আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
571 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (-1 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ 

 

আজকে দুপুরে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় আমি একটা স্বপ্ন দেখি।

বিস্তারিত -  দেখি আমি এবং আমার এক বন্ধু একটা জায়গায় ঘুরতে গেছি। সেখানে একটা গ্রাম আছে। কিন্তু গ্রামে যেতে হলে সরু লম্বা রাস্তা ধরে ঢুকতে হবে। রাস্তার দুইপাশে পানি। এই রাস্তা ধরে কিছুদূর যাওয়ার পরে দেখি রাস্তাটা ভাঙা এবং এক পাশের পানি আরেক পাশে পানির সাথে মিশে গেছে এবং সেখানে প্রায় বুক পর্যন্ত কাদামাটি। কিন্তু আমরা সেই গ্রামে যেতে বদ্ধপরিকর।সিদ্ধান্ত হলো যে কাদামাটির মধ্য দিয়েই হেটে যেয়ে আবার রাস্তায় উঠবো। আমরা যখনই কাদামাটির মধ্যে নেমেছি, তখন দেখি ওই পানির মধ্যে দিয়ে মানুষের মল ভেসে আসছে। অথচ এই সময় আশেপাশে কোন পায়খানা ছিলো না। রাস্তার উপরে কয়েকজন বৃদ্ধ মানুষ ছিলো। তারা বলাবলি করছে এগুলা এখানে কিভাবে আসলো। এরপর দেখি আমার সেই ফ্রেন্ড হঠাৎ আমাকে তার ঘাড়ে তুলে নিলো। আর বলল যে তুমি নামাজের ইমামতি করবা। এসব তোমার শরীরে লেগে গেলে নাপাক হয়ে যাবা; তাই তোমাকে আমার ঘাড়ে তুলে নিলাম। এরপর সে আমাকে রাস্তার তীর পর্যন্ত নিয়ে গেলো। সেখানে যেয়ে দেখি আমি হঠাৎ সাদা জুব্বা পরে [প্রথম দিকে কি পরেছিলাম সেটা খেয়াল নাই] আর প্রথমে পানিতে নামার সময় যেই কাদাটুকু লেগেছিলো সেগুলাও আর শরীরে লেগে নাই।  অথচ আমার সেই বন্ধুর বুক পর্যন্ত কাদা লেগে আছে। প্রথএরপর আর ঠিক ভালো ভাবে খেয়াল নাই যে কি হয়েছে। 

 

**বাস্তবে আমার সেই বন্ধু একেবারে জাহেল। অনেক বলে এমনকি জোর করেও তাকে মসজিদে নিয়ে যেতে পারি না। একদিন তো এমন হইছে যে, হাটতে হাটতে মসজিদের গেটের সামনে এসে থামছি ঠিক এই সময়ই মাগরিবের আযান দিয়েছে আর আমি তার হাত ধরে টেনেও তাকে নামাজের জন্য মসজিদের ভিতরে নিয়ে যেতে পারি নাই। আমরা নামাজ পড়তে গেলাম আর সে একাই বাসায় চলে গেলো। এছাড়া হালাল-হারামের ব্যাপারেও তেমন কোন তোয়াক্কা করে না। মাঝে মাঝে দ্বীনের ব্যাপারে নাস্তিকদের মতো প্রশ্নও করে।

 

এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা কি হতে পারে? শাইখ 

 

** ইবনে সীরিন রহ. একটা কিতাবে পড়েছিলাম যে, স্বপ্নের যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় সেই অনুযায়ী অনেক সময় বাস্তবে ঘটে যায়। ভালো ব্যাখ্যা দিলে সেটা ঘটে আর খারাপ ব্যাখ্যা দিলেও সেটা ঘটে অনেকসময়। এই ব্যাপারে জানতে চাচ্ছিলাম। মূলত এইজন্য স্বপ্নের ব্যাখ্যা চাইতে ভয় করে  

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
উত্তর
وعليكمالسلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 
,
হাদীস শরীফে এসেছে  
خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.
আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। 
আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭] 
,
অন্য এক হাদীসে এসেছে 
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, যেখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এ জন্য আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর ক্ষতি থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না। ( বুুুখারী ৬৯৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৪)
,
,
★★★প্রিয় ভাই! আপনি কোনো টেনশন করবেননা।
এগুলো সবই আপনার  মনের কল্পনা থেকে এসেছে।
আপনি আপনার বন্ধুকে ভালো মনে করেন,তাকে ভালো মানুষ হিসেবে জানেন,তাই স্বপ্নের মধ্যে তার পক্ষ থেকে  আপনি সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছেন।
আপনি বিশ্বাস করেন যে সে যেমন,তেমনটা বদ নয়।
বরং সে আন্তরিক ভাবে ভালো।
তাই স্বপ্নের ভিতর আপনি তার মুখ থেকে বলতে শুনেছেন যে ""তুমি নামাজের ইমামতি করবা। এসব তোমার শরীরে লেগে গেলে নাপাক হয়ে যাবা; তাই তোমাকে আমার ঘাড়ে তুলে নিলাম। ""
,
তাকে দ্বীনের দাওয়াত দিন,তাকে নামাজের পথে ফিরে আনুন।
আপনার এই ভালো ধারনাই তাকে ভালোর দিকে আনতে অনেক সাহায্য করবে,আশা করি। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...