওনার মাইন্ড সেটটা অবশ্যই আগেরকার ।
"মেয়েরা সম্পত্তি বাপের বাড়ী থেকে নিয়ে যায়না " ।
আমার দাদীর ভাগ ও দিত নারাজ । তবে আমার দাদীকে প্রতি মাসে 1k টাকা করে দেই ।

আমার সাথে এই ভাগাভাগি নিয়ে বাড়াবাড়িও হয় । এখন আমি কি করতে পারি ।। এইগুলো কি আমার জন্য হক হবে ? কারণ এই সম্পত্তির ত অনেকের ভাগ/ হক আছে ।
আমার আপু 2 জনের সাথে কথা বলছি এই নিয়ে । তারা  ভাগ নিয়ে তেমন আগ্রহ নাই । তবে দিলে নিবে । আমি তাদের বলছি আমাদের হাতে সম্পত্তির অধিকার আসলে দিয়া দিব । এইরকম  কি হবে ? তারা বলছে তুরা আগে নিজের পায়ে দারা তার পর দিয়া দিস ।

আরেকটা কথা হচ্ছে আমি যদি তাদের টাকার বদলে জমি দিয়া দিই এবং সেটা আমার হাতে আসার পর তাহলে  কি হবে ?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


সুরা নিসার ১১ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یُوۡصِیۡکُمُ اللّٰہُ فِیۡۤ اَوۡلَادِکُمۡ ٭ لِلذَّکَرِ مِثۡلُ حَظِّ الۡاُنۡثَیَیۡنِ ۚ فَاِنۡ کُنَّ نِسَآءً فَوۡقَ اثۡنَتَیۡنِ فَلَہُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَکَ ۚ وَ اِنۡ کَانَتۡ وَاحِدَۃً فَلَہَا النِّصۡفُ ؕ وَ لِاَبَوَیۡہِ لِکُلِّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَکَ اِنۡ کَانَ لَہٗ وَلَدٌ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّہٗ وَلَدٌ وَّ وَرِثَہٗۤ اَبَوٰہُ فَلِاُمِّہِ الثُّلُثُ ۚ فَاِنۡ کَانَ لَہٗۤ اِخۡوَۃٌ فَلِاُمِّہِ السُّدُسُ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ یُّوۡصِیۡ بِہَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ؕ اٰبَآؤُکُمۡ وَ اَبۡنَآؤُکُمۡ لَا تَدۡرُوۡنَ اَیُّہُمۡ اَقۡرَبُ لَکُمۡ نَفۡعًا ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا ﴿۱۱﴾ 

আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিচেছন: এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান; কিন্তু শুধু কন্যা দুইয়ের বেশী থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু’ভাগ, আর মাত্র এক কন্য থাকলে তার জন্য অর্ধেক। তার সন্তান থাকলে তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ; সে নিঃসন্তান হলে এবং পিতা-মাতাই উত্তরাধিকারী হলে তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ; তার ভাই-বোন থাকলে মাতার জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ; এ সবই সে যা ওসিয়াত করে তা দেয়ার এবং ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও সন্তানদের মধ্যে উপকারে কে তোমাদের নিকটতর তা তোমরা জান না । এ বিধান আল্লাহর; নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
,
পরের আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ لَکُمۡ نِصۡفُ مَا تَرَکَ اَزۡوَاجُکُمۡ اِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّہُنَّ وَلَدٌ ۚ فَاِنۡ کَانَ لَہُنَّ وَلَدٌ فَلَکُمُ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَکۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ یُّوۡصِیۡنَ بِہَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ؕ وَ لَہُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَکۡتُمۡ اِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّکُمۡ وَلَدٌ ۚ فَاِنۡ کَانَ لَکُمۡ وَلَدٌ فَلَہُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَکۡتُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ تُوۡصُوۡنَ بِہَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ؕ وَ اِنۡ کَانَ رَجُلٌ یُّوۡرَثُ کَلٰلَۃً اَوِ امۡرَاَۃٌ وَّ لَہٗۤ اَخٌ اَوۡ اُخۡتٌ فَلِکُلِّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا السُّدُسُ ۚ فَاِنۡ کَانُوۡۤا اَکۡثَرَ مِنۡ ذٰلِکَ فَہُمۡ شُرَکَآءُ فِی الثُّلُثِ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ یُّوۡصٰی بِہَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ۙ غَیۡرَ مُضَآرٍّ ۚ وَصِیَّۃً مِّنَ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَلِیۡمٌ ﴿ؕ۱۲﴾ 

তোমাদের স্ত্রীদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক তোমাদের জন্য, যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে এবং তাদের সন্তান থাকলে তোমাদের জন্য তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ; ওসিয়ত পালন এবং ঋন পরিশোধের পর। তোমাদের সন্তান না থাকলে তাদের জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ, আর তোমাদের সন্তান থাকলে তাদের জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ; তোমরা যা ওসিয়াত করবে তা দেয়ার পর এবং ঋণ পরিশোধের পর। আর যদি কোন পুরুষ অথবা নারীর ‘কালালাহ বা পিতা-মাতা ও সন্তানহীন উত্তরাধিকারী হয়, আর থাকে তার এক বৈপিত্রেয় ভাই বা বোন, তবে প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ। তারা এর বেশী হলে সবাই সমান অংশীদার হবে তিন ভাগের এক ভাগে; এটা যা ওসিয়াত করা হয় তা দেয়ার পর এবং ঋণ পরিশোধের পর, কারো ক্ষতি না করে। এ হচ্ছে আল্লাহর নির্দেশ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।
(সুরা নিসা ১২)

★★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবার সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ আপনার মা পাবে।
আপনার দাদি পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ।
বাকি সম্পত্তি আপনাদের ভাইবোনের মাঝে এক ভাই= দুই বোন তথা মেয়ের থেকে ভাই ডাবল,এই হিসেবে সম্পদ বন্টন হবে।

আপনার বাবার পুরো সম্পদ ১৪৪ ভাগ করা হবে।
আপনার মা ১৮ ভাগ পাবে।
আপনার  দাদি ২৪ ভাগ পাবে।
আপনারা দুই ভাই ৩৪ করে মোট ৬৮ ভাগ পাবেন।
আপনাত দুই বোন ১৭ করে মোট ৩৪ ভাগ পাবেন।
,
এখন মায়ের কাছেই যদি উক্ত সম্পদ থাকে বন্টন যদি না করা হয়,তাহলে এক্ষেত্রে আপনাদের সকলের সম্মতি লাগবে।
যদি সকলে সম্মতি প্রদান করে,তাহলে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো সমস্যা হবেনা।   

তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত দ্বারা বুঝা যায় যে এখানে আপনার সম্মতি নেই,তাই উক্ত সম্পদ বন্টন না করে আপনার মায়ের কাছে রাখা এটি আপনার মায়ের জন্য জবরদখলের শামিল।
আপনার মায়ের জুলুমের গুনাহ হচ্ছে। 
,
তাই আপনারা বুঝিয়ে তার থেকে সম্পদ নিতে পারেন।
যদি বুঝানোর পরেও সম্পদ না দেয়,আপনাদের যদি আসলেই দরকার হয়,তাহলে আপনারা চাইলে মুরব্বিদের মাধ্যমে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। 
তাতেও কাজ না হলে আপনারা চাইলে দেশীয় আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...