আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
413 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (40 points)
edited by
আসসালাই কুম

১।আমার স্বামী আমাকে বলতেছিল তুমার তহ আমার সামনে আসতে লজ্জা লাগে।বোরকা পড়ে আসিও আমার সামনে,মোবাইলে ও।বেশি লজ্জা না?আমি পর পুরুষ নাকি?হুজুর আমরা এখনও সংসার শুরু করি নি।মাঝে মধ্যে দেখা করি।হুজুর তালাকের উদ্দেশ্য নই।আমি একটু লাজুক ।আমাদের বিয়ের আগে থেকে পরিচয়।কথাটা কয়েকবার বলেছিল।কিন্তুু বিয়ের আগে বলছে না পরে বলছে মনে নেই।আর রাগ করেও বলেছে কিনা মনে নেই।মনে হয় রাগ করে বলে নি।এই কথা দ্বারা কি তালাক হবে?আর বিয়ের পর ও যদি বলে থাকে তাহলে কি তালাক হবে? এখন আমার করণীয় কি?তালাকের কোন কথাই হচ্ছিল না আমাদের মধ্যে।কেনায়া তালাকের বিষয়েও আমরা কিছু জানতাম না কেও।স্বামীও  তহ আবদার করে বলেছিল যে।তার কথায়ও মনে হচ্ছিল তালাকের কোন মন ছিল না।ওনাকে জিগ্যেস করলে ওনি বলে যে আমাকে তালাকের উদ্দেশ্য কোন কথা কোনদিন বলেন নি।

২।আমার পরিবার আমাদের বিয়ে মেনে নেই নি।আমি বলি না মানলেও সম্পর্ক রাখিও। স্বামী বলে আমি অমানুষ নই।স্বামি বলে  তুমার পরিবার তুমার ওপর।মানে আমি চাইলে যোগাযোগ করতে পারি।এতে কি কেনায়া বাক্য?তালাকের উদ্দেশ্য ছিল না। তালাক হবে?

৩।আমার স্বামীও পড়ালেখা করে আমিও।সে বলেছিল আমার পড়াশুনার ব্যাপারে তুমি কিছু বলবে না তুমার ব্যাপারেও আমি বলব না।এতে কি কেনায়া বাক্য?এখানেও উদ্দেশ্য ছিল না।এতেও কি তালাক হবে?

স্বামীর ও কিছু মনে নেই বলে।আর শপথ করে বলে যে তালাকের উদ্দেশ্য কোনদিন ছিল না।আর হুজুর যখন এই ধরনের কথা বলে তখন তালাকের ও মজলিস ছিল না।আবার মাঝে মাঝে ভাবি ছিল কিনা।কিন্তু আমার খুব বেশি মনে হচ্ছে তালাকের কোন মজলিস বা কথাই হচ্ছিল না।আমি তবু ভয় পাচ্ছি।

৪।অনেকবার আমি বলেছি "আমি মরে গেলে বুঝবা।এখন তহ বুঝ না"।তহ স্বামী বলত মরার কথা বলিও না।যদি ছেড়ে যাওয়ার মন থাকে আসছ কেন আমার জীবনে।যদি যাওয়ার  মন থাকে এখন চলে যাও।পরে ছেড়ে চলে গেলে আরো কষ্ট পাব।হুজুর স্বামী তালাকের উদ্দেশ্য করে বলে নি।অভিমান করে বলেছিল।কষ্ট পেয়ে।স্বামী অনেকবার বলেছে তালাকের উদ্দেশ্যে কোন কথা কোনদিন বলে নি।এতে কি তালাক হবে?আমি মারাত্বক ওয়াসওয়াসায়,আক্রান্ত। সব কিছু নিয়ে টেনশনে ভুগি।অসুস্থ হয়ে পড়ি।

৫।খুলা তালাক কি মনে মনে বললেও হয়ে যাবে? আমার খুব ভয় হয় এটা নিয়ে।আমার স্বামী না জেনে বুঝে এটা আমাকে দি দিছে।আমি ফেরত দিতে চাই।আমার মনে সবসময় ভয়।মনে মনে বললে বা ভাবলেও কি হবে? আমি মারাত্তক ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত।

৬।হুজুর আমি ওয়াওয়াসা রুগী।সবসময় মাথায় তালাকের টেনশন ঘুরে বেড়ায়।বিভিন্ন প্রশ্ন দেখলে আরো ভয় লাগে।না দেখলে লাগে না জেনে কোন যিনা করছি নাত? কিন্তুু এইগুলোর টেনশনে অস্তির হয়ে যায়।ওপায় কি বাচার এই সমস্যা থেকে?স্বামী বলতেছে তুমি কিছুূদিন মোবাইল থেকে দূরে থাক।কিন্তুু আমার ভয় হয় না জেনে কোন যিনা করে ফেলতেছি নাত?হুজুর আরেকটা প্রশ্ন কেনায়া তালাকের কথা শুনার পর থেকে বার বার ভয়,লাগে এই কথা কি আমার স্বামী বলেছে কিনা ওটা ভেবে।জানি না হুজুর বলেছে কিনা।মনে নেই।যদি বলেও থাকে আমার মনে নেই স্বামীও মনে নেই।তাহলে কি আমাদের গুণাহ হবে? তালাক হবে?যিনার গুণাহ হবে সারাজীবন? খুব ভয় হয়।অস্থির লাগে। কিছুতেই শান্তি পাচ্ছি না।অসুস্থ হয়ে পড়ি টেনশনে।

1 Answer

0 votes
by (559,290 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


তালাক খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে।
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় তালাকের ইঙ্গিতসুচক শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷
সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
কেনায়া তালাকের বাক্য গুলির মধ্যে নিম্নোক্ত দুটি বাক্যও  অন্তর্ভুক্তঃ
★তুমি আমার সামনে পর্দা করো।
★তুমি আমার সামনে খিমার পরিধান করো,চেহারা ঢাকো।

বিস্তারিত জানুনঃ 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্বামী আপনাকে এ ধরনের বাক্য বলেছে,সুতরাং এটি তালাকের ইঙ্গিত সূচক শব্দ।
এতে তালাকের নিয়ত করলে তালাক হবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু তালাকের নিয়ত করেনি তাই তালাক হবেনা।

(০২)
এটি কেনায়া বাক্য নয়।
সুতরাং এতে কোনো সমস্যা নেই।

(০৩)
এটি কেনায়া বাক্য নয়।
সুতরাং এতে কোনো সমস্যা নেই।

(০৪)
""যদি ছেড়ে যাওয়ার মন থাকে আসছ কেন আমার জীবনে।যদি যাওয়ার  মন থাকে এখন চলে যাও""

এতে কোনো তালাক হবেনা।
বাক্য দেখেই বুঝা যাচ্ছে এখানে স্বামীর তালাকের নিয়ত নেই।
আর বিষয়টি স্বামী আপনার উপর ছেড়ে দিয়েছে,তাই এতে স্বামীর পক্ষ থেকে তালাকের প্রশ্নই উঠেনা। 

(০৫)
মনে মনে বললে বা ভাবলে হবেনা।

(০৬)
আপনাদের কোনো তালাক হয়নি।
আপনারা কোনো টেনশন করবেননা।
নিশ্চিন্তে থাকুন।  

★পরামর্শ থাকবে তালাক সংক্রান্ত কোনো মাসয়ালা না পড়ার।
এ সংক্রান্ত কোনো আলোচনা কাহারো সাথে করবেননা।  
তালাকের বিষয় মনে আসতেই দিবেননা।
বিষয়টি মাথায় আসলেই অন্য কথা/কাজে মনোযোগী হবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...