بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
তিনি
সালোয়ার কিনে অন্যদের হাদিয়া দেওয়ার বিষয়টিও প্রমাণিত। তাই মুসলমানদের উচিত সুন্নাহসম্মত
পোশাক পরিধান করা। পশ্চিমাদের কৃষ্টি-কালচার ও সভ্যতা-সংস্কৃতি থেকে দূরে থাকা জরুরি।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে কোট-স্যুট ও প্যান্ট-শার্ট পশ্চিমাদের সংস্কৃতি থেকে আমাদের
সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়েছে। তাই কাফিরদের সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় মৌলিকভাবে এগুলো নিষিদ্ধ হওয়ারই
কথা। এ জন্য প্রথম দিকে ইসলামিক স্কলাররা এগুলো পরিধানকে মাকরুহ বলেছেন। যেমন—মুফতি কেফায়েত উল্লাহ (রহ.) লিখেছেন : ‘কোট-স্যুট এখনো ব্যাপকভাবে
প্রচলিত হয়নি, বরং
এগুলো খ্রিস্টান ও তাদের অনুসারীদের পোশাক। তাই এগুলোর মধ্যে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ার নিষেধাজ্ঞা
বিদ্যমান। ’ (কেফায়াতুল মুফতি : ৯/১৫৯)
আল্লামা জাফর আহমদ থানভি (রহ.) লিখেছেন : ‘কোট-স্যুট ইত্যাদি
পরিধান করা ইংরেজদের জাতিগত ঐতিহ্য। সুতরাং এটা পরিধান করা মাকরুহ। আর ইচ্ছাকৃত তাদের
আদলে জীবন গঠনের নিয়তে এগুলো পরিধান করা হারাম। ’ (এমদাদুল আহকাম : ৪/৩৪১)
মাওলানা ইউসুফ লুদয়ানুভি (রহ.) লিখেছেন : ‘প্যান্ট-শার্ট পরিধান
করা মাকরুহে তাহরিমি। ’ (আপ কে মাসায়েল : ৮/৩৭১)
কিন্তু আজকাল মুসলমানদের মধ্যে কোট-স্যুট,
প্যান্ট-শার্ট পরিধান করা ব্যাপকভাবে প্রচলিত।
অধিক প্রচলনের কারণে এগুলোকে কাফিরদের ঐতিহ্যবাহী ও জাতিগত নিদর্শনমূলক পোশাক বলা কঠিন।
তাই মুফতি মাহমুদ হাসান গাংগুহি (রহ.) বলেছেন : ‘পাক-ভারত উপমহাদেশে কোট-স্যুট পরিধান
করা হারাম নয়, তবে
এটি নেককার ও ওলি-আউলিয়াদের পোশাক নয়। তাই এগুলো থেকে দূরে থাকা উচিত। ’ (ফাতাওয়ায়ে
মাহমুদিয়া : ১৯/২৬০)
স্মরণ রাখতে হবে, ব্যাপকভাবে প্যান্ট পরিধান করার প্রথা থাকলেও দুটি শর্তে
তা পরিধান করা বৈধ। এক. টাখনুর নিচে প্যান্ট পরিধান করা যাবে না। দুই. প্যান্ট ঢিলেঢালা
হতে হবে। আঁটসাঁট ও চিপা প্যান্ট পরিধান করা হারাম। কেননা এতে লজ্জাস্থান দৃশ্যমান
থাকে।
ভারতবর্ষের আধুনিক যুগের আলেম আল্লামা তকি উসমানি (দা. বা.)
লিখেছেন : ‘কেউ যদি গুরুত্বের সঙ্গে এ বিষয়টি আমলে নেয় যে তার প্যান্ট ঢিলেঢালা হবে
এবং টাখনুর নিচে তা পরিধান করবে না, তাহলে এমন প্যান্ট পরিধান করা বৈধ। যদিও তা অনুত্তম।
’ (ইসলাহি খুতুবাত : ৫/২৯৪)
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!
প্যান্ট ও শার্টের ব্যবসা করা জয়েয আছ। তবে এগুলি যেহেতু আল্লাহওয়ালাদের
পোষাক নয়। বিধান উত্তম হলো এজাতীয় পোষাকের ব্যবসা না করা।