আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
194 views
in সালাত(Prayer) by (102 points)
edited by
১)নামাজে নিয়ত অন্তরে থাকলেই হয়।এখন অন্তরে যে নিয়ত বা সংকল্প করবো এটা মুখে নিয়ত উচ্চারণ করলে যেমন গুছিয়ে বলা হয় অন্তরে নিয়ত করার সময়ও কি মনে মনে নিয়তের বাক্য গুলো গুছিয়ে বলতে হবে?

২) নামাজে মনে মনে নিয়ত কখন করবো?এটা কি নামাজ শুরু করার আগে করবো?অনেককে দেখি তাকবীরে তাহরীমা দেওয়ার সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে নিয়ত করে।

নিয়ত অন্তরে কি তাকবীরে তাহরীমার সময় করতে হয় নাকি তার আগে?

৩)এক লেখায় পড়েছিলাম নামাজের জন্য অজু করা বা নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদ যাওয়া বা নামাজের উদ্দেশ্যে দাড়ানো এটাই নামাজের নিয়ত হিসেবে যথেষ্ট।এটা কি ঠিক?

৪) কাজা নামাজের ক্ষেত্রে কি আমি যে এই ওয়াক্তের কাযা আদায় করছি এই কাজার কথা অন্তরে থাকতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/4188/ নং ফাতাওয়াতে বলেছি যে,

নিয়ত মানে হল মনস্থির করা। কোন কাজটি করছিকেন করছিকার জন্য করছিকি করছিএসব বিষয় নির্ধারণ করার নাম হল নিয়ত।

প্রতিটি কাজের সওয়াব পাবার জন্য নিয়ত থাকা আবশ্যক।

 

নিয়ত বাংলায় বা আরবীতে বলা জরুরী নয়। আরবীতে যেসব নিয়ত আমাদের দেশে প্রচলিত এসব শব্দে কোন নিয়ত কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।তবে এসব নিয়তগুলো মূলত আমরা মনে মনে যে বিষয়গুলোর নিয়ত করে থাকিতারই আরবীতে প্রকাশিত রূপ। এসব সুন্নাত মনে না করে এমনিতে পড়তে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু সুন্নত মনে করলে বিদআত হবে।

 

মূল কথানামাযের নিয়তের জন্য আরবীতে মুখে নিয়ত করার প্রমাণ নেই। মনে মনে নিয়ত করলেই যথেষ্ট।

 

হাদীস শরীফে এসেছে   

عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ «إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوٰى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه فَهِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُولِه وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ اِلٰى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهٗ إِلٰى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ»

 ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনরসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিয়্যাতের উপরই কাজের ফলাফল নির্ভরশীল। মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী ফল পাবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবেতার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্যই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার স্বার্থপ্রাপ্তির জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিবাহের জন্য হিজরত করবে সে হিজরত তার নিয়্যাত অনুসারেই হবে যে নিয়্যাতে সে হিজরত করেছে।  সহীহ : বুখারী ১মুসলিম ১৯০৭তিরমিযী ১৬৩৭নাসায়ী ৭৫আবূ দাঊদ ২২০১ইবনু মাজাহ্ ৪২২৭আহমাদ ১৬৯৩০২।

,

তবে কিছু উলামায়ে কেরামগন নামাজের শুরুতে মুখে  নিয়ত করাকে পুরোপুরি ভাবে বিদয়াত বলে আখ্যায়িত করেছেন।   

তারা কিছু রেফারেন্স দেনঃ 

 

*হাফিয ইবনুল ক্বাইয়্যিম রহ. বলেনঃ

মুখে নিয়ত পাঠ করা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামসাহাবায়ে কেরামতাবেঈ কারো হতেই কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। মুখে পাঠের এই পদ্ধতি শয়তানের একটি কুমন্ত্রণা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নামাযে দাঁড়াতেন তখন শুধু “আল্লাহু আকবার” বলতেন। আর আগে কিছু বলতেন না। সুতরাং মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পাঠ করা বিদআত। চার ইমামও এরূপ নিয়তনামা পড়াকে পছন্দ করেন নি। [ইগাসাতুল লাহফান১/১৩৬ ।। যাদুল মাআদ১/৫১]

.

আরবি নিয়ত শব্দের অর্থ হল মনে ইচ্ছা পোষণ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এটা প্রমাণিত নেই। না প্রমাণিত আছে কোন সাহাবী এবং তাবেঈ থেকেও। তাই মুখে নিয়ত পাঠ করা বিদআত।” [ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম৩৩৯-৩৪০ পৃষ্ঠা]

*মোল্লা আলী কারী রহ. বলেন:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ত্রিশ হাজার ওয়াক্ত নামায আদায় করেছেন। তথাপি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এই কথা বর্ণিত নেই যেআমি অমুক অমুক ওয়াক্ত নামাযের নিয়ত করছি। সুতরাং মুখে নিয়ত উচ্চারণ না করাটাই সুন্নাত। জেনে রাখুনশব্দ উচ্চারণ করে মুখে নিয়ত করা জায়েজ নয়। কারণ এটা বিদআত। সুতরাং যে কাজ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেন নি তা যে করে সে বিদআতি। [দেখুনঃ মিরকাত১/৩৬-৩৭]

,

সুতরাং সালাত শুরু করার পূর্বে কোন সালাতকয় রাকআততা ফরযসুন্নত না কি নফল এ বিষয়গুলো অন্তরে জাগ্রত থাকলে তাই নিয়তের জন্য যথেষ্ট।

যেহেতু এক্ষেত্রে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে,তাই জরুরি,সুন্নাত মনে না করে পড়া যদিও জায়েজ আছে,তব  সতর্কতামূলক মুখে নিয়ত না করাই উচিত বলে মনে করছি। অন্তর থেকেই নিয়ত করে নিবে।

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
<!--[if !supportLineBreakNewLine]-->
<!--[endif]-->

১. না, গুছিয়ে মনে মনে নিয়ত করা জরুরী নয়। বরং সালাত শুরু করার পূর্বে কোন সালাতকয় রাকআততা ফরযসুন্নত না কি নফল এ বিষয়গুলো অন্তরে জাগ্রত থাকলে তাই নিয়তের জন্য যথেষ্ট।

২. নামাজ শুরু করার আগেই মনে মনে নিয়ত করবে। তবে যখন তাকবীরে তাহরীমা বাঁধবে তখন একটু ঐ নিয়ত স্মরণ করে নিলেই হবে। তাই বলে তাকবীরে তাহরীমা দেওয়ার সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে নিয়ত করতে হবে এটা জরুরী নয়।

. নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদ যাওয়া বা নামাজের উদ্দেশ্যে দাঁড়ানো এটাও নামাজের নিয়ত হিসেবে যথেষ্ট। এটা সঠিক। তবে যখন তাকবীরে তাহরীমা বাঁধবে তখন একটু ঐ নিয়ত স্মরণ করে নিলেই হবে।

৪. হ্যাঁ, কাযা নামাজের ক্ষেত্রে যেই ওয়াক্তের কাযা নামাজ আদায় করা হচ্ছে তা অন্তরে থাকতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...