আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
286 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (60 points)
আসসালামু আলাইকুম।


এক বোনের পক্ষ থেকে প্রশ্ন : কোনো স্ত্রী যদি পরকীয়া করে এবং বাচ্চা হয় কিন্তু স্বামী যদি বুঝতে না পারে যে বাচ্চাটি তার এক্ষেত্রে কি স্ত্রী তার স্বামীকে বলতে পারবে যে এই বাচ্চাটি তার স্বামীর না? তিনি খুব অনুতপ্ত। তার কি জানানো ঠিক হবে? যেহেতু বান্দার হক নষ্ট করেছে।


আর এই বাচ্চা কি অবৈধ? আর তাদের কি তালাক হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,590 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রশ্নে উল্লেখিত বাচ্চার জন্ম যদিও যেনার মাধ্যমে হয়েছে,তবে তার বংশ পরিচয় যেনা কারী থেকে হবেনা,বরং তার নসব ঐ মহিলার প্রকৃত স্বামী থেকে সাব্যস্ত হবে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৮/৪৩৪)

তবে যদি সেই মহিলার স্বামী সেই বাচ্চা সম্পর্কে নিজের হওয়া থেকে অস্বীকার করে,মহিলার উপর যেনার বিষয়টি আরোপ করে,তাহলে সেটি লি'আনের মাসয়ালা অনুপাতে হয়ে তার স্বামী থেকে সাব্যস্ত হবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَمُسَدَّدٌ، قَالَا: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، اخْتَصَمَ سَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ، وَعَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ابْنِ أَمَةِ زَمْعَةَ، فَقَالَ سَعْدٌ: أَوْصَانِي أَخِي عُتْبَةُ إِذَا قَدِمْتُ مَكَّةَ أَنْ أَنْظُرَ إِلَى ابْنِ أَمَةِ زَمْعَةَ فَأَقْبِضَهُ فَإِنَّهُ ابْنُهُ، وَقَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ: أَخِي ابْنُ أَمَةِ أَبِي، وُلِدَ عَلَى فِرَاشِ أَبِي، فَرَأَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَبَهًا بَيِّنًا بِعُتْبَةَ، فَقَالَ: الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ، وَاحْتَجِبِي عَنْهُ يَا سَوْدَةُ

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাযি.) ও ‘আবদ ইবনু যাম‘আহ (রাযি.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যাম‘আহর দাসীর এক সন্তানের বিষয়ে বিবাদ নিয়ে উপস্থিত হলো। সা‘দ (রাযি.) বললেন, আমার ভাই ‘উতবাহ আমার কাছে ওয়াসিয়াত করেছে, আমি মক্কায় এলে যেন যাম‘আহর দাসীর সন্তানকে আমার অধিকারে গ্রহণ করি। কারণ ওটা তার ছেলে। কিন্তু ‘আবদ ইবনু যাম‘আহ বললেন, এটা আমার ভাই, আমার পিতার দাসীর সন্তান, আমার পিতার বিছানায় তার জন্ম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তানটির মধ্যে ‘উতবাহর সুস্পষ্ট সাদৃশ্য দেখতে পেয়ে বললেনঃ সন্তান তার বিছানা যার। আর যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর। তিনি সাওদা (রাযি.) বললেনঃ তার থেকে পর্দা করো। যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর।
(আবু দাউদ ২২৭৩,বুখারী,মুসলিম।)

وقوی وہو فراش المنکوحۃ ومعتدۃ الرجعي، فإنہ فیہ لا ینتفي إلا باللعان۔ (شامي، کتاب الطلاق / باب العدۃ، مطلب الفراش علی أربع مراتب ۵؍۲۴۵ زکریا)
সারমর্মঃ
সেই বাচ্চার ঐ স্ত্রীর বিছানা ওয়ালা তথা স্বামীর হবে,সেটি তার থেকে লি'আন দ্বারাই শুধু দূর হবে। 
  
النکاح الصحیح وما ہو في معناہ من النکاح الفاسد، والحکم فیہ أنہ یثبت النسب من غیر دعوۃ، ولا ینتفي بمجرد النفي، وإنما ینتفي باللعان۔ (الفتاویٰ الہندیۃ / الباب الخامس عشر في ثبوت النسب ۱؍۵۳۶ زکریا)
সারমর্মঃ
শুধু না বলার দ্বারা বিবাহিতা মহিলার বাচ্চা সম্পর্কে অস্বীকার সাব্যস্ত হবেনা।
তবে লি'আন করলে অস্বীকার সাব্যস্ত হবে।   
 
یقام النکاح مقامہ أي الدخول في إثبات النسب، قال النبي صلی اللّٰہ علیہ وسلم: الولد للفراش والعاہر الحجر۔ (بدائع الصنائع، کتاب النکاح / فصل في ثبوت النسب ۳؍۶۰۷ دار الکتب العلمیۃ بیروت، ۲؍۶۴۶ زکریا، والحدیث أخرجہ البخاري في کتاب الأحکام / باب القضاء علی الغائب ۲؍۱۰۶۵ المکتبۃ الأشرفیۃ دیوبند) 
সারমর্মঃ
বংশ প্রমানীত হওয়ার ক্ষেত্রে বিবাহই তার স্থলাভিষিক্ত হবে। 
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত বোন মারাত্মক গুনাহের কাজ করেছে।
দেশে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম থাকলে তাকে প্রস্থর আঘাতে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হতো।
,
এখন তার জন্য করনীয় হলো এহেন গুনাহ সম্পূর্ণ ভাবে ছেড়ে দয়ে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে খালেছ দিলে তওবা করা।
,
তাদের বিবাহ ঠিক থাকবে,তালাক হবেনা।
সেই সন্তান যদিও হারাম সন্তান,তবে তার বাবা হিসেবে সেই মহিলার প্রকৃত স্বামীরই নাম নিয়ে সে পরিচয় বহন করবে।
,
হ্যাঁ যদি তার স্বামী সেই বাচ্চা নিজের নয় বলে আদালতে যায়,সেক্ষেত্রে সেটির ফায়সালা হিসেবে তার বাচ্চা নয় বলে তখন সাব্যস্ত হবে।
,
এখন স্বামী যেহেতু সেই মহিলার এহেন গুনাহের কথা জানেনা,তাই তিনি প্রশ্ন করার আগ পর্যন্ত তাকে না জানানো যাবে।
কেননা গুনাহ প্রকাশও একটি গুনাহ।
,
হ্যাঁ যদি তার স্বামী নিজেই বিষয়টি জানতে চায়,তাহলে সত্য বলে দিতে হবে।
মিথ্যা বলা যাবেনা।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...