ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
তাফসীরে কুরতুবির লেখকঃ
নাম মুহাম্মদ, উপনাম, আবু আবদুল্লাহ, পিতার নাম আহমদ, দাদার নাম আবু বকর, পরদাদার নাম ফারহ, নেসবতি নাম আনসারি, খাজরাজি। উপাধি কুরতুবি। স্পেনের কর্ডোবায় জন্মগ্রহণ করেছেন বলে তাঁকে কুরতুবি বলা হয়।
জন্ম : হিজরি সপ্তম শতাব্দীর প্রারম্ভে তিনি স্পেনের কর্ডোবায় জন্মগ্রহণ করেন।
১২৩৬ খ্রিস্টাব্দে রাজা ফার্নান্ডো কর্ডোবা দখল করলে ইমাম কুরতুবি আলেকজান্দ্রিয়া চলে যান। সেখানে তিনি তাফসির ও হাদিসশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। এরপর তিনি মিসরের রাজধানী কায়রো যান এবং মুনিয়া আবিল খুসাবে বসবাস শুরু করেন এবং অবশিষ্ট জীবন এখানেই অতিবাহিত করেন।
ইমাম কুরতুবি তাঁর বিখ্যাত তাফসিরের শুরুতে উলুমুল কোরআনবিষয়ক একটি উন্নত ভূমিকা পেশ করেছেন। এতে ফাজায়েলে কোরআন, কোরআন তেলাওয়াতের নিয়ম-নীতি, ই’রাবুল কোরআন, তাফসির ও মুফাসসিরদের ফজিলত, কোরআন মাজিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, নিজস্ব রায় দ্বারা তাফসির করার বিষয়ে ভীতি প্রদর্শন, মুফাসসিরদের স্তর, হাদিস দ্বারা কোরআনের ব্যাখ্যা, কোরআন সংকলনের ইতিহাস, সুরা ও আয়াতগুলোর বিন্যাস, কোরআনের অলৌকিকতা প্রভৃতি বিষয় উল্লেখ করেছেন, যা জানা একজন কোরআন গবেষক ও মুফাসসিরের জন্য আবশ্যক।
(সংগৃহীত)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
তাফসীরে কুরতুবি পড়া যাবে,তবে লেখক যেহেতু মালেকী মাযহাবের অনুসরণ কারী ছিলেন,তাই হানাফি মাযহাবের খেলাফ মাসয়ালা আসলে সেই মত অনুসরণ করা হানাফী মাযহাব অনুসারীদের জন্য সহীহ হবেনা।
,
জাতিতে তিনি স্প্যানিশ ছিলেন।
(০২)
এ ব্যাপারে শাইখ সালিহ আল মুনাজ্জিদ রহঃ আর বিখ্যাত ‘ঈমান দুর্বলতার আলামত, কারণ ও প্রতিকার’ শীর্ষক বইয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
ইবাদতে অলসতা করা,মন না বসা এগুলো ঈমান দূর্বলতার কারন।
এটি মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ তায়ালা বলেন:
إِنَّ الْمُنَافِقِينَ يُخَادِعُونَ اللَّـهَ وَهُوَ خَادِعُهُمْ وَإِذَا قَامُوا إِلَى الصَّلَاةِ قَامُوا كُسَالَىٰ يُرَاءُونَ النَّاسَ وَلَا يَذْكُرُونَ اللَّـهَ إِلَّا قَلِيلًا
“অবশ্যই মুনাফেকরা প্রতারণা করছে আল্লাহর সাথে, অথচ তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতারিত করে। বস্তুত: তারা যখন নামাযে দাঁড়ায় তখন দাঁড়ায়, একান্ত শিথিল ভাবে লোক দেখানোর জন্য। আর তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে।” (সূরা নিসা: ১৪২)
তিনি ঈমান দুর্বলতার অনেকগুলো কারণ উল্লেখ করেছেন। তম্মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপ:
১) দীর্ঘ সময় ঈমানী পরিবেশ থেকে দূরে থাকা।
২) সৎ, আদর্শবান ও অনুসরণীয় মানুষের সংশ্রব থেকে দূরে থাকা।
৩) দ্বীনের ইলম (জ্ঞান) অন্বেষণ থেকে দূরে থাকা।
৪) পাপ-পঙ্কিল পরিবেশে বসবাস করা এবং পাপে লিপ্ত থাকা।
