ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
নামাজ সহীহ হওয়া জন্য কিছু শর্ত:
প্রথমত: নামাজের ওয়াক্ত হওয়া
ফরয নামাজের সুনির্দিষ্ট সময় রয়েছে, যার আগে বা পরে নামাজ আদায় করলে তা শুদ্ধ
হয় না। ইরশাদ হয়েছে :
(إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ كَانَتۡ عَلَى
ٱلۡمُؤۡمِنِينَ كِتَٰبٗا مَّوۡقُوتٗا )
{নিশ্চয় নামাজ
মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।} [ সূরা আন-নিসা:১০৩]
দ্বিতীয়ত: অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জন
ছোট অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জন:
আর এটা সম্পন্ন হয় অজুর মাধ্যমে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, «যখন কারও অজু থাকে না, আল্লাহ তার নামাজ কবুল করেন না যতক্ষণ না
সে অজু করে নেয়।» (বর্ণনায় বুখারী)
বড় অপবিত্রতা থেকে পবিত্রতা অর্জন:
আর এটা সম্পন্ন হয় গোসলের মাধ্যমে। আল
কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
(وَإِن كُنتُمۡ جُنُبٗا فَٱطَّهَّرُواْۚ )
{আর যদি তোমরা
জুনুবী হও তবে পবিত্রতা অর্জন করো)}[ সূরা আল মায়িদা:৬]
তৃতীয়ত: কাপড়, শরীর ও জায়গা পাক হওয়া
১. কাপড় পাক;
আল্লাহ তাআলা বলেন,
(وَثِيَابَكَ فَطَهِّرۡ ٤ )
{আর তোমার
পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র কর।} [সূরা আল
মুদ্দাসসির:৪]
২. শরীর পাক:
হাদীসের এসেছে, «রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম একদা দুটি কবরের কাছ দিয়ে গেলেন। তিনি বললেন, «এ-দুই কবরবাসীর আযাব হচ্ছে। এদেরকে বড়
কোনো গুনাহর কারণে আযাব দেয়া হচ্ছে না। এই লোক তো পেশাব থেকে দূরত্ব বজায় রাখত না।»(বর্ণনায় আবু দাউদ)
৩. জায়গা পাক;
এর প্রমাণ মসজিদে পেশাবকারী ব্যক্তি-বিষয়ক
হাদীস যেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, «তাকে ছেড়ে দাও, আর তার পেশাবের ওপর এক বালতি পানি ঢেলে
দাও।»(বর্ণনায় বুখারী ও
মুসলিম)
সমগ্র জমিনই মসজিদ
সমগ্র জমিনই মসজিদ। অতএব নাপাকিযুক্ত না
থাকলে যেকোনো জায়গায় নামাজ আদায় করা শুদ্ধ। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, «আমার জন্য জমিনকে
মসজিদ ও পবিত্র বানিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই আমার উম্মতের মধ্যে কোনো ব্যক্তি যখন
নামাজের ওয়াক্ত পাবে সে যেন তা আদায় করে নেয়।»(বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)
চতুর্থত: সতর ঢাকা
পুরুষের সতর হলো নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত।
পঞ্চমত: কেবলামুখী হওয়া
কেবলা হলো পবিত্র কাবা।
আল্লাহ তাআলা বলেন :
(فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ ٱلۡمَسۡجِدِ
ٱلۡحَرَامِۚ وَحَيۡثُ مَا كُنتُمۡ فَوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ شَطۡرَهُۥۗ)
{সুতরাং তোমার চেহারা
মাসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও।} [সূরা আল বাকারা:১৪৪]
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে খাটে
সালাত আদায় করা যাবে। তবে দাড়িয়ে নামাজ পড়তে হবে।
২. যেই স্থানে পেশাব করেছে
বা লেগেছে সেই স্থানই নাপাক হবে। সুতরাং যেখানে পেশাব লাগেনাই সেখানে নামাজ পড়তে
পারবেন। তবে সতর্কতা মূলক বিছানার উপর কোনো মোটা কাপড় বিছিয়ে নিবেন। আবার যেখানে
পেশাব লেগেছে সেখানেও মোটা কাপড় বিছিয়েও নামাজ পড়তে পারবেন।