আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
228 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (42 points)
edited by
১)ধরুন কোনো এক ভালো ছাত্র পড়াশোনা করতে খুব ভালবাসে।
সে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে। বুয়েটে চান্স পেতে চায়। তার আব্বু আম্মু তাকে পরাশুনার জন্য খুব চাপ দেয়।
সে একদিন পরীক্ষা দিচ্ছিল।
পরীক্ষা দেওয়ার সময় সে একবার পিছনে ফিরে তাকায় বন্ধুর খাতা দেখার জন্য।
তখন পরীক্ষার হলে পাহারারত টিচার তার খাতা কেড়ে নেয়।
সে খুব হাতজোড় করে টিচারকে খাতা ফেরত দেওয়ার জন্য।
এরপর সে টিচারের পা ধরে বলে খাতাটা ফেরত দেওয়ার জন্য।
তাও শিক্ষক দেয়নি।
এরপর সে শিক্ষককে সিজদা করে বল্ল,"আমার পাশ ফেল, আপনার হাতে।আমার জীবনের ভালো মন্দ আপনার হাতে।দয়া করে খাতা ফেরত দিয়ে দেন।"

সে জানত যে এটা শিরক হচ্ছে।
কিন্তু সে মনে মনে ভাবল শিরক থেকে বাঁচার চেয়ে পরীক্ষা দেওয়াটা,পড়ালেখায় ভালো করাটা তার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এরপরে শিক্ষক তার খাতা ফেরত দিল।
এরপর সে পরীক্ষা শেষ করল।
এখন সে তোওবা করতে চায়।
সে কিভাবে তওবা করবে?
সে কালেমা শাহাদত পড়ে আল্লাহর কাছে এর জন্য মাফ চাইলে এবং যদি প্রতিজ্ঞা করে যে আর কোনদিন এভাবে কাউকে সেজদা দেবে না তাহলেই চলবে??
নাকি পড়াশোনা বাদ দিয়ে দেওয়া লাগবে, যেহেতু সে পড়াশোনা কে শিরক থেকে বেঁচে থাকার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছিলে এক সময়।

সে যদি তাওবা করে এবং পরাশুনা চালিয়ে যায়,তবে কি কোন সমস্যা আছে??

২)দুনিয়ায় যেমন পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব নারীর চেয়ে বেশি, আখিরাতেও কি এমন হবে?

৩)আমি ইমাম ফয়সাল নামক এক ইমামের তেলাওয়াত শুনতে অনেক পছন্দ করি।
ইউটিউবে তার তেলাওয়াত শুনি।
আজকাল মাঝেমধ্যে নামাজের সিজদায় গেলে তার কথা মনে পড়ছে।
তার চেহারা চোখে ভেসে উঠছে। মনে হচ্ছে আমি যেন তাকে সিজদা দিচ্ছি। আমার কি শিরক হচ্ছে??উনার  তেলাওয়াত শুনতে পারব নাকি ছেড়ে দেওয়া লাগবে??

৪)সুন্দরবন এ বাঘ,হরিন কমে যাওয়ার ফলে, এগুলা শিকার করা থেকে জনগনকে বিরত রাখা কি জায়েয??

৫)শিরকের তাওবা না করে দুনিয়াবি কিছুর জন্য দুয়া করা কি শিরক?? /

৬)শিরকের তাওবা করার চেয়ে দুনিয়াবি কোন কাজ কে বেশি গুরুত্বপুর্ন মনে করা কি শিরক??
৭)আল্লাহর জিকির করার চেয়ে দুনিয়াবি কল্যাণের জন্য দুয়া করা কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া কি শিরক??


৮)ধরুন,কেউ বলল,আমি আর সাদিয়া(গার্লফ্রেন্ড) পাশাপাশি বাসায় থাকায় আমাদের মধ্যে ভালো বন্ধন তৈরি হয়েছে।

নাকি বলা উচিত ছিল,পাশাপাশি বাসায় থাকার উসিলায় আল্লাহ আমাদের মধ্যে ভালো বন্ধন তৈরি করে দিছেন।


এখন প্রশ্ন হচ্ছে, হারাম সম্পর্কে জড়িয়ে থাকা দুইজনের মধ্যে আল্লাহ ভালো সম্পর্ক তৈতৈরি করে দিয়েছেন এটা বলা কি কুফর??
আবার পাশাপাশি বাসায় থাকা কে বন্ধন দৃঢ় হওয়ার কারণ মনে করলে কি শিরক হবে??

