জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبي ذَرٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ : أنَّه سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ : «لَيْسَ مِنْ رَجُلٍ ادَّعَى لِغَيرِ أَبِيهِ وَهُوَ يَعْلَمُهُ إِلاَّ كَفَرَ، وَمَنِ ادَّعَى مَا لَيْسَ لَهُ، فَلَيْسَ مِنَّا، وَلَيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ، وَمَنْ دَعَا رَجُلاً بِالْكُفْرِ، أَوْ قَالَ: عَدُوَّ اللهِ، وَلَيْسَ كَذَلِكَ إِلاَّ حَارَ عَلَيْهِ». متفق عَلَيْهِ،
আবূ যার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, ‘‘যে কোন ব্যক্তি জ্ঞাতসারে অন্যকে নিজের বাপ বলে দাবী করে, সে কুফরী করে। যে ব্যক্তি এমন কিছু দাবী করে, যা তার নয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়। আর সে যেন নিজসব বাসস্থান জাহান্নামে বানিয়ে নেয়। আর যে ব্যক্তি কাউকে ‘কাফের’ বলে ডাকে বা ‘আল্লাহর দুশমন’ বলে, অথচ বাস্তবে যদি সে তা না হয়, তাহলে তার [বক্তার] উপর তা বর্তায়।’’
(সহীহুল বুখারী ৩৫০৮, মুসলিম ৫১, ইবনু মাজাহ ২৩১৯, আহমাদ ২০৯৫৪)
এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যেঃ
কোন মুসলিম অপর কোন মুসলিমকে কাফির বলে সম্বোধন করতে পারে না। কেউ কাউকে কাফির বলে সম্বোধন করলেই (তো সত্য-মিথ্যা যাই হোক না কেন) কার্যকরীরূপে প্রতিফলিত হবে। যাকে এ সম্বোধন করা হলো সে যদি সত্যই কুফরী কর্ম করে থাকে তবে তার ওপর ঐ কথার হুকুম প্রযোজ্য হবে এবং সে সত্য সত্যই কাফির বলে বিবেচিত হবে। আর যদি সে সত্যিকার কোন কুফরী কর্ম না করে, তাকে অহেতুক কাফির বলে সম্বোধন করা হয় তাহলে তার ঐ কথাটি নিজের দিকেই প্রত্যাবর্তিত হবে, অর্থাৎ সেই কাফির বলে বিবেচিত হবে।
ইবনুল মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অহেতুক কাউকে কাফির বলে সম্বোধন করলে সে নিজে কুফরীর গুনাহ নিয়ে ফিরবে।
‘আল্লামা নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ যে হাদীসগুলো ‘উলামাগণের নিকট খুব মুশকিল, এটি তার একটি। এর প্রকাশ্য বা বাহ্যিক অর্থ উদ্দেশ্য নয়। এটা এজন্য যে, একজন মুসলিমকে দীনের উপর অটুট বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও হত্যা কিংবা যিনার মতো কাবীরাহ্ গুনাহের কারণে কাফির বলা যায় না। এ কথা যখন সাব্যস্ত হলো যে, কাউকে কাফির বলা ঠিক নয় তখন অত্র হাদীসের আমরা কয়েকটি ব্যাখ্যা বা তাবীল করব। আর সেটি হলো এই যে,
প্রথমতঃ কেউ যখন কাউকে কাফির বলা হালাল বা বৈধ মনে করবে তখন তার ওপর (এই কাফির বলার অনভিপ্রেত বিরূপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে) কুফরীর হুকুম বর্তাবে।
দ্বিতীয়টি হলো : তার ওপর গুনাহের বোঝা চেপে বসবে এবং ঈমানের ঘাটতি সংঘটিত হবে।
তৃতীয়টি হলো : এটা খারিজীদের ব্যাপারে প্রযোজ্য, কেননা তারা মু’মিনদের কাফির বলে থাকে, তাই সেটা ফিরে গিয়ে তাদের ওপর পতিত হয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
أَنَّہُ إِنْ کَانَ صَادِقًا فِي نَفْسٍ الْأَمْرِ فَالْمَقُوْلُ لَہُ کَافِر، وَإِنْ کَانَ کَاذِبًا فَالْقَائِلُ کَافِرٌ لِأَنَّہُ حَکَمَ بِکَوْنِ الْمُؤمِنُ کَافِرًا أَوِ الْإِیمَانِ کُفْرًا.
عیني، عمدة القاري، 22: 157، بیروت: دار احیاء التراث العربي
সারমর্মঃ
যদি সে তার কথায় সত্যবাদী হয়,তাহলে যাকে কাফের বলা হয়েছে,সে কাফের হবে।
আত যদি সে মিথ্যাবাদী হয়,তাহলে বক্তা কাফের হবে।
কেননা সে মুমিন হওয়াকে কুফুরের হুকুম দিয়েছে।
অথবা ঈমানকে কুফুরের হুকুম দিয়েছে।
মুসলিম শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ আল মিনহাজ গ্রন্থে আছেঃ
وليس المراد الكفر الذي يخرجه من ملة الإسلام
সারমর্মঃ
শরীয়তের বিধান হলো কোনো মুসলিমকে কাফের বলা জায়েজ নেই।
যাকে কাফের বলা হচ্ছে,সে যদি কাফের না হয়,তাহলে কাফের বলার কারনে এটি তার দিকে ফিরে আসবে।
অবশ্য শুধুমাত্র এতটুকু কারনে সেই তাকে কাফের এর হুকুম লাগানো যাবেনা।
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 25524 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাদের কেউ কাফের হবেনা।
তাদের বিবাহ আগের মতোই বহাল থাকবে।
নতুন ভাবে বিবাহ পড়াইতে হবেনা।
যে এই কাফের বলে গালি দিয়েছিলো,তাকে খালেছ দিলে তওবা করতে হবে।
আল্লাহর নিকটে ওয়াদা করতে হবে,যে জীবনেও আর এহেন বাক্য বলবেনা।