৫) দুনিয়াবি ব্যস্ততায় নিমগ্ন থাকা।
৬) অতিরিক্ত পানাহার,অতিরিক্ত ঘুম অথবা নিঘূর্ম রাত কাটানো। অনুরূপভাবে মানুষের সাথে মেলামেশা ও উঠবসের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় অপচয় করা ইত্যাদি।
★এর প্রতিকারঃ-
শাইখ ঈমান দুর্বলতা এবং এ সব সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য অনেকগুলো উপায় বর্ণনা করেছেন। তন্মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপ:
১) আল কুরআন অধ্যয়ন করা
২) মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব অনুধাবন করা,তাঁর নাম ও গুণাবলীগুলো সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করার পর সেগুলোর মর্মার্থ জেনে-বুঝে সেগুলোকে অন্তরে গেঁথে নেয়া এবং কাজে-কর্মে তার প্রতিফলন ঘটানো।
৩) দ্বীনের ইলম অন্বেষণ করা
৪) যে সকল বৈঠকে আল্লাহর যিকির তথা আল্লাহ এবং আল্লাহর দ্বীন সম্পর্কে আলোচনা করা হয় সেগুলোতে নিয়মিত উপস্থিত হওয়া
৫) অধিক পরিমাণে নেকীর কাজ করা এবং সব সময় নেকীর কাজে লেগে থাকা
৬) বিভিন্ন প্রকারের ইবাদত করা
৭) অধিক পরিমাণে মৃত্যুর কথা স্মরণ করা
৮) ঈমান নবায়নের অন্যতম উপায় হল,আখিরাতের বিভিন্ন মনজিলের কথা স্মরণ করা
৯) প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঘটনাবলীতে প্রভাবিত হওয়া
১০) আল্লাহর যিকির করা
১১) আল্লাহ তাআলার কাছে নিজের দুর্বলতা তুলে ধরে দুয়া করা
১২) বেঁচে থাকার লম্বা আশা না করা
১৩) এ কথা চিন্তা করা যে, পার্থিব জীবন খুবই নগণ্য
১৪) আল্লাহর বিধি-বিধান ও-নিদর্শনাবলীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা
১৫) আল ওয়ালা ওয়াল বারা (ঈমানদারদের সাথে বন্ধুত্ব এবং কাফেরদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা)
১৬) আচরণে বিনয়-নম্রতা অবলম্বন করা
১৭) আত্মসমালোচনা করা।
(০৩)
আপনি আত তরিক ইলাল আরাবিয়্যাহ সব কটি খন্ড ভালোভাবে পড়ুন।
নাহু সরফ এর গ্রন্থ গুলি পড়ুন।
আত তরিক ইলান নাহু,আত তরিক ইলাস সরফ পড়ুন।
উত্তম এবং সহজ হবে,অফলাইন/অনলাইন কোনো মাদ্রাসায় এ সংক্রান্ত কোর্সে ভর্তি হয়ে যাওয়া।
(০৪)
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«وَمَنْ يَّقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَآؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيْهَا وَغَضِبَ اللهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيْمًا»
‘‘আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন মু’মিনকে হত্যা করে তার শাস্তি হবে জাহান্নাম। তার মধ্যে সে সদা সর্বদা থাকবে এবং আল্লাহ্ তা‘আলা তার প্রতি ক্রদ্ধ হবেন ও তাকে অভিশাপ দিবেন। তেমনিভাবে তিনি তার জন্য প্রস্ত্তত রেখেছেন ভীষণ শাস্তি’’। (নিসা : ৯৩)
আনাস্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
أَكْبَرُ الْكَبَائِرِ: الْإِشْرَاكُ بِاللهِ، وَقَتْلُ النَّفْسِ، وَعُقُوْقُ الْوَالِدَيْنِ، وَقَوْلُ الزُّوْرِ، أَوْ قَالَ: وَشَهَادَةُ الزُّوْرِ.
