আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
169 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)
আসসালামু'আলাইকুম৷
উস্তাদ, আমি আগে জানতাম যে, ধূমপান করা মাকরুহ৷ এবং এখনও আপনাদের ওয়েবসাইট সহ একাধিক মুফতির ফাতওয়ায় দেখেছি ধূমপানকে মাকরূহ বলতে৷
কিন্তু বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং অনলাইনে অনেক জায়গাতেই দেখা যায় অনেকে বলছেন যে, ধূমপান আগে মাকরূহ ছিলো কারণ আগে আলেমগণ ধূমপান এর ক্ষতি সম্পর্কে জানতেন না৷ কিন্তু এখন প্রায় সকল আলমগণই নাকি এটাকে হারাম বলে ফাতওয়া দিয়েছেন৷ এবং এটাকে হারাম না মানলে নাকি কাফের হয়ে যাবে৷ এই বিষয়টা একটু পরিষ্কার করে ব্যাখ্যা করলে মনের দ্বিধাটা দূর হতো।

জাযাকাল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (57,120 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ধুমপান করা নাজায়েয। এতে আর্থিক অপচয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত ক্ষতিও রয়েছে। জেনে শুনে নিজের জান-মালের ক্ষতি করা গুনাহ। অধিকন্তু ধুমপায়ীর মুখের দুর্গন্ধে অন্যের কষ্ট হয়, যা পৃথক একটি গুনাহ। তাই ধুমপান থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

আর দুর্গন্ধযুক্ত অবস্থায় নামাযে দাঁড়ানো মাকরূহে তাহরীমী। বরং এ অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করাও মাকরূহ। হাদীস শরীফে ধুমপানের চেয়ে অনেক কম দুর্গন্ধ বস্ত্ত কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করতেও নিষেধ করা হয়েছে।

অতএব বিড়ি-সিগারেটের তীব্র দুর্গন্ধের সাথে মসজিদে প্রবেশ করা যে নিষিদ্ধ হবে তা তো সহজেই অনুমেয়। অবশ্য এ কারণে নামায ত্যাগ করা যাবে না এবং মসজিদে গমনাগমনও বন্ধ করা যাবে না। বরং অতি দ্রুত এ বদ অভ্যাস ত্যাগ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে হবে। আর নামায আদায়ের পূর্বে এবং মসজিদে প্রবেশের আগে ভালো করে মেসওয়াক বা ব্রাশ করে দুর্গন্ধ দূর করে নিতে হবে।

আরো প্রকাশ থাকে যে, ধুমপানের দুর্গন্ধ নিয়েও যদি কেউ নামায পড়ে নেয় তাহলে তার নামায আদায় হয়ে যাবে।

(ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দাইমা ১৩/৫৬; আলফাতাওয়াশ শারইয়্যাহ ১০/১৪৫; রদ্দুল মুহতার ১/৬৬১)

যে সব কারণে ধুমপান নাজায়েয:

 ১) ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি কারক ও বিভিন্ন রোগের কারণ। সুতরাং ধূমপান সেবন করা নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়ার নামান্তর। অথচ ইসলামে নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া হারাম। (সূরা বাকারা: ১৯৫)

 ২) এটি মৃত্যুর অন্যতম একটি কারণ। সুতরাং ধূমপান আত্মহত্যার শামিল। আর ইসলামে আত্মহত্যা করা মারাত্মক অপরাধ।

 ৩) এর মাধ্যমে ধূমপায়ী নিজের যেমন ক্ষতি করে অন্যের ক্ষতি করে।

ইসলামে নিজের বা অন্যের ক্ষতি করা হারাম। (মুয়াত্তা মালিক)

 ৪) দুর্গন্ধময়। যা অন্যের কষ্টের কারণ। কোন মুসলমানকে কষ্ট দেয়া হারাম। (সূরা আহযাব: ৫৮)

 ৫) অর্থ অপচয়। আল্লাহ তাআলা বলেন: “অপচয়কারী শয়তানের ভাই।” (সূরা ইসরা: ২৭)

আরাফ: ১৫৭)

 ৬) এটি একটি প্রকাশ্য পাপ। আর প্রকাশ্যে পাপাচার করার শাস্তি আরও বেশী।

 ৭) আল্লাহ নির্দেশের লঙ্ঘন। কেননা, আল্লাহ তায়ালা পবিত্র ও হালাল জিনিস ভক্ষণ করতে আদেশ করেছেন। (সূরা বাকারা: ১৭২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...