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা গায়রুল্লাহ তথা আল্লাহ ব্যাতিত চন্দ্র সূর্য সহ সকল কিছুকে সেজদাহ করতে নিষেধ করেছেন।
সেজদাহ শুধু আল্লাহকেই করতে আদেশ করেছেনঃ

وَ مِنۡ اٰیٰتِہِ الَّیۡلُ وَ النَّہَارُ وَ الشَّمۡسُ وَ الۡقَمَرُ ؕ لَا تَسۡجُدُوۡا لِلشَّمۡسِ وَ لَا لِلۡقَمَرِ وَ اسۡجُدُوۡا لِلّٰہِ الَّذِیۡ خَلَقَہُنَّ اِنۡ کُنۡتُمۡ اِیَّاہُ تَعۡبُدُوۡنَ ﴿۳۷﴾ 

আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রাত ও দিন, সূর্য ও চাঁদ। তোমরা সূর্যকে সিজদা করো না, চাঁদকেও নয়; আর সিজদাহ কর আল্লাহকে, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা কেবলমাত্র তাঁরই ইবাদত কর।
(সুরা হামিম সাজদাহ ৩৭)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

 হজরত কিস বিন সাদ (রা.) বলেন, ‘আমি হিরা নামক স্থানে গিয়েছি। সেখানে দেখলাম, মানুষ তাদের রাষ্ট্রপ্রধানদের সিজদা করছে। আমি (মনে মনে) বললাম, রাসুলুল্লাহ (সা.) সিজদা পাওয়ার অধিক হকদার। তারপর আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললাম, হিরা নামক স্থানে আমি দেখেছি, সেখানকার লোকেরা রাষ্ট্রপ্রধানদের সিজদা করে। আপনি তো আল্লাহর রাসুল। আপনি তো এ বিষয়ে অধিক হকদার। এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তুমি যদি আমার কবরের পাশ দিয়ে যাও, তাহলে কি তাকে সিজদা করবে? আমি বললাম, না। অতঃপর মহানবী (সা.) বলেছেন, কখনো এমনটি করবে না। আমি যদি কাউকে কারো জন্য সিজদা করার আদেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীদের বলতাম তাদের স্বামীদের সিজদা করতে। কেননা আল্লাহ তাআলা স্ত্রীদের কাছে স্বামীদের বিশেষ হক দিয়েছেন।’ 
 (মুসতাদরাক হাকেম, হাদিস : ২৮১৭, আবু দাউদ, হাদিস : ২১৪০, দারেমি, হাদিস : ১৪৬৩)
,
একবার এক গ্রাম্য লোক মহানবী (সা.)-এর দরবারে হাজির হয়ে বলেছেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে অনুমতি দিন, আমি আপনাকে সিজদা করতে চাই। মহানবী (সা.) বলেছেন, (আল্লাহ ছাড়া কারো জন্য সিজদা করা বৈধ নয়) আমি যদি কাউকে কারো উদ্দেশে সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীদের বলতাম তারা যেন তাদের স্বামীদের সিজদা করে।’ (সুনানে দারেমি, হাদিস : ১৪৬৪)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি যদি কালেমা শাহাদত পড়ে আল্লাহর কাছে এর জন্য মাফ চায় এবং যদি প্রতিজ্ঞা করে যে আর কোনদিন এভাবে কাউকে সেজদা দেবে না তাহলেই চলবে।
,
পড়াশোনা চালিয়ে গেলে কোনো সমস্যা হবেনা।
,
(০২)
আখেরাতে তারা সমান নিয়ামত পেয়ে সুখী হবে।
তারা নিজ স্বামীকে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবে। 
,
(০৩)
এতে শিরক হবেনা।
তবে সেজদায় যেনো এমনটি আর মনে না আসে,তাই আপাতত এহেন অবস্থা কেটে যাওয়া পর্যন্ত তার তিলাওয়াত না শোনাই ভালো হবে।
,
(০৪)
হ্যাঁ, জায়েজ।
বরং জরুরিও বটে।    

(০৫)
যদি সে কাফের হয়ে না যায়,তাহলে জায়েজ আছে।
আর কাফের হয়ে গেলে তো জায়েজ নাজায়েজ এর কোনো বিধানই নেই।
সেও আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারবে। 
,
সুতরাং উভয় ছুরতেই আল্লাহর কাছে  দুনিয়াবি কিছুর জন্য দুয়া করতে পারবে।
,
(০৬)
এটি শিরক নয়।
,
(০৭)
না,এটি শিরক নয়।
,
(০৮)
এটা বলা শিরক/কুফরি নয়।
তবে দ্রুত এহেন হারাম সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...