بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
(১) ফ্রি মিক্সিং পরিবেশ বলতে এমন পরিবেশকে বুঝায়, যেখানে নারী পুরুষের অবাধ বিচরণ থাকে। নারী পুরুষ শঙ্কাহীনভাবে
বিপরিত লিঙ্গের সাথে বিবাহবহির্ভূত রসালাপে লিপ্ত হয়,এবং গল্পগুজবে লিপ্ত হয়।
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছেন,
عَنْ
ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يَقُولُ : " لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ
بِامْرَأَةٍ ، وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ ، فَقَامَ
: رَجُلٌ ، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللَّهِ اكْتُتِبْتُ فِي غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا
، وَخَرَجَتِ امْرَأَتِي حَاجَّةً ، قَالَ : اذْهَبْ فَحُجَّ مَعَ امْرَأَتِكَ " .
الكتب
» صحيح البخاري » كِتَاب الْجِهَادِ وَالسِّيَرِ » بَاب مَنِ اكْتُتِبَ فِي جَيْشٍ
فَخَرَجَتِ امْرَأَتُهُ
তরজমাঃ-আজনবী পুরুষ-মহিলার মাহরাম ব্যতীত পরস্পর খালওয়াত তথা নির্জনে সাক্ষাৎ করবে না।এক ব্যক্তি
দাড়িয়ে বলল।অমুক জিহাদে আমার আমার নাম লিখা হয়েছে,অন্যদিকে আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চাচ্ছে।তখন রাসূলুল্লাহ
সাঃ বললেন,তুমি
তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্বে যাও।(বুখারী-২৮০০)
খালওয়াহ শব্দের ব্যখ্যা
الْخَلْوَةُ
فِي اللُّغَةِ: مِنْ خَلاَ الْمَكَانُ وَالشَّيْءُ يَخْلُو خُلُوًّا وَخَلاَءً،
وَأَخْلَى الْمَكَانُ: إِذَا لَمْ يَكُنْ فِيهِ أَحَدٌ وَلاَ شَيْءَ فِيهِ،
وَخَلاَ الرَّجُل وَأَخْلَى وَقَعَ فِي مَكَان خَالٍ لاَ يُزَاحَمُ فِيهِ
ভাবার্থযখন কোনো স্থানে উক্ত আজনবী পুরুষ ও মহিলা ব্যতীত অন্য কেউ থাকবে না বা
অন্য কোনো এমন জিনিষ থাকবে না যা সহবাসকে বাধা দিতে পারে।তথা এমন খালি স্থান যেখানে
লোকসমাগম বলতে নেই।(আল মাওসুআতুল ফেকহীয়্যায়;১৯/২৬৫)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেখানে নারী পুরুষের অবাধ বিচরণ থাকবে,সে জায়গাকেই ফ্রি মিক্সিং পরিবেশ বলা হয়ে থাকে।
(২) প্রয়োজনের তাগিদে ননমাহরামের
সাথে কথা বলার অনুমতি আছে তবে শর্ত হলো, ফেতনার আশংকা না থাকতে হবে, কন্ঠে কোমলতা পরিহার
করতে হবে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বলা যাবে না, দৃষ্টি নত রাখতে হবে ইত্যাদী।
এখন
জানার বিষয় হলো, মানুষের
প্রয়োজন তিন প্রকারের হতে পারে।
(১) জরুরত (এমন প্রয়োজন যা না হলে নয়) :
এমন এক ধরনের প্রয়োজন, যা
ছাড়া জীবন হুমকির মুখে পড়ে যায়। যেমন, মরুভূমিতে ক্ষুধার্ত একজন মানুষ,
যার কাছে কোনো খাবার নেই। (এই পরিস্থিতিতে
মানুষটি জীবন বাঁচানোর তাগিদে হারাম বস্তুও ভক্ষণ করতে পারবে)।
(২) হাজত (এমন প্রয়োজন যা না হলে অত্যাধিক কষ্ট হবে) :
কষ্ট বা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে যা করা হয়ে থাকে। (এখানে কষ্ট বা যন্ত্রণা
বলতে জীবনের জন্যে হুমকিস্বরূপ বোঝাচ্ছে না) যেমন- একজন সাওম পালনকারী ব্যক্তি অসুস্থতার
কারণে খাওয়া-দাওয়া করতে পারে। ফরজ সাওম হলেও এ ক্ষেত্রে তা ঐ ব্যক্তির জন্যে ভাঙার
অনুমোদন রয়েছে।বা মেয়ের বিয়েতে টাকার প্রয়োজন।
(৩) তাহসিন (পছন্দনীয় ও সুশোভিতকরণ) :
এ ধরনের প্রয়োজনীয়তাগুলো মানুষের পোশাক-আশাক ও আচার-আচরণের পরিশুদ্ধতা ও পরিপূর্ণতার
জন্যে এবং জীবনের মান উন্নয়নের জন্যে দরকারি। যেমন, একজন মানুষের শারীরিক অবস্থা ঠিক রাখার জন্যে মাছ,
মাংস ও ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন।(এই তিন প্রকার একজন দ্বীনী বোনের গবেষনা থেকে কপিকৃত)
প্রথম অবস্থায় অংশ গ্রহণ জায়েয এবং তৃতীয় অবস্থায় অংশ গ্রহণ জায়েয হবে না। আর দ্বিতীয় অবস্থার ব্যাখ্যা
এরূপ যে,উক্ত পরিবেশে যোগদান
ব্যতীত জীবন চালানো প্রায় অসম্ভব। তাহলে এমন পরিস্থিতে অংশগ্রহণ জায়েয হবে।