আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
276 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (58 points)
আমার বাবা মারা গিয়েছেন ৫ বছর হুল। বাবা ব্যাংকার ছিল। মারা যাবার সময় পেনশনের টাকা রেখে গিয়েছিল। সেই টাকায়া দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনে সেখান থেকে যা পাই তা দিয়ে চলি। সাথে দুই রুম ভাড়া দিয়েও চলি।
আমি মাসে ২ হাজার টাকা কামাই করি। সেটা দিয়ে আমাত নিজের খরচ ঠিকমত চলেনা। তাই বাসা থেকে ভরণপোষণ এর টাকা নিতে হয়।


সঞ্চয়পত্র আমার মায়ের নামে করা। মায়ের আর কোন আয়ের উৎস নেই বাসা ভাড়া ব্যতীত। যেই বাসা ভাড়া আমরা পাই সেটা বানাতে আর ঠিকঠাক করতেও হারাম টাকা ব্যাবহার করা হতে পারে।


এমতাবস্থায় আমার প্রশ্নঃ

১৷ আমি কি আম্মুর থেকে ভরণপোষণের টাকা নিতে পারব?

২। আমার বাবা পেনশন থেকে যা পেয়েছেন তা দিয়ে কি ব্যাবসা করতে পারব?

৩। আমি মানসিক ভাবে অসুস্থ। ডাক্তার বলেছে OCD রয়েছে। এর কারণে আমি কোন জব পাচ্ছিনা। কারণ, আমার আচরণ দেখে বুঝা যায় অসুস্থ যে। তার উপর কোথাও মনোযোগ দিতে পারিনা। এমতাবস্থায় আমার জন্য কোন ছাড় বা অবকাশ আছে কিনা?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

ব্যাংকে সুদী কারবারের লেনদেন হয়। আর সুদ হারাম হওয়ার ব্যাপারে  

আল্লাহ তা'আলা বলেন -

واحل الله البيع و حرم الربوا.

আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন৷" (সূরা বাকারাআয়াত:২৭৫)

 

সুদ কতখানি জঘন্য তা হাদীস শরীফে এসেছে-

عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : "الربا سبعون حوبا،أيسرها أن ينكح الرجل أمه."

حكم الحديث: صحيح

"হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত৷ তিনি বলেনরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "সুদের ৭০ টি স্তর রয়েছে৷ সবচেয়ে নিম্নটি হল নিজ মায়ের সাথে ব্যভিচার করা৷" (ইবনে মাজাহ: অধ্যায়: ব্যবসা-সুদ:২২৭৪)

 

কেউ যদি হারাম টাকা দ্বারা হালাল ব্যবসা করে তাহলে এ সম্পর্কে উলামাদের মতবেদ রয়েছে। কেউ কেউ সমস্ত মালকে সদকাহ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আবার কেউ কেউ শুধুমাত্র আসল তথা মূলধন যা হারাম ছিলসেই মালকে মূল মালিকের নিকট ফিরিয়ে দিতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিংবা সদকাহ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

 

https://www.ifatwa.info/398 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে

ব্যাংকের চাকুরি হারাম হওয়ার মূল কারণ দু’টি।যথা-

১-হারাম কাজে সহায়তা করা।

২-হারাম মাল থেকে বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকা।

 

হারাম কাজের সহায়তার বিভিন্ন স্তর আছে। শরীয়তে সব প্রকার সহায়তা হারাম নয়।বরং সে সব সহায়তাই হারাম যা সরাসরি হারাম কাজের সহিত জড়িত থাকে। যেমন, সুদী লেনদেন করা। সুদী লেনদেন লিখে রাখা। সুদী টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ থেকে উসুল করা, ইত্যাদি ইত্যাদি।

 

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-

যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়,যে তার সাক্ষী হয়, এবং যে দলিল লিখে রাখে, তাদের সকলের উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

 

তবে যদি ব্যাংকের এমন কোনো সেক্টরের কাজ হয়,যাতে  সুদী কাজে জড়িত হতে হয় না। যেমনঃ ড্রাইভার, ঝাড়ুদার, দারোয়ান, জায়েজ কারবারে বিনিয়োগ ইত্যাদি সেক্টর হয়,তাহলে যেহেতু এসবে সরাসরি সুদের সহায়তা নেই তাই এমন সেক্টরে কাজ করার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. আপনার যদি ঐ টাকা ছাড়া অন্য কোন হালাল টাকা থাকে তাহলে অবশ্যই সেখান থেকে খরচ করবেন। আর যদি না থাকে তাহলে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু আপনার আম্মুর থেকে ভরণপোষণের টাকা নিতে পারবেন। তবে হিসাব করে রাখবেন যে, কত টাকা নিয়েছেন। পরবর্তীতে সামর্থ্য হলে সেই পরিমান টাকা গরীব দু:খীদের সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকাহ করে দিবেন।

 

২. কেউ যদি হারাম টাকা দ্বারা হালাল ব্যবসা করে তাহলে এ সম্পর্কে উলামাদের মতবেদ রয়েছে। কেউ কেউ সমস্ত মালকে সদকাহ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আবার কেউ কেউ শুধুমাত্র আসল তথা মূলধন যা হারাম ছিলসেই মালকে মূল মালিকের নিকট ফিরিয়ে দিতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিংবা সদকাহ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

 

৩. আপনি আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশী বেশী দুআ করবেন যাতে এই রোগ থেকে আল্লাহ তায়ালা সুস্থ করে দেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...