‘‘সর্ববৃহৎ কবীরা গুনাহ্ হচ্ছে চারটি: আল্লাহ্ তা‘আলার সাথে কাউকে শরীক করা, কোন ব্যক্তিকে অবৈধভাবে হত্যা করা, মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা কথা বলা। বর্ণনাকারী বলেন: হয়তো বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: মিথ্যা সাক্ষী দেয়া’’। (বুখারী ৬৮৭১; মুসলিম ৮৮)
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ يَحْيَى ابْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلٍ، قَالَ: كُنَّا مَعَ عُثْمَانَ وَهُوَ مَحْصُورٌ فِي الدَّارِ، وَكَانَ فِي الدَّارِ مَدْخَلٌ، مَنْ دَخَلَهُ سَمِعَ كَلَامَ مَنْ عَلَى الْبَلَاطِ، فَدَخَلَهُ عُثْمَانُ، فَخَرَجَ إِلَيْنَا وَهُوَ مُتَغَيِّرٌ لَوْنُهُ، فَقَالَ: إِنَّهُمْ لَيَتَوَاعَدُونَنِي بِالْقَتْلِ آنِفًا، قَالَ: قُلْنَا: يَكْفِيكَهُمُ اللَّهُ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ، قَالَ: وَلِمَ يَقْتُلُونَنِي؟ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: لَا يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ إِلَّا بِإِحْدَى ثَلَاثٍ: كُفْرٌ بَعْدَ إِسْلَامٍ، أَوْ زِنًا بَعْدَ إِحْصَانٍ، أَوْ قَتْلُ نَفْسٍ بِغَيْرِ نَفْسٍ، فَوَاللَّهِ مَا زَنَيْتُ فِي جَاهِلِيَّةٍ، وَلَا فِي إِسْلَامٍ قَطُّ، وَلَا أَحْبَبْتُ أَنَّ لِي بِدِينِي بَدَلًا مُنْذُ هَدَانِي اللَّهُ، وَلَا قَتَلْتُ نَفْسًا، فَبِمَ يَقْتُلُونَنِي؟ قَالَ أَبُو دَاوُدَ: عُثْمَانُ وَأَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا تَرَكَا الْخَمْرَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ صحيح
আবূ উমামা ইবনু সাহল (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা উসমান (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম, যখন তিনি (বিদ্রোহীদের দ্বারা) একটি ঘরে আটক ছিলেন। ঐ ঘরের একটি প্রবেশদ্বার ছিলো। কেউ ঐ প্রবেশদ্বারে প্রবেশ করলে আল-বালাত নামক স্থানে লোকের কথাবার্তা শুনতে পেতো। উসমান (রাঃ) তাতে প্রবেশ করলেন এবং বিবর্ণ অবস্থায় আমাদের নিকট এসে বললেন, তারা এই মাত্র আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা বললাম, হে আমীরুল মু‘মিনীন! আল্লাহই তাদের বিরুদ্ধে আপনার জন্য যথেষ্ট। তিনি প্রশ্ন করলেন, তারা আমাকে হত্যা করবে কেন? আমি তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ তিনটি অপরাধের কোনো একটি ব্যতীত মুসলিম ব্যক্তির রক্তপাত করা হালাল নয়ঃ (১) ইসলাম গ্রহণের পর পুনরায় কুফরীতে ফিরে যাওয়া, (২) বিবাহিত ব্যক্তির যেনায় লিপ্ত হওয়া এবং (৩) হত্যার অপরাধী না হওয়া সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করলে। আল্লাহর কসম! আমি জাহিলী যুগে এবং ইসলামী যুগেও কখনো যেনা করিনি। আল্লাহ আমাকে হিদায়াত দান করার পর থেকে আমি মোটেই অন্য ধর্ম গ্রহণ পছন্দ করি না এবং আমি কোনো মানুষকে হত্যা করিনি। অতএব তারা কেন আমাকে হত্যা করবে? ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, উসমান ও আবূ বাকর (রাঃ) উভয়ে জাহিলী যুগেই মাদক গ্রহণ পরিত্যাগ করেছেন।
(আবু দাউদ ৪৫০২.নাসায়ী)
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির শাস্তি মৃত্যুদন্ড।
এ সংক্রান্ত মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الۡقِصَاصُ فِی الۡقَتۡلٰی ؕ اَلۡحُرُّ بِالۡحُرِّ وَ الۡعَبۡدُ بِالۡعَبۡدِ وَ الۡاُنۡثٰی بِالۡاُنۡثٰی ؕ فَمَنۡ عُفِیَ لَہٗ مِنۡ اَخِیۡہِ شَیۡءٌ فَاتِّبَاعٌۢ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ اَدَآءٌ اِلَیۡہِ بِاِحۡسَانٍ ؕ ذٰلِکَ تَخۡفِیۡفٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ رَحۡمَۃٌ ؕ فَمَنِ اعۡتَدٰی بَعۡدَ ذٰلِکَ فَلَہٗ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۱۷۸﴾
