বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
আরেকজনের কোনো
নিআমত দেখে তা বিলুপ্তির কামনা করা হিংসার প্রথম ধাপ। এর পরের ধাপ হচ্ছে, মনে যখন কারও প্রতি হিংসা জন্ম নেয় তখন এর
চাহিদা অনুযায়ী কাজ করা। তা হতে পারে তার কোনো ক্ষতি করার মধ্য দিয়ে, হতে পারে তার কোনো ক্ষতিতে আনন্দ প্রকাশের মধ্য
দিয়ে। এসব যেহেতু তার কর্ম। তাই এর কারণে সে অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে। জবাবদিহিতার
মুখোমুখি হবে তখনো, যদি সে তার হিংসার কথা
মুখে প্রকাশ করে ফেলে। যতটুকু মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, অর্থাৎ অনিচ্ছাকৃতভাবে কারো প্রতি হিংসার ভাব
উদ্রেক হওয়া। তাতে গোনাহ হবে না।
তবে গোনাহ হোক আর
নাই হোক, হিংসা অবশ্যই
মানবচরিত্রের একটি মন্দ দিক। মনের হিংসার দাবিতে কেউ যদি অন্যায় আচরণ করে, ক্ষতি করার সুযোগ খোঁজে তাহলে তা যে নিন্দনীয়।
তা কে অস্বীকার করবে! হিংসা যে মানুষকে অন্যায়ে উৎসাহিত করে, তাও জানা কথা। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা নবী
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শিখিয়েছেন হিংসুকের অনিষ্ট থেকে আশ্রয়
প্রার্থনা।
وَ مِنْ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ.
এবং (আমি আশ্রয় চাই) হিংসুকের অনিষ্ট থেকে, যখন সে হিংসা করে। সূরা ফালাক (১১৩) : ৫
সে আগুনে জ্বলে
পুড়ে ছাই হতে থাকে হিংসুকের অন্তর। কথা হল,
হিংসার আগুন কি
শুধু হিংসুকের অন্তরকেই জ্বালায়? নবীজী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস থেকে আমরা এর উত্তর পাই-
إِيّاكُمْ وَالْحَسَدَ فَإِنّ الْحَسَدَ
يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النّارُ الْحَطَبَ أَوْ قَالَ الْعُشْبَ.
তোমরা হিংসা থেকে
বেঁচে থেকো। কারণ হিংসা নেক আমলসমূহকে গ্রাস করে নেয়, যেভাবে আগুন গ্রাস করে লাকড়ি (অথবা ঘাস)। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯০৫
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. লেখা পড়ার
ক্ষেত্রে একে অপরের থেকে বেশী মেহনত করা, অপরের থেকে
পরীক্ষাতে বেশী নম্বর পাওয়ার আশায় খাতায় নোট, বেশী চেষ্টা
মেহনত করা এটা জায়েজ আছে। এটা হিংসা হবে না। তবে যদি কেউ মেহনত করে লেখা পড়া করে
কারোর থেকে অগ্রগামী হয়ে যায় তখন তার ক্ষতি কামনা করা বা তার মেধা শক্তি হ্রাস পাক
এমন করলে তখন হিংসা হবে।
২. প্রশ্নোক্ত
ক্ষেত্রে ক্লাস নোট, আপনার খাতা এটা আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। তাই এটা
শেয়ার না করলে আপনার কোনো গোনাহ হবে না এবং হিংসাও হবে না। তবে যদি কেউ আপনার কাছে
(আপনি ভাই হলে অন্য কোনো ভাই বা আপনি বোন হলে অন্য কোনো বোন) পড়া বুঝতে আসে তাহলে
আপনার তা জানা থাকলে তাকে ঐ পড়াটা বুঝিয়ে দিবেন।
উল্লেখ্য যে, তাকে পড়াটা
বুঝিয়ে দিলেই যে সে ক্লাসের মধ্যে ফার্স্ট হয়ে যাবে বিষয়টা এমন নয়। বরং তাকদীরে
যেটা লেখা আছে বা আল্লাহ যাকে তাওফীক দিবেন সেই হবেন। আর আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশী
দুআ করতে থাকবেন।