জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে কোট-স্যুট ও প্যান্ট-শার্ট পশ্চিমাদের সংস্কৃতি থেকে আমাদের সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়েছে। তাই কাফিরদের সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় মৌলিকভাবে এগুলো নিষিদ্ধ হওয়ারই কথা।
এ জন্য প্রথম দিকে ইসলামিক স্কলাররা এগুলো পরিধানকে মাকরুহ বলেছেন। যেমন—মুফতি কেফায়েত উল্লাহ (রহ.) লিখেছেন : ‘কোট-স্যুট এখনো ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়নি, বরং এগুলো খ্রিস্টান ও তাদের অনুসারীদের পোশাক। তাই এগুলোর মধ্যে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ার নিষেধাজ্ঞা বিদ্যমান।’ (কেফায়াতুল মুফতি : ৯/১৫৯)
কিন্তু আজকাল মুসলমানদের মধ্যে কোট-স্যুট, প্যান্ট-শার্ট পরিধান করা ব্যাপকভাবে প্রচলিত। অধিক প্রচলনের কারণে এগুলোকে কাফিরদের ঐতিহ্যবাহী ও জাতিগত নিদর্শনমূলক পোশাক বলা কঠিন। তাই মুফতি মাহমুদ হাসান গাংগুহি (রহ.) বলেছেন : ‘পাক-ভারত উপমহাদেশে কোট-স্যুট পরিধান করা হারাম নয়, তবে এটি নেককার ও ওলি-আউলিয়াদের পোশাক নয়। তাই এগুলো থেকে দূরে থাকা উচিত।’ (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৯/২৬০)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সেই হিসেবে বর্তমান উলামায়ে কেরামগন ঢিলেঢালা হওয়া,টাখনুর উপরে থাকা ইত্যাদি শর্তে পুরুষদের জন্য প্যান্ট পড়ার অনুমতি প্রদান করেছেন।
তবে নারীদের জন্য প্যান্ট পরিধান করা কোনোভাবেই বৈধ নয়।
কেননা প্রথমত, এটি কাফিরদের সাদৃশ্যপূর্ণ।
দ্বিতীয়ত, এটি পুরুষদের সাদৃশ্যপূর্ণ পোশাক। হাদিস শরিফে এমন সাদৃশ্যপূর্ণ পোশাক পরিধানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
★উলামায়ে কেরামগন এটিকে পুরুষের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হিসেবেই বিবেচনা করেন।
তৃতীয়ত, প্যান্ট পুরুষদের তুলনায় নারীদের জন্য অধিক লজ্জাহীনতা, পর্দাহীনতা ও উলঙ্গপনার কারণ। এ জন্য নারীদের সর্বাবস্থায় এটি প্রত্যাখ্যান করা উচিত।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا، قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ، وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلَاتٌ مَائِلَاتٌ، رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ، لَا يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ، وَلَا يَجِدْنَ رِيحَهَا، وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا»
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নামবাসী দু’ধরনের লোক এমন আছে যাদের আমি (এখনো) দেখতে পাইনি। একদল লোক, যাদের সাথে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে, তা দিয়ে তারা লোকজনকে পিটাবে। আর এক দল স্ত্রীলোক, যারা বস্ত্র পরিহিত হয়েও বিবস্ত্রা, (সুখ সম্পদ ভোগকারিনী হয়েও অকৃতজ্ঞা) যারা অন্যদের আকর্ষণকারিণী ও আকৃষ্টা, তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কূঁজের ন্যায়। ওরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, এমনকি তার খুশবুও পাবে না। অথচ এত এত দূর থেকে তার খুশবু পাওয়া যায়। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২১২৮]