আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
2,838 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (39 points)
মসজিদে জুম্মার সব নামাজের পর খতিব সাহেব দোতলায় যান। সেখানে বেশ কিছু মুসল্লি থাকেন। সবাই একসাথে বসে কিছু আয়াত, দরুদ শরীফ পড়ে সবাই মিলে দুয়া করেন।  তারপর জিলাপি, খুরমা দেয়া হয়।

১. এটা কি বিদাত?

২. বিদাত হলে করণীয় কি? খতিব সাহেবের পেছনে নামাজ পড়া কি ঠিক হবে?

৩. মিলাদের জিলাপি, খুরমা খাওয়া হালাল?

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১) শরীয়তের বিধান হলো যে পদ্ধতিতে কোন ইবাদত খাইরুল কুরুনে আদায় করা হতো না, সেটিকে জরুরী মনে করে বা একমাত্র পদ্ধতি মনে করে, বা আবশ্যকীয় পদ্ধতি বানিয়ে উক্ত ইবাদত করাও বিদআতের শামিল।

তাই দরূদ পড়া যদিও উত্তম ও সওয়াবের কাজ। কিন্তু এভাবে মাহফিল করে সম্মিলিতভাবে করার বিশেষ সূরতটি খাইরুল কুরুনে ছিল না। তাই এটিকে আবশ্যকীয় বা জরুরী মনে করে করলে তা পরিস্কারই বিদআত হবে। এতে কোন সন্দেহ নেই।

আল্লামা মুনাভী রহঃ লিখেছেন-
اى أنشأ واخترع وأتى بأمر حديث من قبل نفسه…… (ما ليس منه) أى رأيا ليس له فى الكتاب أو السنة عاضد ظاهر أو خفى، ملفوظ أو مستنبط (فهو رد) أى مردود على فاعله لبطلانه، (فيض القدير، رقم الديث-8333)
যার সারমর্ম হলো যদি এমন নতুন ইবাদত তৈরী করে,যেটা কুরআন সুন্নাহ তে নেই,এটা বাতিল।   

وضع الحدود وإلتزام الكيفيات والهيئات المعينة فى أوقات معينة لم يوجد ذلك التعين فى الشريعة، (الإعتصام-1/39)

وفيه ايضا- ومنها التزام الكيفيات والهيئات المعينة كالذكر بهيئة الإجتماع  على صوت واحد واتخاذ يوم ولادة النبى صلى الله عليه وسلم عيدا، وما اشبه ذلك.. الخ (الإعتصام-1/29)
যার সারমর্ম হলো নির্দিষ্ট ছুরত এবং নির্দিষ্ট এমন কাজ করা,যা শরীয়ত করেনি,এটা বাতিল হবে। 

বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ  
১-হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহঃ। {ইমদাদুল ফাতাওয়া-৫/৩২৮-৩২৯}

২-মুফতী মাহমুদ গঙ্গুহী রহঃ। [ফাতাওয়া মাহমুদিয়া-৩/১১৭-১১৮}

৩-মুফতী ইউসুফ লুধিয়ানবী রহঃ। {আপকি মাসায়েল আওর উনকা হল-১/৪৪৪}

৪-মুফতী রশীদ আহমাদ লুধিয়ানবী রহঃ। {আহসানুল ফাতাওয়া-১/৩৪৭-৩৪৮}

৫-মুফতী আব্দুর রহীম লাজপুরী রহঃ। {ফাতাওয়া রহিমীয়া-২/৭২-৭৩}
,

শরীয়তের বিধান হলো এমন দরুদ ও সালাম,যেখানে রাসুল সাঃ কে হাজির নাযির মনে করা যায়,এমন কোনো শব্দই ব্যাবহার করা হয়নি,এবং ব্যাকরনগত দিক দিয়েও কোনো ভুল নেই,এমন দরুদ ও সালাম পড়া যাবে। 
অন্য কোনো দরুদ ও সালাম পড়া যাবেনা।

সুতরাং ইয়া নবী সালামু আলাইকা, ইয়া রাসুল সালামু আলাইকা.... বলা বিদয়াত। 
(দারুল উলুম দেওবন্দ এর ওয়েবসাইট থেকে প্রকাশিত ৮৫৫৯ নং ফতোয়া) 
,
আরো জানুন
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে খতিব সাহেব এবং মুসল্লিরা উক্ত পদ্ধতিতে দরুদ পড়াকে  জরুরী মনে করে বা একমাত্র পদ্ধতি মনে করে, বা আবশ্যকীয় পদ্ধতি বানিয়ে উক্ত উক্ত কাজ করে,অথবা আলোচিত "সালাম" ব বলে,তাহলে তা বিদআতের শামিল।
,
অন্যথায় তাহা বিদয়াত হবেনা।
,
(০২) খতিব সাহেবের আকীদা যদি ছহীহ হয়,আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকীদার খেলাফ যদি তার আকীদা বা কাজ না হয়,তাহলে তার পিছনে নামাজ পড়া জায়েয আছে।
আরো জানুন 
খতিব সাহেব যদি বিদয়াত পন্থি হয়,তাহলে তার পিছনে নামাজ পড়লে নামাজ আদায় হলেও মাকরুহ হবে।   
,
(০৩) শরীয়তের বিধান হলো  মিলাদের তাবারুকের পশু যদি আল্লাহর নামেই জবাই করা হয়, বাকি সওয়াব কোন বান্দার জন্য নিয়ত করা হয়, তাহলে মৌলিকভাবে তা খেতে কোন সমস্যা নেই। তবে এর মাধ্যমে বিদআতকে সমর্থন দেয়া হয়, এ হিসেবে তা বর্জন করাই উচিত।
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মিলাদের জিলাপি খুরমা  মৌলিকভাবে খেতে কোন সমস্যা নেই।
 তবে কাজটি যদি বিদআত হয়ে থাকে,তাহলে এর মাধ্যমে বিদআতকে সমর্থন দেয়া হয়, এ হিসেবে তা বর্জন করাই উচিত


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...