হে ঈমানদারগণ! নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের উপর তোমাদের উপর কিসাসের বিধান লিখে দেয়া হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি, ক্রীতদাসের বদলে ক্রিতদাস, নারীর বদলে নারী। তবে তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে কোন ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সাথে তার রক্ত-বিনিময় আদায় করা কর্তব্য। এটা তোমাদের রব-এর পক্ষ থেকে শিথিলতা ও অনুগ্রহ। সুতরাং এর পরও যে সীমালংঘন করে তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
(সুরা বাকারা ১৭৮)
وَ لَکُمۡ فِی الۡقِصَاصِ حَیٰوۃٌ یّٰۤاُولِی الۡاَلۡبَابِ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۷۹﴾
আর হে বুদ্ধি-বিবেকসম্পন্নগণ! কিসাসের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে জীবন, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।
(সুরা বাকারা ১৭৯)
(০৫)
হ্যাঁ পারবেন।
,
(০৬)
তিনি তার বাবা মায়ের জীবিত অবস্থায় তাদের হক আদায় করবেন।
তাদের খেদমত করবেন।
তবে শরীয়াহ বিরোধী কোনো আদেশ মানবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
مُصْعَبُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ نَزَلَتْ فِيهِ آيَاتٌ مِنَ الْقُرْآنِ قَالَ: حَلَفَتْ أُمُّ سَعْدٍ أَنْ لَا تُكَلِّمَهُ أَبَدًا حَتَّى يَكْفُرَ بِدِينِهِ، وَلَا تَأْكُلَ وَلَا تَشْرَبَ، قَالَتْ: زَعَمْتَ أَنَّ اللهَ وَصَّاكَ بِوَالِدَيْكَ، وَأَنَا أُمُّكَ، وَأَنَا آمُرُكَ بِهَذَا. قَالَ: مَكَثَتْ ثَلَاثًا حَتَّى غُشِيَ عَلَيْهَا مِنَ الْجَهْدِ، فَقَامَ ابْنٌ لَهَا يُقَالُ لَهُ عُمَارَةُ، فَسَقَاهَا، فَجَعَلَتْ تَدْعُو عَلَى سَعْدٍ، فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي الْقُرْآنِ هَذِهِ الْآيَةَ: {وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلَى أَنْ تُشْرِكَ بِي}
মুসআব ইবনু সা’দ (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণিত যে, তাঁর সম্পর্কে কুরআনের কিছু আয়াত অবতীর্ণ হলো। তিনি বলেন, তাঁর মা শপথ করে ফেলেছে যে, যতক্ষন তিনি ইসলামকে অস্বীকার না করবেন ততক্ষন তার সাথে কথা বলবে না খাবেও না, পানও করবে না। সে বললো, আল্লাহ তায়ালা তোকে আদেশ করেছেন, পিতামাতার কথা মানতে। আর আমি তোর মা। আমি তোকে এ আদেশ করছি। মা তিন দিন পর্যন্ত কিছু খেলেন না। কষ্টে সে বেহুশ হয়ে গেলে উমারাহ নামক তার এক ছেলে তাকে পানি পান করালো। মা সা’দর উপর বদদু’আ করতে লাগলো। তখন আল্লাহ তা’আলা কুরআন শরীফে এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি তার পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যব্যাবহার করতে। তবে ওরা যদি তোমার উপর বল প্রয়োগ করে, আমার সাথে এমন কিছু শরীক করতে যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তুমি তাদের মেনো না।” (২৯ঃ ৮) আর পৃথিবীতে তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে।” (৩১ঃ ১৫) [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৭৪৮]
عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَتْ: قَدِمَتْ عَلَيَّ أُمِّي وَهِيَ مُشْرِكَةٌ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَاسْتَفْتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قُلْتُ: وَهِيَ رَاغِبَةٌ، أَفَأَصِلُ أُمِّي؟ قَالَ: «نَعَمْ صِلِي أُمَّكِ
আসমা বিনতে আবূ বাকর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে আমার আম্মা মুশরিক অবস্থায় আমার নিকট এলেন। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট ফাতওয়া চেয়ে বললাম, তিনি আমার প্রতি খুবই আকৃষ্ট, এমতাবস্থায় আমি কি তার সঙ্গে সদাচরণ করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি তোমার মায়ের সঙ্গে সদাচরণ কর। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৬২০]